Advertisment

'মমতার তখন কার মুখ মনে পড়ছিল, রাজীব কুমার না ভাইপোর?'

বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে বাংলায় এনআরসি না হওয়ার প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরেও কেন ওখানে জোড় দিয়ে বলতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী? তখন কার মুখ মনে পড়েছিল, রাজীব কুমার না ভাইপোর?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mamata banerjee rajeev kumar, mamata nephew

'কার মুখ মনে পড়েছিল মমতার?"

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-অমিত শাহ বৈঠকের পর তৃণমূল সুপ্রিমোকে চরম বিঁধলেন সিপিআইএম-এর পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে 'ভালো বৈঠকের' পর এদিন অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “এনআরসি নিয়েই কথা হয়েছে। তবে বাংলার এনআরসি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। আসামের এনআরসির পর ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে। বাংলা ভাষী, হিন্দি ভাষী, গোর্খা সম্প্রদায়ভুক্ত বহু মানুষ প্রকৃত ভোটার হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নাম বাদ গিয়েছে এবং তা মেনে নেওয়া যায় না। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রিকে আমি চিঠি দিয়েছি।” মমতার এই মন্তব্যের পরই সুজনের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisment

আরও পড়ুন- দারুণ খুশি মমতা, মোদীকে বাংলায় আমন্ত্রণ মুখ্যমন্ত্রীর

বিধানসভার বাম পরিষদীয় নেতা এদিন বলেন, "গতকালই অমিত শাহ বলেছেন, এনআরসি হবেই। তারপরেও মুখ্যমন্ত্রী ওখানে আবার বলতে গেছেন। এর কোনও অর্থই হয় না। বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে বাংলায় এনআরসি না হওয়ার প্রস্তাব পাশ হওয়ার পরেও কেন ওখানে জোড় দিয়ে বলতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী? তখন কার মুখ মনে পড়েছিল, রাজীব কুমার না ভাইপোর? অমিত শাহের সামনে আসামের এনআরসি নিয়ে এতো কথা বললেন, অথচ বাংলার কথাই বললেনই না। আপনি আসামের মুখ্যমন্ত্রী না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী? বাংলার এনআরসি নিয়ে একটা কথাও বলতে পারলেন না! কিসের জন্য গিয়েছিলেন ওখানে? নিজের স্বার্থ কায়েম করতে? আসলে ওনার কাছে বাংলার মানুষের স্বার্থ গুরুত্বপূর্ণ নয়।"

আরও পড়ুন- বাংলায় এনআরসি দরকার নেই, আসাম নিয়েও আপত্তি আছে, শাহকে জানালেন মমতা

উল্লেখ্য, দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ ‘ভাল’ হয়েছে বলে বুধবারই জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক এতটাই ‘ভাল’ হয়েছে যে মোদীকে পুজোর পর বাংলায় আসার আমন্ত্রণও জানিয়ে এসেছেন বলে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বৈঠক খুব ভাল হয়েছে। ভাল ভাবে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আসা হয়নি। সে সময় কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তাই আসতে পারিনি’’। এরপরই মমতার তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক কথা হয়েছে। রাজ্য ও দেশের যাতে ভাল হয়, সে ব্যাপারে কথা হয়েছে’’। তখনই মমতা জানিয়ে দেন, সময় পাওয়া গেলে তিনি বৃহস্পতিবার অমিত শাহর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করতে চান। এরপরই নর্থ ব্লক থেকে সময় ধার্য করা হয় এবং বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ শাহ-মমতা সাক্ষাৎ হয়।

আরও পড়ুন- সারাদেশেই এনআরসি হবে, তালিকাছুটদের তাড়াব: অমিত শাহ

প্রসঙ্গত, রাজ্যে যখন সারদা-রোজভ্যালি তদন্তে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে বিশেষভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিবিআই, ঠিক সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'হঠাৎ' দিল্লি যাওয়া নিয়ে সরগরম বিরোধীরা। তাঁদের একাংশের মতে, রাজীব কুমারকে বাঁচাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের 'দ্বারস্থ' হয়েছেন মমতা। এদিকে মমতার ভাইপো তথা ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও একাধিক ইস্যুতে অভিযোগ করে থাকেন বিরোধীরা। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারেবারেই বলেছেন, নেহাত সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থেকে বিভিন্ন দাবি নিয়েই তিনি এ যাত্রায় কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে এদিন অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক শেষে মমতা সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলে রাজীব কুমার প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু, তিনি এ বিষয়ে নিরুত্তরই থেকেছেন।

sujan chakraborty Mamata Banerjee
Advertisment