‘বিজেপির ক্ষমতা থাকলে আমাকে বাংলাদেশে পাঠাক’, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি ইস্যুতে মুর্শিদাবাদের মাটিতে দাঁড়িয়ে এভাবেই গর্জে উঠলেন ‘ভূমিপুত্র’ অধীর চৌধুরী। পাশাপাশি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘রাজধর্ম’ পালনের পরামর্শ দিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। শনিবার বিকেলে লালগোলার এম এন অ্যাকাডেমি হাইস্কুল মাঠের সভায় গিয়ে একদিকে মোদী, অন্যদিকে, মমতা, দু’জনকেই নিশানা করেন বহরমপুরের সাংসদ।
মোদী বাহিনীকে হুঁশিয়ারি অধীরের
এনআরসি ও সিএএ ইস্যুতে বিজেপিকে একহাত নিলেন অধীর। এদিন নিজের গড়ে দাঁড়িয়ে অধীর বলেন, “আমার বাপ-ঠাকুরদা বাংলাদেশের মানুষ, বিজেপির ক্ষমতা থাকলে আমাকে বাংলাদেশে পাঠাক। আসলে বিজেপি ধর্মের নামে দেশ চালাতে চাইছে। বাকি সম্প্রদায়ের সঙ্গে মুসলমানকে আলাদা করে বিভাজনের নীতি গ্রহণ করেছে নরেন্দ্র মোদী– আমিত শাহ জুটি। কিন্তু ভুললে চলবে না ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ সাধারণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দেশ। এই বিশ্বাস কোনও ভাবেই ভাঙতে দেওয়া যাবে না’’
আরও পড়ুন: ‘মমতার সরকার নির্ভর করছে এক কোটি জাল ভোটারের উপর’
অধীর চৌধুরী। ছবি: পরাগ মজুমদার।
অধীরের নিশানায় মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে এদিন অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, আপনি বলছেন রাজধর্ম পালন করা উচিত। খুব ভাল লাগল। কিন্তু, আপনি রাজধর্ম পালন করলে বাংলায় বিজেপির রমরমা হত না। বাংলায় লোকসভা ভোটে বিজেপি ১৮টি আসন পেয়েছে মমতার জন্যই। তাই দিদিকে বলব, আপনিও রাজধর্ম পালন করুন’’। এরপরই বাজপেয়ী জমানায় তৃণমূল-বিজেপি জোটের প্রসঙ্গ টেনে অধীর বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বাংলায় ভোট করেছেন আপনি। বিজেপির জমানায় মন্ত্রীও ছিলেন। যদি নীতি-আদর্শ থাকে, তাহলে বিজেপির সঙ্গে জোট করে অন্যায় করেছিলাম, একথা বলুন’’।
আরও পড়ুন: এনআরসি হলে ছত্তিশগড়ের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারবেন না: বাঘেল
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে যখন জ্বলছে দেশ, সেই প্রেক্ষিতে শুক্রবার পার্ক সার্কাস ময়দানের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সময় অটলজি বেঁচে থাকলে রাজধর্ম পালনের কথা বলতেন’’। প্রসঙ্গত, গুজরাতে দাঙ্গার সময় নরেন্দ্র মোদীকে রাজধর্ম পালনের কথা বলেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী।