'আব্বাস সিদ্দিকির পাশে থাকবে মিম', রাজ্যে নতুন জোটের জল্পনা উসকে ঘোষণা ওয়েইসির

ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির বাড়িতে পৌঁছে বৈঠক করছেন মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি।

ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির বাড়িতে পৌঁছে বৈঠক করছেন মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির পাশে থেকেই ভোটে লড়বে মিম। জানিয়ে দিলেন আসাউদ্দিন ওয়েইসি। আর তাতেই বাড়ল একুশের নির্বাচনে রাজ্যে সংখ্যালবঘু জোটের জল্পনা। আব্বাস সিদ্দিকি ও ওয়েইসির দল একযোগে নির্বাচনে লড়াই করলে বাংলার প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোটে কী প্রভাব পড়তে পারে এখন সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।

Advertisment

সিদ্দিকি-মিম জোট কী তাহলে চূড়ান্ত? জবাবে ওয়েইসি বলবেন, 'বাংলায় দলের কাজ শুরু হবে। আব্বাস সিদ্দিকির পাশে থেকে আমরা কাজ করব। এটাই এখন জরুরি। সিদ্দিকি সাহেব যে কথা বলছেন তা পোক্ত করতেই তাঁর সঙ্গে থাকবে মিম। যে কাজ সিদ্দিকি করছেন তা ঐতিহাসিক। উনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাকেই সমর্থন করব। ভবিষ্যত চূড়ান্ত করবেন আব্বাস সিদ্দিকিই।'

আব্বাস সিদ্দিকি আগেই ঘোষণা করেছিলেন যে আলাদা দল গড়ে ২১-এর বিধানসভা ভোট লড়বেন। মূলত সংখ্যালধুদের উন্নয়নেই তাঁর দল কাজ করবে বলে দাবি সিদ্দিকির। বাংলার নানান জায়গায় ইতিমধ্যেই সভা সমাবেশ করছেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা। এদিকে আসন্ন ভোটে বাংলায় প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়ে রেখেছেন মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি। এই প্রেক্ষাপটে বিধানসভা ভোটের আগে দুই সংখ্যালঘু সংগঠনের নেতৃত্বের বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী।

Advertisment

publive-image আব্বাস সিদ্দিকির বাড়িতে মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি।

তবে, এই বৈঠককে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল শিবির। বিজেপি-ওয়েইসি আঁতাঁতকেই নিশানা করছে জোড়া-ফুল শিবির। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কথায়, ‘আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে এই বৈঠক নতুন ব্যাপার। ওয়াইসি বুঝতে পেরেছেন, বাংলায় উর্দুভাষী মুসলমানের সংখ্যা কম। বাংলায় ওঁর কোনও প্রভাব খাটবে না। তাই ফুরফুরায় গিয়ে আব্বাস সিদ্দিকির কাছে গিয়েছেন।'

আরও পড়ুন- তৃণমূলের মুসলিম ভোট এখন আমার দিকে, বললেন আব্বাস সিদ্দিকি

বাংলা ভোটে প্রার্থী দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন আসাউদ্দিন। তারপরই মিম-কে 'বিজেপির বি টিম' বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে রাজনৈৌতিক সভায় তোপ দাগেন এই রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছিলেন, 'সংখ্যালঘু ভোট ভাগাভাগি করার জন্য হায়দ্রাবাদ থেকে একটা দলকে ডেকে নিয়ে এসেছে। এখানে ওরা কয়েকটাকে জোগাড় করেছে। বিজেপি ওদের টাকা দেয়। দেখেছেনতো বিহারে ওরা কি করেছে?'

publive-image বৈঠকে আসাউদ্দিন ওয়েইসি ও আব্বাস সিদ্দিকি

পদ্ম শিবিরের সঙ্গে মিম-এর আঁতাঁত বোঝাতে মমতা চড়া সুরে বলেছিলেন, ‘হায়দ্রাবাদের দলটা হিন্দু এলাকায় গিয়ে বিজেপিকে খুব গালাগাল দেবে। যাতে বিন্দুদের ভোট বিজেপি পায়। আবার মুসলমানদের কাছে গিয়ে বিজেপিকে গালাগাল দেবে আর খুব ভাল ভাল কথা বলবে। এতে মুসলমানদের ভোটটা ওরা পাবে। অর্থাৎ, বিজেপি হিন্দুদের ভোট নেবে, ওরা মুলমানদের ভোট নেবে। আর আমরা কি কলা খাব?’

আরও পড়ুন- ‘আমি কি কাঁচকলা খাব?’ বিজেপি-মিম আঁতাঁত প্রসঙ্গে মমতা

তৃণমূল নেত্রীকে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দেন ওয়েইসি। বলেন, 'টাকা দিয়ে আসাদউদ্দিন ওয়েইসিকে কেনার মতো লোক জন্মাননি। তাঁর অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তিনি দিশাহারা হয়ে গিয়েছেন। তিনি নিজের ঘর বাঁচাক আগে। ওনার দলের একাধিক নেতা দল ছেড়ে বিজেপিতে যাচ্ছে। এমন ভিত্তিহীন কথা বলে তিনি বিহারের যে মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন তাঁদের অপমান করেছেন।'

বিজেপির অভিযোগ রাজ্যে সংখ্যালঘু তোষণ করছে তৃণমূল। পাল্টা হিন্দু মেরুকরণের অভিযোগ ঘাস-ফুল শিবিরের। এই আবহে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির অভিযোগ রাজ্যের মুসলমানদের জন্য প্রকৃত উন্নয়ন কিছু হয়নি। সংখ্যালঘুদের নিয়ে 'রাজনীতি' হচ্ছে বলে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব পীরজাদা। আসন্ন ভোটে নতুন দল গড়ে প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। একই দাবিতে সোচ্চার আসাউদ্দিন ওয়েইসিও।

আরও পড়ুন- “আমাকে টাকা দিয়ে কেনার লোক এখনও জন্মায়নি”, মমতাকে পাল্টা তোপ ওয়েইসির

বাংলায় সংখ্যালঘু ভোটের অধিকাংশই এখন তৃণমূলের দখলে। আব্বাস সিদ্দিকি এবং মিম জোট বেঁধে বা আসন সমঝোতা করে প্রার্থী দিলে শাসক শিবিরের সেই ভোট ব্যাংকে থাবা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। এরপর সংখ্যালঘু জোট হলে সেই আশঙ্কা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে। মেরুকরণের ভোট সুবিধা পেতে পারে গেরুয়া শিবির। এই প্রেক্ষাপটে আব্বাস সিদ্দিকি ও আসাউদ্দিন ওয়েইসি- দুই সংখ্যালঘু নেতার রবিবারের বৈঠক ঘিরে চর্চা তুঙ্গে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

west bengal politics Asaduddin Owaisi