'এনপিআরের সঙ্গে এনআরসির কোনও সম্পর্ক নেই। এর সঙ্গে সিএএ বা নাগরিকত্ব আইনেরও কোনও যোগ নেই। মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই নানা গুজব রটানো হচ্ছে।' এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংখ্যালঘুদের প্রতি তাঁর আশ্বাস, 'ভয় পাবেন না, দুটি পৃথক আইনের অধীনস্থ। এনপিআরের কোনও তথ্য এনআরসিতে ব্যবহার করা বহবে না।' তবে, নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি প্রতিবাদে দেশজুড়ে বেড়ে চলা বিক্ষোবে বেকায়দায় পড়েই শাহের এই ভোলবদল বলে মনে করছে বিরোধী শিবির।
বাস্তবে, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন ও ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব (নাগরিকের নথিভুক্তিকরণ ও জাতীয় আইডেন্টিটি কার্ড) বিধি অনুসারে এনপিআর তৈরি করা হচ্ছে। বলা হয়েছে এনপিআর-ই হল এনআরসির প্রাথমিক পর্যায়। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মোদী সরকার সংসদে কমপক্ষে ৯বার জানিয়েছে এনপিআরের ভিত্তিতেই হবে এনআরসি।
আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: এনপিআর কী, এ নিয়ে এত বিতর্ক কেন?
২০১৮-১৯ সালের স্বারাষ্ট্রমন্ত্রকের বিশেষ রিপোর্ট সদ্য প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, এনআরসি হল হল আরপিআরের প্রথম পদক্ষেপ। ২০১৪ সালের ৮ জুলাই কংগ্রেস সাংসদ রাজীব সাতাভের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে স্বারাষ্ট্রমন্ত্রকের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী রিজিজু জানিয়েছিলেন এনআরসির ভিত্তি হল এনপিআর। ২০১৫ সালের ৯ ও ২২জুলাই সংসদের প্রশ্ন-উত্তর পর্বেও একই কথা বলেছিলেন রিজিজু। রাজ্যসভায় এর প্রতিফলন ঘটে ২৩ জুলাই। ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর রিজিজু রাজ্যসভায় বিষয়টি বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছিলেন। তাই মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শাহের দাবি ঘিরে প্রশ্ন উঠছেই।
আরও পড়ুন: দেশজোড়া বিতর্কের মাঝেই এনপিআর শুরু করল কেন্দ্র
স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর আগে একাধিক বার বলেছেন, 'গোটা দেশে এনআরসি চালু হবে। প্রথমে নাগরিকত্ব বিল, পরে এনআরসি।' রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী জানান দেশে এনআরসি হবে না। মঙ্গলবার শাহ বলেন, 'দেশজুড়ে এনআরসি নিয়ে বিতর্কের দরকার নেই, কারণ এখনই এবিষয়ে কোনও আলোচনা মন্ত্রিসভায় বা সরকারে হয়নি।' কিন্তু বিজেপির একাধিক সার্ষ নেতা ও শাহ নিজেই তো দাবি করেছেন দেশে এনআরসি হবে। জবাবে তিনি বলেন, 'সেটা দলের এজেন্ডা। সরকার ও দলে ফারাক রয়েছে।'
ডিটেনশন কেন্দ্র নিয়েও প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যকে খণ্ডন করেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, 'দেশে একটিই ডিটেনশন কেন্দ্র আছে, আসামে। তবে তা আমাদের ক্ষমতায় আসার আগেই তৈরি হয়েছিল।' তাঁর ব্যাখ্যায়, 'ভারতে আসার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। কোনও বিদেশি বৈধ নথি ছাড়া ভারতে প্রবেশ করলে তাঁকে বা তাদের আটক করে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়। '
এনআরসি-কে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের মস্তিষ্কপ্রসূত বিষয় বলে দাবি করেন অমিত শাহ।
Read the full story in English