দিল্লিতে কাশ্মীর নিয়ে বৈঠক অমিত শাহের, থমথমে রাজ্য
"পরিকল্পিত ভাবে রাজ্যে ভয় এবং হতাশা সৃষ্টি" করার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি।
"পরিকল্পিত ভাবে রাজ্যে ভয় এবং হতাশা সৃষ্টি" করার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি।
রবিবার জম্মু কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে দেশের শীর্ষ নিরাপত্তা আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এঁদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌবা। একথা জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। অমরনাথ যাত্রা বাতিল হওয়া, এবং পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে বলার পর থেকেই থমথমে হয়ে রয়েছে জম্মু কাশ্মীরের পরিবেশ। তবে ঘণ্টাখানেকের ওই বৈঠকের ফলাফল নিয়ে এখনও কিছু জানা যায় নি।
Advertisment
এদিকে "পরিকল্পিত ভাবে রাজ্যে ভয় এবং হতাশা সৃষ্টি" করার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি। তাঁর সমালোচনার মূলে রয়েছে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন, যাতে বলা হয়েছে যে প্রায় ১০০ জন ক্রিকেটারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কাশ্মীর ছেড়ে চলে যেতে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন পেস বোলার ইরফান পাঠানও। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত কাশ্মীরে জোটসঙ্গী ছিল বিজেপি এবং পিডিপি।
একটি টুইট করে মেহবুবা লিখেছেন, "তীর্থযাত্রী, পর্যটক, শ্রমিক, ছাত্রছাত্রী, ক্রিকেটার, সবাইকে উৎখাত করা। ইচ্ছাকৃত ভয় এবং হতাশার সৃষ্টি করা, কিন্তু কাশ্মীরীদের আশ্বাস বা নিরাপত্তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কোথায় গেল মনুষ্যত্ব, কাশ্মীরীয়ত, গণতন্ত্র?"
Advertisment
Evacuate yatris, tourists, labourers, students & cricketers. Willingly create a sense of panic & distress but don’t bother giving Kashmiris a sense of relief or security.
Kahan gayi insaniyat, kashmiriyat aur jamhooriyat? https://t.co/Y45AxiMwwq
অমরনাথ যাত্রার পর শনিবার বাতিল করা হয় মাছিল মাতা তীর্থযাত্রাও। একের পর এক সরকারি পদক্ষেপের জেরে বিশ্বের একাধিক দেশ জম্মু কাশ্মীরে সফর করার ব্যাপারে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে।
ইতিমধ্যে ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে রাজ্যের বাইরে থেকে আসা এনআইটি শ্রীনগরের পড়ুয়াদেরও। একথাও বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত যেন ক্যাম্পাসে না ফেরেন তাঁরা। এই অনিশ্চয়তার আবহে জল্পনা রটেছে যে কেন্দ্রের তরফে বাতিল করা হতে পারে সংবিধানের ৩৫ এ ধারা, যার দৌলতে জম্মু কাশ্মীরে জমির মালিকানা এবং সরকারি চাকরি পেতে পারেন একমাত্র রাজ্যের বাসিন্দারাই।
জম্মু কাশ্মীরের রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক অবশ্য ঘোষণা করেছেন যে রাজ্যে অতিরিক্ত আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করার নেপথ্যে সংবিধানের ৩৭০ বা ৩৫ এ ধারা খারিজ করার কোনও নিহিত উদ্দেশ্য নেই। এই মোতায়েন শুধুমাত্র নিরাপত্তার স্বার্থে।
বিরোধীরা কেন্দ্রের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি জারি করে বলেছেন, জম্মু কাশ্মীরে যেন অতিরিক্ত ঝুঁকি না নেয় সরকার। শনিবার কংগ্রেসের তরফে দাবি জানানো হয়, রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বক্তব্য পেশ করুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
নয়া দিল্লিতে কংগ্রেস কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, আজ পর্যন্ত কোনোদিন বাতিল হয় নি অমরনাথ যাত্রা, একাধিকবার সরাসরি সন্ত্রাসবাদীদের নিশানায় থাকা সত্ত্বেও। "প্রধানমন্ত্রীর উচিত, সংসদের উভয় ভবনেই জম্মু কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখা। এটা ওঁর কর্তব্য," বলেন আজাদ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ফারুক আবদুল্লা, জম্মু কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ফারুক-পুত্র ওমর আবদুল্লা, এবং এক দলীয় নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁকে অনুরোধ জানান, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হয়, এমন কোনও পদক্ষেপ না নিতে। পাশাপাশি তাঁরা বছরের শেষে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করানোর আবেদনও জানান। বর্তমানে রাজ্যপালের শাসন লাগু রয়েছে জম্মু কাশ্মীরে।
আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা!
একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন