একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে ছিলেন দিলীপ ঘোষ! বঙ্গ রাজনীতিতে তৃণমূলনেত্রীর লড়াইয়ের অন্যতম পীঠস্থান নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে এমন ‘পুরনো কথা’ই আওড়ালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। নন্দীগ্রামের ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে শনিবার মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে (নন্দীগ্রাম) লড়েছিলেন, গুলি চলেছিল। আমরা ওঁর সঙ্গে ছিলাম। নন্দীগ্রামের মানুষের জন্য আমরা লড়াই করেছিলাম...আজ বুঝি, মমতার সঙ্গে থেকে ভুল করেছি, ওঁর কোনও যোগ্যতাই নেই...২০২১ সালে নন্দীগ্রামে বিজেপি বিধায়ক পাবে’’। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে পরিবর্তনের সরকারের নেপথ্যে নন্দীগ্রামের মাটিতে মমতার লড়াইয়ের ভূমিকা অন্যতম। উনিশের নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির উত্থানের পর সেই নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়েই ২০০৭ সালের ১৪ মার্চের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মমতাকে যেভাবে খোঁচা দিলেন দিলীপ, তা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
ঠিক কী বলেছেন দিলীপ ঘোষ?
বিজেপি রাজ্য সভাপতি এদিন বলেন, ‘‘সেদিনের কথা মনে করছি। যে গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করেছিলেন, সিপিএমের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। এখানে (নন্দীগ্রাম) গুলি চলেছিল। সেদিন মমতার পাশে ছিলাম আমরা। সেদিন নন্দীগ্রামে ঢুকতে পারছিলেন না উনি। চণ্ডীপুরে বসে কাঁদছিলেন ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে। সেদিন শুভেন্দুবাবু (শুভেন্দু অধিকারী) যুবক ছিলেন, তাঁরও দম ছিল না। রাজনাথ সিং, সুষমা স্বরাজ, লালকৃষ্ণ আডবানি মমতাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আপনারা ভুলে যান, আমরা ভুলিনি। সেই লড়াইয়ে আমাদের কর্মী বিশ্বজিৎ মাইতি মারা গিয়েছিলেন। সেদিন নন্দীগ্রামের মানুষের জন্য লড়েছিলাম। আজ বুঝি, সেদিন মমতার সঙ্গে থেকে ভুল করেছি। আমরা ভেবেছিলাম, এখানে (নন্দীগ্রাম) গণতন্ত্র ফিরবে, তাই ওঁকে সমর্থন করেছিলাম। আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, উনি তার যোগ্য ছিলেন না। সেদিন বিজেপি ছিল বলেই শুভেন্দু অত লাফাচ্ছিলেন। আমরা তপস্বী সাধুর মতো ইঁদুর থেকে বাঘ, বাঘ থেকে ইঁদুর করতে পারি, ২০২১ সালে সেটা করব’’। এদিন মমতা ও শুভেন্দুর মানে কটূক্তিও করেন দিলীপ।
আরও পড়ুন: অমিত শাহ ফোনে চারটি শব্দ বলেছিলেন! ফাঁস করলেন দিলীপ ঘোষ
আরও পড়ুন: ‘মমতা সরকারের পতন হবেই’, হুঁশিয়ারি মুকুলের
একুশের নির্বাচনে নন্দীগ্রামে বিজেপিই জিতবে বলে এদিন দাবি করেন দিলীপ। নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে নাম না করে নিশানা করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘একুশ সালে নন্দীগ্রামে আমরাই জিতব। এখানকার বিধায়ককে বলছি, ঠিক করে নিন আপনি কোন কেন্দ্রে দাঁড়াবেন, কারণ এখানে দাঁড়ালে হারবেন’’।
অন্যদিকে, এদিন নন্দীগ্রাম যাওয়ার পথে দিলীপ ঘোষকে বাধা দেয় পুলিশ। এ প্রসঙ্গে ফের পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘‘আমার জেলা সভাপতিকে কলার ধরে টানল পুলিশ। আমাদের কর্মীদের গায়ে হাত দিলে ভুলি না। হিসাব আমরা একসময় দেব। ইউনিফর্ম পরে আছেন, যে টাকা পান, আমাদের ট্যাক্সের টাকা রয়েছে। কাল এই সরকার থাকবে না, আমরা থাকব। আপনারাও থাকবেন’’।