দাড়িভিটকে হাতিয়ার করে টানা অন্দোলন চালিয়ে যেতে চায় বিজেপি। গেরুয়া শিবির উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট স্কুলে গন্ডগোলের জেরে গুলিতে দুই প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে রাজনৈতিক ভিতকে মজবুত করতে চায়। রায়গঞ্জ ও ইসলামপুরে বিক্ষোভ, ধর্ণা, থানা ঘেরাও কর্মসূচি চলছে। এবার পালা করে দলের রাজ্য নেতারা রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর যাচ্ছেন। ৬ সেপ্টেম্বর দাড়িভিট গ্রামে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। একই সঙ্গে সভা করার কথা রয়েছে ইসলামপুরে। এবার খবর, ইসলামপুর যেতে পারেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও।
দাড়িভিট গুলি কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। তদন্তের আগেই প্রশাসন ও রাজ্য সরকার ঘোষণা করে দিয়েছে, পুলিশের গুলিতে মারা যাননি তাপস বর্মণ ও রাজেশ সরকার। বরং মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী এই ঘটনার পিছনে আরএসএস ও বিজেপির ষড়যন্ত্র দেখছেন। তবে দাড়িভিট স্কুলের অশান্তি যে বিজেপির হাতে রাজনীতির তাস তুলে দিয়েছে, তা নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই।
আরও পড়ুন: দেহ লোপাটের আশঙ্কায় তীর-ধনুকের পাহারায় দাড়িভিট গ্রামের জোড়া কবর
দিলীপবাবু বলেন, "দাড়িভিটের ঘটনা নিয়ে আমাদের আন্দোলন থামবে না। দোষী পুলিশের শাস্তি চাই। আমি আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দাড়িভিট যাচ্ছি। তাছাড়া ওই গ্রামে যাবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তবে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর আসা নিয়ে কথা হচ্ছে। এখনও দড়িভিট যাওয়ার তারিখ ঠিক হয়নি।"
দাড়িভিটের ঘটনার পর লাগাতার আন্দোলন করছে গেরুয়া শিবির। যদিও পুলিশ গুলি ছোড়েনি বলে দাবি করেছে। গেরুয়া বাহিনী তার উত্তরে বাংলা বনধ ডাকে। সেদিন ইসলামপুরে বনধকে সফল করার জন্য দিনভর ময়দানেই পড়েছিলেন বিজেপি কর্মীরা। দাড়িভিট গ্রামে পুলিশের গাড়ি পর্যন্ত দেখা যায়নি। ইতিমধ্যে এই ঘটনার জেরে উত্তর দিনাজপুর বিজেপির জেলা সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী ও যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিত সরকারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সোমবার বিজেপির রাজ্য সাধারন সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, "আজ রায়গঞ্জ যাচ্ছেন রাজ্য নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪ সেপ্টেম্বর আমি যাব। রাজ্যের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় যাচ্ছেন ৫ সেপ্টেম্বর। ৬ তারিখ ইসলামপুরে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সভা করার কথা রয়েছে। ওই সভার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।"
আরও পড়ুন: খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ছন্দে ফিরছে ইসলামপুর, কিন্তু আন্দোলনের হুমকি ব্যবসায়ীদের
ইসলামপুর থানা ঘেরাও থেকে রায়গঞ্জে রিলে অনশনও করছে গেরুয়া বাহিনী। এমনকী বিজেপি নেতৃত্ব দাড়িভিট গ্রামের নিহত ও আহত পরিবারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। এর ফলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও গ্রামে রাতারাতি বিজেপি বিস্তার লাভ করেছে। সঙ্গ দিচ্ছেন স্থানীয় আদিবাসীরাও। তাই বিজেপি নেতৃত্ব দাড়িভিটের ইস্যু জিইয়ে রাখতে মরিয়া।
রাজ্য নেতৃত্বের পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আসা জরুরী হয়ে পড়েছে। মেয়ো রোডের সভায় অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, তিনি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যাবেন। এখন হাতের কাছে ইস্যু গজিয়ে ওঠায় রাজ্য নেতৃত্ব অমিত শাহকে দাড়িভিটে নিয়ে আসতে তৎপর হয়েছেন। ইতিমধ্যে নিহত দুই ছাত্রের পরিবার দিল্লিতে দেখাও করেছেন আমিত শাহর সঙ্গে।