কাশ্মীর আপাতত শান্ত। তরান্বিত হচ্ছে উন্ননের কাজ। উপত্যকার উন্নয়ন নিয়ে শুক্রবারই দিল্লিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর মধ্যেই উপত্যকায় গণতান্ত্রিক রীতি মেনেই সম্পন্ন হয়েছে জেলা উন্নয়ন পর্যদের নির্বাচনও। এবার তাই জম্মু-কাশ্মীরে আরও বৃহৎ রাজনৈতিক পদক্ষেপের তোরজোর শুরু করল কেন্দ্র। আগামী ২৪ জুন নয়াদিল্লিতে সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছে মোদী সরকার। জম্মু ও কাশ্মীরের পুনর্গঠনের পর প্রথমবার এধরনের কোনও রাজনৈতিক বৈঠক হতে চলেছে। মূলত উপত্যকার বিধানসভাভিত্তিক এলাকা পুনর্গঠন নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে।
কবে হতে পারে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা ভোট। তা নিয়ে কৌতুহল তুঙ্গে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করছেন, উপত্যকার রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে কেন্দ্রের এই বৈঠকই জম্মু-কাশ্মীরের আগামী বিধানসভা ভোটের প্রথম পদক্ষেপ।
সর্বদলে যোগ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে তরফে ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান পৌঁছে গিয়েছে। তবে, বিজেপি বিরোধী গুপকার জোট এই বৈঠকে অংশ নেবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এই তথ্য জানিয়েছেন পিডিপি নেত্রী মেহেবুবা মুফতি। উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ আগেই গুপকার জোটের বৈঠক হয়। সেখানেই জোটের চেয়ারপার্সন তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রধান ফারুখ আবদুল্লাহ বলেছিলেন, 'আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনার দরজা বন্ধ করে রাখিনি। প্রস্তাব এলে ভেবে দেখা যাবে।'
আরও পড়ুন- আনলক হতেই বাজারে ভিড়! তৃতীয় ঢেউ আসা সময়ের অপেক্ষা, দিল্লিকে সতর্ক করল আদালত
সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীরের ডিলিমিটেশন কমিটি উপত্যকার ২০টি জেলা প্রশাসনকে গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে প্রতি জেলা ও বিধানসভার জনঘনত্ব, স্থানবিবরণের তথ্য চেয়ে পাঠায়। ইতিমধ্যেই প্রায় সব জেলাই তথ্য কমিশনের কাছে জমা করেছে। ২০২০ সালের মার্চে উপত্যাকা ডিলিমিটেশন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। যার মেয়াদ এ বছর মার্চে এক বছরের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জন প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে এই কমিশনের বৈঠকে মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং ও সাংসদ যুগল কিশোর ছাড়া বাকি তিন সদস্য অংশ নেননি। এই কমিশনের বাকি সদস্যরা হলেন ফারুখ আবদুল্লাহ, মহম্মদ আকবর ও হাসনয়েন মাসুদি।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে যে, 'সুরক্ষা থেকে উন্নয়ন, কাশ্মীরের পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে। এখনই পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরুর সেরা সময়। তাই সর্বদল বৈঠকের ডাক দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে এই কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের উন্নয়নের পর্যালোচনা বৈঠকও ডাকা হয়েছে।'
এটা কি আসলে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা ভোটের প্রধান পদক্ষেপ? কেন্দ্রীয় সরাকারের সূত্র জানাচ্ছে, 'সেরকরমটা হতে পারে। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষেই সেখানে বিধানসভা ভোটের ঘো,ণা করা যেতে পারে। তবে ডিলিমিটেশন কমিশনের রিরপোর্ট জমার পরই সবকিছু চূড়ান্ত হবে।'
এর মধ্যেই, শুক্রবার জম্মু কাশ্মীরের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিযয়গুলির পর্যালোচনা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার দিল্লিতে এই বৈঠকে শাহ ছাড়াও ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেনান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, হোম সেক্রেটারি অজয় ভাল্লা, ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর অরবিন্দ কুমার, 'র' চিফ সামান্ত কুমার গোয়েল, সিআরপিএফ ডিজি কুলদীপ সিং।
অমিত শাহ জানিয়েছেন, জম্মু কাশ্মীরের সার্বিক উন্নতিই মোদী সরকারের কাছে অগ্রাধিকার। কাশ্মীরের মানুষের জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগকেও সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। কাশ্মীরের কৃষকরা যাতে কেন্দ্রীয় নানা যোজনার সুবিধা পান তাও নিশ্চিত করতে বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন