Haryana Assembly elections: হরিয়ানার ভোট এবার যেন বিজেপি-কংগ্রেসের যুদ্ধক্ষেত্রে। কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও ঘাড়ে কিন্তু নিঃশ্বাস ফেলছে বিজেপি, এমনটাই মনে করছেন রাজ্যের ভোটারদের অধিকাংশ। বিজেপি এবার ভোটযুদ্ধে কৌশল বদল করেছে। মোদী ফ্যাক্টরের উপর শুধু নির্ভর না করে চাকরি, জনসাধারণের জন্য একাধিক কল্যাণমূলক প্রকল্পকে প্রচারে রেখেই ভোট বৈতরণী পারের চেষ্টা করছে বিজেপি।
হরিয়ানায় নির্বাচনী লড়াই 'শুরুর' সঙ্গে সঙ্গে রাজ্য জুড়ে হাওয়া কংগ্রেস পক্ষে, এমনটা আপাতভাবে রাজ্যের একাংশ ও রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণ হলেও কুরুক্ষেত্র-কারনাল অঞ্চলের ভোটাররা জোর দিয়ে বলেছেন, বিজেপি,১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও প্রতিযোগিতা থেকে এখনও টিকে রয়েছেন। কুরুক্ষেত্র শহরে, হার্ডওয়্যারের দোকান চালান সন্দীপ সিংলা স্বীকার করেছেন, "বিজেপির পক্ষে এই নির্বাচন সহজ নয়। অবশ্যই, কংগ্রেসের জয়ের একটা চান্স রয়েছে। রাজ্যে ১০ বছরের বিজেপি শাসনের পরে মানুষ এখন বদল চাইছেন। তবে বিজেপি এখনও কংগ্রেসের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে"।
পার্শ্ববর্তী কারনাল জেলার বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত জয় কিষান শর্মা বলেছেন, স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অঞ্চলের জন্য অনেক কাজ করেছেন। পানীয় জল থেকে শুরু করে গ্রামে পরিচ্ছন্নতা অভিযান সেটাই ৫ অক্টোবর, বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে। রাজ্যের ৯০ টি বিধানসভা আসনে ভোট। মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিং সাইনিকে তার পূর্বসূরি এবং বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের সাথে তুলনা করে, এক বিজেপি কর্মী বলেছেন, “খাট্টার সাহেবও দক্ষ হাতে রাজ্য সামলেছেন। কাজ করেছেন। তবে তিনি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ভেবেচিন্তে নিতেন। কিন্তু সাইনি উদ্যমী”। শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 'মুখের'উপর ভরসা না করে গত এক দশকে রাজ্য সরকারের কী কী করেছেন সেই রেকর্ড সাধারণের সামনে নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি।
পুজোয় ঘুরতে যাচ্ছেন? সাবধান! জঙ্গি হামলার আশঙ্কা, জারি হাই অ্যালার্ট
প্রচারাভিযানে, দল স্বচ্ছতার সঙ্গে চাকরি সহ অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) বার্ষিক আয়ের সীমা বাড়ানো, সরকারি কর্মচারী, অনগ্রসর সম্প্রদায় এবং পঞ্চায়েত প্রধানদের জন্য অনেকগুলি বরাদ্দের ঘোষণা করেছে ৷ একই সঙ্গে দল, অ-জাট সম্প্রদায়কে একত্রিত করার এবং দলিত ভোটকে ভাগ করার চেষ্টা করছে। রাজ্য বিজেপি নেতারা আশা করছেন যে হরিয়ানার নির্বাচনে সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলবে জাটদের ভোট। যা কংগ্রেস, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদল এবং জননায়ক জনতা পার্টির মধ্যে ভাগ হয়ে যাবে৷
কয়েক মাস আগে হরিয়ানার লোকসভা নির্বাচনে বেকারত্বের ইস্যু বিজেপিকে ক্ষতবিক্ষত করেছে - দল ১০ টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই কংগ্রেসের কাছে হেরেছে। বিজেপি কর্মীরা চাকরি ইস্যুতে সাইনি সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে প্রচারের পাশাপাশি আশাবাদী বিধানসভা নির্বাচনে বেকারত্বের ইস্যু কংগ্রেসের জন্য সেভাবে কাজ করবে না।
"আমার ছেলে কোনো সুপারিশ ছাড়াই চাকরি পেয়েছে। আমি কাউকে কোনো টাকা দেইনি বা কাউকে সাহায্য করতে বলিনি,” প্রতাপগড়ের একটি নির্বাচনী সমাবেশে বিজেপি কর্মী সুশীল কুমার দাবি করেছেন। আরেকজন বিজেপি কর্মী, যিনি নিজেকে রাজ কুমার বলে পরিচয় দিয়েছেন তিনি দাবি করেছেন, তার পুত্রবধূও ঘুষ না দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন।
চাকরির অভাব, কৃষি সমস্যা বেশ কিছু ভোটার উদ্বিগ্ন হওয়া সত্ত্বেও, বিজেপি সমর্থক আশা দেবী যিনি পানিপথের কাছে জাতীয় সড়কের পাশে একটি ছোট চায়ের দোকান চালান, উৎসাহের সঙ্গেএ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সাইনি সরকারের কর্মসূচি, বিনামূল্যে রেশন এবং আবাসন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে বলেছেন, রাজ্যের দরিদ্রদের জন্য “আমি চাই বিজেপি ক্ষমতায় ফিরে আসুক”। কিন্তু বেকারত্বের প্রশ্নে তিনি জবাব দেন নি। মুদ্রাস্ফীতি প্রসঙ্গে তাঁর স্বামী বলেন, বিজেপি নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে গ্যাসের দাম আরও বাড়িয়ে দেবে"।
হরিয়ানার এই অংশের বেশ কিছু মানুষও বিজেপির কর্মকাণ্ড নিয়ে হতাশ। কুরুক্ষেত্র জেলার থানেসার শহরে,পর্দা বিক্রেতা আকাশ কুমার এবং মঞ্জু দেবী দলের প্রতি অসন্তুষ্ট । কারণ তারা ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে বাড়ি পাওয়ার জন্য ৫৩,৬০০ টাকা দিলেও বাড়ি পান নি। তাদের কথায়, “বিজেপি অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং আমাদের বোকা বানিয়েছে। বিজেপি বিধায়ক আমাদের ভোটে জয়ী হলেও আমাদের সমস্যার কথা শোনেন না। আমরা এবার তাদের ভোট দেব না।”