Advertisment

কেন্দ্রীয় বাহিনীতেই ভরসা, বিহারের বাহারীবাবুকে ঠেকুয়া খাওয়াবেন অগ্নিমিত্রা

আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচন ১২ এপ্রিল। এই কেন্দ্রে পরপর দু'বার জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। সেই বাবুল এখন বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে তৃণমূলের বাজি।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Asansol Bjp Candidate Agnimitra Paul have confidence on central force she criticise Tmc Candidate Shatrughna Sinha

শত্রুঘ্ন সিনহাকে ঠেকুয়া খাওয়াবেন অগ্নিমিত্রা পাল।

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন ১২ এপ্রিল। এই কেন্দ্র থেকে পর পর দু'বার জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। সেই বাবুল এখন বালিগঞ্জ কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। এদিকে আসানসোল কেন্দ্রে এবার বিজেপি প্রার্থী করেছে বিধায়ক তথা ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পালকে। অগ্নিমিত্রা তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'বিহারীবাবু তো নয়, উনি বহিরাগত তাই আমি বলছি বাহারীবাবু। বাহারীবাবুকে জল মিষ্টি খাইয়ে বিদায় দিয়ে দেবে আসানসোলের মানুষ। ১৬ এপ্রিল (গণনার দিন) আমি বাহারীবাবুর জন্য ঠেকুয়া নিয়ে যাব।' বাবুলকে নিয়ে তাঁর অভিমত, 'বন্ধুত্ব বন্ধুত্বের জায়গায়, রাজনীতিতে সুচাগ্র জমিও ছাড়ব না।'

Advertisment

বিজেপি দু'বার এই কেন্দ্রে জয় পেয়েছে। এবার লড়়াইয়ে কী হবে?

কোনও নির্বাচনেই প্রতিপক্ষকে আন্ডারএস্টিমেট করা উচিত নয়। বিগত কয়েক বছর মোদীজি ও বিজেপির সমর্থক এখানকার মানুষজন। আমাদের দুবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছে এখান থেকে। তিনি ছেড়ে চলে গিয়েছেন সেটা আলাদা কথা। সেক্ষেত্রে মনে হয় মাটি তৈরি রয়েছে। আর যদি আসানসোলের মানুষ ভোট দিতে পারে বা ইভিএম অবধি যেতে পারে তাহলে নিশ্চিতভাবে বিজেপি জয়ী হবে।

পুর নির্বাচনে ব্যাপক ছাপ্পা-রিগিংয়ের অভিযোগ করেছেন। এখানে কী হবে?

সাধারণ মানুষ ভোট দেবে যদি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে। আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাই যাতে সেন্ট্রাল ফোর্স থাকে। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে মানুষের ভরসা থাকে যে, আমি বুথে গিয়ে ভোট দিতে পারব। বিগত নির্বাচনগুলিতে রাজ্য পুলিশ স্রেফ দাঁড়িয়েছিল। কিছু করেনি, শুধুই রিগিং হয়েছে। এবারে সেন্ট্রাল ফোর্স থাকলে মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি সেই রাগ থেকে প্রতিশোধ নেবে সাধারণ মানুষ।

কয়েকদিন আগেই কর্পোরেশন নির্বাচন হল আসানসোলেও…..

সেখানে আমাকে গৃহবন্দি করে রেখেছিল। আমাকেই ভোট দিতে দেয়নি। ৯৫ শতাংশের ওপর বুথে রিগিং হয়েছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে রিগিং করিয়েছে। সেই মানুষের রাগ এবার ইভিএমে গিয়ে পড়বে। এখানে মানুষ ভোট দিয়ে দেখিয়েছে তাঁরা মোদীজীকে চায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।

পুরভোটের ফলাফলের পর তৃণমূল ছাড়া এই রাজ্যে কেউ নেই…

পুরভোট প্রসঙ্গে তৃণমূলের নেতৃত্ব বলেছিলেন, 'এমনটা নাও করলে পারত। তাঁরা লজ্জা পেয়ে একথা বলেছেন। এমনিতেই জিতত।' মানুষকে ভোট না দিতে দিয়ে এটা তৃণমূল প্রমাণ করেছে বাংলার মানুষকে তাঁরা কতটা ভয় পায়। তাঁরা জানে অবাধ ও স্বচ্ছ ভোট হলে মানুষ বিজেপিকে ভোট দেবে। তৃণমূল কোথাও স্থান পাবে না। প্রত্যেকটা বুথে রিগিং করা, আমাদের প্রার্থীদের ওপর হামলা করা। পুলিশ-প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে এসব কাণ্ড করেছে।

সিপিএমের হাল কী, কিছু করতে পারবে। নতুন করে কিছু করতে চাইছে।

সম্প্রতি দেখতে পাচ্ছি, ভেন্টিলেশন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছে। ডাক্তারবাবু দেখতে পাচ্ছে নিঃশ্বাস একটু নিচ্ছে। সেই দলের ওপর মানুষ ভরসা রাখে? যখন তাঁরা পুরোপুরি অক্সিজেন নিত অর্থাৎ ভেন্টিলেশন ছাড়া ছিল তখন বাংলার মানুষকে ভেন্টিলেশনে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সাঁইবাড়ি, বানতলা, বিজনসেতু, ইংরেজি তুলে দেওয়া, শিল্পতালুক বন্ধ হয়ে গিয়েছে সেই সময়। তবে এটাও ঠিক ওরা যা অত্যাচার করেছে তার ১০০ গুণ বেশি অত্যাচার করছে তৃণমূল কংগ্রেস।

প্রচারে কী বলবেন?

রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের লাগামছাড়া অত্যাচার। লোকে এসব দেখছে। বাংলার বাঙালিরা নিরীহ শান্তিপূর্ণ হতে পারে, কিন্তু তাঁরা ইভিএমে বদলা নেবেই। চাকরি নেই, কাটমানি, অত্যাচার, খুন, রাজনৈতিক খুনে দেশে এক নম্বরে বাংলা। বিগত কয়েকবছর আসানসোলে তৃণমূল কী করেছে? বাবুল সুপ্রিয় যে কাজগুলো করতে চেয়েছিল সেগুলোও করতে দেয়নি। সেই বাবুল সুপ্রিয় লাফিয়ে লাফিয়ে চলে গেল তৃণমূলে। মানুষ কী ভুলে গিয়েছে আজ যাকে ভোট দিয়ে জেতাল সে চলে গেল তাঁদের ছেড়ে। যে মানুষগুলো ভোট দিয়েছিল সেই মানুষগুলিকে ঠকিয়ে দিল। বাবুল আমার বন্ধু। কিন্তু বন্ধু বন্ধুত্বের জায়গায় রাজনীতির জায়গায় একটা চুল জায়গা ছাড়ব না। শেষ বিন্দু অবধি লড়াই করব।

বিধানসভা ভোটে বাংলার মেয়েকে চাই বলে ঝড় তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আসানসোলে কী হবে?

আসানসোলের মানুষ আমার পাশে আছে। আমি আসানসোলের বাড়ির মেয়ে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যেমন বাংলার মেয়ে কে চায়। অগ্নিমিত্রা পালও বাংলার মেয়ে। আসানসোলের মানুষ অগ্নিমিত্রা পালকে চায়। কারণ অগ্নিমিত্রা পাল আসানসোলের বাড়ির মেয়ে, ঘরের মেয়ে।

অ্যাডভান্টেজ…

মানুষ জানে অগ্নিমিত্রা পাল ২৪ ঘন্টা মানুষের পাশে আছে। শেষ একবছর আমি সেটা প্রমাণ করে দিয়েছি। আমি লড়াই করে জিতেছি। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সাংসদ হয়েও তাঁদের পাশে দাঁড়াব। এটা আমার কমিটমেন্ট।

বিধায়কদের প্রার্থী করছে, সাংসদদের প্রার্থী করেছে বিধানসভায়।

বিধায়ক বলে আমি তো প্রথমে আবেদন করিনি। যাঁরা আবেদন করেছিলেন তাঁরাও সবাই আসানসোলের মানুষ। কেউ বহিরাগত নয়। দলের মনে হয়েছে একজন মহিলা অনেক বেশি লড়াই দিতে পারবে। দল বাংলার মহিলাদের ওপর ভরসা ও বিশ্বাস রাখেন।

বিধানসভা ভোটে বহিরাগত তত্ত্বেই বাজিমাত করেছিল তৃণমূল। শত্রুঘ্ন সিনহাকে এখন বিজেপি বহিরাগত বলছে।

মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ভীষণ অসত্য কথা বলেন। অসত্য কথা বলে ভুলে যান। আগের বছর বলেছিলেন বাংলার বাইরের মানুষ সব বহিরাগত। যার ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল নেই। সংস্কৃতির সঙ্গে মিল নেই। আমাদের কার্যকর্তা ও নেতৃত্বকে অপমান করা হয়েছিল। ওনারই কথাটা ওনাকে ফেরত দিচ্ছি। শত্রুঘ্ন সিনহা বহিরাগত। আসানসোলের মানুষ বহিরাগতকে চায় না। উনি নিজে কর্মক্ষেত্রে নামকরা গুণী মানুষ। তবে সুচাগ্র জমিও আমি ছাড়ব না। রাস্তায় নেমে লড়াই হবে। আসানসোলের মানুষ বিজেপির পাশে থাকবে।

অন্য রাজ্য থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কী বলবেন?

লড়াইয়ে জিতবই। বাড়ির মেয়েকে ভোট না দিয়ে বাইরের লোককে দেবে নাকি। বাড়ির লোকের অভিমান থাকতে পারে, বাড়ির লোককে বকবে, ভালবাসবে সে অধিকারটা বাড়ির লোকের থাকে। অন্যদিকে বাইরের লোক বাইরের লোক। সে আসবে, মিষ্টি জল খাওয়াব, বিদায় দিয়ে দেব।

তিনি সাংসদ হলে কোনও সময় দিতে পারবেন না। সেটা সম্ভব নয়। যাঁর আদি বাড়ি বিহার, যাঁর কর্মক্ষেত্র মুম্বই। যাঁর সাংসদ ক্ষেত্র হবে দিল্লি। যে সাংসদ হবে বাংলার। আমি জানি না কীভাবে এটা ম্যানেজ করা যায়। উনি অন্য় কোথাও যান।

কী মিষ্টি খাওয়াবেন?

মিস্টার শত্রুঘ্ন সিনহা উনি তো বিহারীবাবু বলে বিখ্যাত। আমি ওনাকে বিহারীবাবু বলব না। উনি বহিরাগত তো ওনাকে আমি বাহারীবাবু বলব। বাহারীবাবুকে আমার আসানসোলের ভাই-বোনেদের বানানো ঠেকুয়া খাওয়াব। ১৬ এপ্রিল ওনার জন্য ঠেকুয়া নিয়ে যাব।

আরও পড়ুন- ‘দয়া করে ফিটার মিস্ত্রীটিকে প্রচারে নামাবেন না’, তথাগত-র বোমা, কাকে নিশানা?

Agnimitra Paul Shatrughna Sinha asansol bjp tmc
Advertisment