এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ করেননি পদ্মশিবির, তবে দিদির বাড়িতে 'ভাইফোঁটায়' অংশগ্রহণ, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে হাজিরা এবং সবশেষে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকের মাধ্যমে শোভন-বৈশাখী-তৃণমূলের নয়া রসায়ন কার্যত স্পষ্ট। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধ্যাপিকা তথা শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের মতো স্বল্প শিক্ষিত মানুষের প্রয়োজন নেই বিজেপিতে। তাই এই মূহুর্তে দলে থাকা না থাকাটা সমান। শোভনবাবু বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন এবং উনি চেয়েছিলেন আমিও সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে থাকি। কিন্তু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর নানা ভাবে অপমানিত হতে হয়েছে আমাদের। বিজেপির সঙ্গে এখন আমাদের কোনও যোগাযোগ নেই।"
বৈশাখীর এই মন্তব্যের পরই শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, "প্রথম দিন থেকেই বিজেপির সঙ্গে বিশেষ ঘনিষ্টতা ছিল না ওঁদের। প্রত্যেকের নিজস্ব সমস্যা আছে। আর কেউ বাচ্চা ছেলে নয় যে ললিপপ দিয়ে তাঁকে নিয়ে এসেছি। সবাই আমাদের কাছে সম্মানীয়। তবে দলে থাকবে কি না সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।"
আরও পড়ুন- তৃণমূল অফিসে পড়ল ‘কার্তিক’, বিরোধীদের চক্রান্ত নয় তো?
প্রসঙ্গত, যোগদানের পরপরই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন শোভন-বৈশাখী। বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানান এই যুগল। এরপর থেকেই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে। গুঞ্জন ছড়ায়, তাহলে কি ফের তৃণমূলে ফেরার কথাই ভাবছেন শোভন? কিছুদিন আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে সেখানে দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই মমতা শিবিরে যোগদান ঘিরে বাড়তে থাকে জল্পনা। তবে শোভন-বৈশাখীর অবস্থান নিয়ে অস্বস্তিতে পদ্ম শিবিরও।
আরও পড়ুন- ‘সব কথার উত্তরের প্রয়োজন নেই’, মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ ধনকড়ের
তবে এদিন শুধু শোভন-বৈশাখী নয়, মমতা সরকারকেও তোপ দেগেছেন দিলীপ ঘোষ। বুলবুল ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ত্রাণ বিলি নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "মানুষের সেবা না করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের অপমান করতে বেশি সময় নষ্ট করছে রাজ্য সরকার। বুলবুল ত্রাণে কিছু লুকানো হচ্ছে সেই কারণেই কেন্দ্রীয়মন্ত্রী এবং প্রেসকেও সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যপাল ঠিকই বলেছেন, রাজ্য সরকারকে সব তথ্য প্রকাশ করতে হবে।"
আরও পড়ুন- ‘বৈশাখীর অভিমানের কারণ কি শোভনের পুরনো বান্ধবী?’
অন্যদিকে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সফরকে কেন্দ্র করে মমতা সরকারের আক্রমণের প্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ বলেন, "তৃণমূলের মন্ত্রীরা ও মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া আর কেউ বলেননি যে রাজ্যপাল সংবিধান ভঙ্গ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী অসম্মানজনক ভাবে অপমান করছেন রাজ্যপালকে। সরকারের ভুল ত্রুটি ধরিয়ে দিচ্ছেন উনি, এতে ভুল কী আছে। রাজ্যপাল চাইছে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অথচ তৃণমূল সেখানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পাচ্ছেন। আসলে এতদিন কেউ আঙুল তোলেননি তো মমতা সরকারের বিরুদ্ধে।"