রাজীব কুমার কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে কে জিতল? তৃণমূল সরকার, না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার? এ নিয়েই এখন জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। চিটফান্ড কেলেঙ্কারির মামলায় কলকাতার নগরপালকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে সিবিআইকে। রবিবারের লাউডন স্ট্রিট যার সাক্ষী। সেদিনের ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্টে যেতে এক মুহূর্তও দেরি করে নি সিবিআই।
মঙ্গলবার সিবিআইয়ের দায়ের করা সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, রাজীব কুমারকে আপাতত জিজ্ঞাসাবাদের নামে ডেকে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার করা যাবে না। যে নির্দেশ শোনার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এটা তাঁদের 'নৈতিক জয়।' গ্রেফতারি থেকে কলকাতার নগরপালের এই ‘পরিত্রাণকেই' মূলত জয় হিসেবে দেখছে তৃণমূল সরকার। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর মঙ্গলবার দিনের শেষে কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে তাঁর তিন দিনের ধর্না তুলে নেওয়ার কথা জানান তৃণমূল সুপ্রিমো। অন্যদিকে, যেভাবে নগরপাল, মুখ্যসচিব ও ডিজিকে অবমাননার নোটিস ধরিয়েছে আদালত এবং সিপিকে তদন্তের স্বার্থে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়ার কথা বলা হয়েছে, তাতে আদপে কেন্দ্রেরই 'জয়' হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে কিছু মহলে।
আরও পড়ুন, ‘রাজীব কাণ্ডে’ তোলপাড় সিবিআই, খবর ফাঁস করছে কে?
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেছেন, তদন্তে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা তো দিতেই হবে রাজীব কুমারকে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, মুখ্যসচিব, ডিজিপি ও সিপির কাছ থেকে জবাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, রবিবারের ঘটনায় ওই তিনজনকে অবমাননার নোটিস ধরিয়েছে আদালত। ১৯ ফেব্রুয়ারির আগে তাঁদের জবাব দিতে হবে। সন্তোষজনক জবাব না মিললে তাঁদের সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে হবে।
শিলংয়ে গিয়ে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে রাজীব কুমারকে। এ প্রসঙ্গে স্মৃতি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে কোনও আইন নেই, তাই শিলংয়ে সিপিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। যদিও তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জিজ্ঞাসাবাদের স্থান বদলানোয় আদতে তাদেরই জয় হয়েছে। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, "জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব দিল্লিতে করার কথা বলেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। সুপ্রিম কোর্ট রাজি হয়নি। 'নিরপেক্ষ জায়গা' হিসেবে শিলংয়ের কথা বলেছে আদালত।"
আরও পড়ুন, মোদীকে চরম আক্রমণ করে ধর্না প্রত্যাহার মমতার
ফেসবুকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি মঙ্গলবার মমতাকে নিশানা করে লেখেন, শুধুমাত্র একজন পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে এই ধর্নায় বসেন নি মমতা। বরং বিরোধী জোটের মধ্যমণি হয়ে থাকার উদ্দেশ্যেই তৃণমূলনেত্রীর এই ধর্না। অন্য বিরোধী নেতাদের ম্লান করে শুধু নিজেই আলোকবৃত্তে থাকবেন বলে এমনটা করছেন মমতা।
অন্যদিকে, তদন্তে সহযোগিতার ব্যাপারে সিবিআইয়ের কাছে রাজীব কুমারের হাজিরার বিষয়টিকে 'পরাজয়' হিসেবে দেখতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার ধর্না মঞ্চে মমতা বলেছিলেন, "পাঁচটি চিঠি দিয়েছিলেন রাজীব কুমার, সিবিআই কোনও উত্তর দেয়নি। আমরা আগ বাড়িয়ে সহযোগিতা করি। এত সহযোহিতা কেউ করে না।"
Read the full story in English