কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে আবারও ধর্না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্না প্রত্যাহারের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করা করলেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ি পুরসভার বর্তমান মেয়র তথা শিলিগুড়ির বাম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য।
বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে অশোক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মানে শুধু কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার নয়। স্থানীয়স্তরে স্বায়ত্তশাসনাধীন সরকার বা লোকাল সেলফ গভর্নমেন্টও পড়ে এর মধ্যে। কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত সরকার মিলিয়েই এই কাঠামো।’’ এরপরই মমতার ধর্নার সঙ্গে তুলনা টেনে শিলিগুড়ির মেয়র বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানার অভিযোগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ধর্নায় বসেছিলেন। বাম পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরসভাকে তার সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে রাজ্য। তাই আমিও সাংবিধানিক অধিকারের জন্য মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসব।’’
আরও পড়ুন, মোদীকে চরম আক্রমণ করে ধর্না প্রত্যাহার মমতার
তবে কবে ধর্নায় বসছেন, তা এখনও স্পষ্ট করে জানাননি এি বাম বিধায়ক। এ প্রসঙ্গে অশোকবাবু বলেন, ‘‘দল ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা করেই দিনক্ষণ চূড়ান্ত করব।’’ মমতাকে বিঁধে শিলিগুড়ির মেয়র বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী, তাই তিনি রাজ্য সরকারের অনুমতির তোয়াক্কা না করেই ধর্নায় বসেছিলেন। তবে আমি রাজ্য সরকারের কাছে অনুমতি চাইব। অনুমতি দিলে ভাল, না দিলেও ধর্নায় বসব। শিলিগুড়ি পুরসভার বকেয়া আদায়ের দাবি জানিয়ে ধর্নায় বসব।’’
আরও পড়ুন, ‘রাজীব কাণ্ডে’ তোলপাড় সিবিআই, খবর ফাঁস করছে কে?
উল্লেখ্য, গত রবিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানার প্রতিবাদে ধর্মতলার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার রাত থেকে শুরু হয় মমতার ধর্না। তিন দিনের মাথায় অর্থাৎ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধর্না প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআই হানার প্রতিবাদে মেট্রো চ্যানেলে মমতার সাম্প্রতিক কালের এই ধর্না, ১৩ বছর আগের সেই ২৬ দিনের ধর্নার স্মৃতি উসকে দিয়েছে। সে সময় ধর্নায় বসেছিলেন রাজ্য রাজনীতির তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে ধর্নায় বসলেন জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে মোদী সরকারের চরমতম বিরোধী মমতা, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অবিজেপি ব্রিগেডের মুখ্য চরিত্র হয়ে ওঠার প্রচেষ্টা রয়েছে বলেও মনে করছে রাজনীতির কারবারীদের একাংশ। মমতার এই মডেলই এবার অনুসরণ করতে চলেছেন সিপিআইএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। এখন দেখার, অশোকের এই ধর্না প্রাক নির্বাচনী রাজ্য রাজনীতিতে কোনও নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে কি না।