'গণহত্যা মানেই বোঝেন না মুখ্যমন্ত্রী। তাই বলার আগে দু'বার ভাবুন'। দিল্লি হিংসা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'পরিকল্পিত গণহত্যা' মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এই হুঁশিয়ারি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র।
রবিবার শহিদ মিনারে সভা করেন বিজেপি নেতা অমিত শাহ। সেখানে দিল্লি হিংসা নিয়ে কিছু না বললেও রাজ্যের তৃণমূল সরকার ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন শাহ। তবে দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে শাহকে বিঁধে সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, 'গত কয়েকদিন ধরে দিল্লির মাটিতে যেভাবে মানুষ হত্যা হয়েছে। আমি মনে করি পরিকল্পনা করে গণহত্যা করা হয়েছে। নালা খুলছে আর লুকোনো দেহ বেরোচ্ছে। আমাদের হাতে না হয় রাজ্য পুলিশ থাকে। কিন্তু দিল্লির পুলিশ তো কেন্দ্রের আওতায়। সেনা, এসএসবি, সিআরপিএফ থাকা সত্ত্বেও শিখ দাঙ্গার পরও এত বড় একটা হিংসা ঘটল কীভাবে, বিজেপি কেন ক্ষমা চাইল না? নির্লজ্জের মতো এখানে এসে বলেছে, দখল নিতে হবে। যে জায়গার দখল নিয়েছে, সেখানকার ১২টা বাজিয়ে দিয়েছে! যাঁরা প্ররোচনা দিয়েছেন, সেই বিজেপি নেতারা গ্রেফতার হননি কেন?'
মমতার এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই সরব বিজেপি। বাবুল সুপ্রিয় থেকে দিলীপ ঘোষরা তোপ দেগেছেন। অমিত শাহ-মমতা একে অপরকে নিশানা করে আক্রমণ শানালেও আদতে তা 'পরিকল্পিত খেলা' বলে বিজেপি-তৃণমূল আঁতাঁতের অভিযোগ তুলেছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় বলেন, 'গণহত্যা মানেই বোঝেন না মুখ্যমন্ত্রী। তাই বলার আগে দু'বার ভাবুন। দিল্লিতে যখন শান্তি ফিরে আসছে তখন এই ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্য করা বন্ধ করুন মুখ্যমন্ত্রী। যদি কোনও পরামর্শ থাকে তাহলে তা বলার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করতে পারেন তিনি'।
আরও পড়ুন: ‘সোশাল মিডিয়া ছাড়ব ভাবছি’, টুইটে জল্পনা উস্কালেন মোদী
শাহের সভায় যাওয়ার পথে কলকাতার রাস্তায় 'গোলি মারো' স্লোগান দিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন বিজেপি সমর্থক। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দিল্লিতে বিজেপি নেতা, মন্ত্রীদের এই ধরনের উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য কেন গ্রফতার করা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মমতা। সেই প্রসঙ্গেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে বলেন, 'দেশ বিরোধী স্লোগান যাঁরা দিচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলা সরকার কেন কোনও পদক্ষেপ করছে না?'
গত সপ্তাহেই ভুবনেশ্বরে আন্তঃ রাজ্য পরিষদের পূর্বাঞ্চলের বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পৌরহিত্যে হয় এই বৈঠক। দিল্লি হিংসা নিয়ে মৌন থেকে কেন ভুবনেশ্বরে শাহের নেতত্বাধীন বৈঠকে যোগ দিলেন মমতা তা নিয়ে প্রশান তোলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। বলেন, 'মমতা দিল্লি হিংসা নিয়ে ভাবলে ভুবনেশ্বরের বৈঠকে যোগ দিতেন না। প্রথমে বৈঠক, পরে কলকাতায় অমিত শাহকে সভা করার অনুমতি দিয়ে এখন তাঁর বিরুদ্ধে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মানুষ এইসব গোপন খেলা বুঝে গিয়েছেন'।
বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, 'গত সাত দিন রাজধানীর হিংসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কোনও কথা শোনা যায়নি। এখন অনেক কথা বলছেন। বুঝেছেন এখন না বললে পরে আর বলা মত জায়গায় উনি থাকবেন না'।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন