এবার কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ঘটনার প্রতিবাদের ছবি ধরা পড়ল কলকাতায়। শনিবার শহরের রাজপথে দেশের দুই কন্যার পাশে দাঁড়িয়ে সোচ্চার হল এ রাজ্যের শাসকদল। রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও শশী পাঁজার নেতৃত্বে মিছিলে পা মেলালেন তৃণমূলের মহিলা শাখার কর্মীরা। ময়দান থেকে শুরু হওয়া মিছিল যায় ধর্মতলা পর্যন্ত। মিছিলে প্রায় ৬০০ জন মহিলা হেঁটেছেন বলে জানা গেছে।
কাঠুয়া ও উন্নাওের ঘটনাকে হাতিয়ার করে আরও একবার কেন্দ্রকে নিশানা করল তৃণমূল। মোদি সরকারের ‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও’ প্রকল্পকে কটাক্ষ করে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এটা কি ‘বেটি পড়াও, বেটি বাঁচাও’ নাকি ‘বেটি হাটাও’? নরেন্দ্র মোদির কাছে জবাব চাই’’। গোটা দুনিয়া যে এ ঘটনায় লজ্জিত বলেও মন্তব্য করেছেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী।
রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘বার বার এধরনের ঘটনা ঘটছে দেশ। 8 বছরের শিশুকন্যার সঙ্গে যে জঘন্য ঘটনা ঘটেছে, তা লজ্জার।’’ অন্যদিকে উন্নাওের ঘটনা প্রসঙ্গে শশী বলেন, ‘‘অন্য একটি ঘটনায় অভিযুক্তকে আড়াল করতে চাইছে বিজেপি।’’ কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ঘটনার কথা তুলে ধরে, রাজ্যের এই মন্ত্রী বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ রাজ্যের শিশু ও নারীদের জন্য অনেক কিছু করা হচ্ছে। এই ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ করে শশী বলেন, বিজেপি সরকার প্রথমে অভিযুক্তদের বাঁচাতে চেয়েছিল, কিন্তু পরে চাপে পড়ে পদক্ষেপ করেছে। বিজেপি যে এ ঘটনায় সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরির চেষ্টা করছে তারও দাবি করেন শশী পাঁজা।
অন্যদিকে শুধু তৃণমূলই নয়, কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ঘটনায় কলকাতার রাস্তায় প্রতিবাদে শামিল হয়েছে কংগ্রেসও। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়াহাটের ট্র্যাঙ্গুলার পার্কে মিছিল করে কংগ্রেস।
আরও পড়ুন,কাঠুয়া ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায় অভিযুক্তরা শাস্তি পাবে, আশাবাদী রাষ্ট্রসংঘের প্রধান
এদিন কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মতলায় সই সংগ্রহ কর্মসূচি পালন করেন বেশ কয়েকজন সচেতন নাগরিক।
জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ায় দেবালয়ে ৮ বছরের শিশুকন্যাকে আটকে রেখে গণধর্ষণের পর খুন করা হয় বলে অভিযোগ। যে ঘটনা সামনে আসার পরই নিন্দায় মুখর কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ে ১৭ বছরের এক কিশোরীরে ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গার। দীর্ঘ টালবাহানার পর এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশে গত শুক্রবার রাতে কুলদীপকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই দুই ঘটনায় সরব হয়েছে গোটা দেশবাসী।
আরও পড়ুন,কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ঘটনায় সরব নেটিজেনরা
দিল্লিতে ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে মাঝরাতে মোমবাতি মিছিলে হাঁটেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। অন্যদিকে কাঠুয়া ও উন্নাওয়ের ঘটনা নিয়ে নিজের নীরবতা ভেঙেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের মেয়েদের সঙ্গে এ ধরনের অপরাধ লজ্জার বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের যে রেয়াত করা হবে না, সে ব্যাপারে আশ্বাস দেন মোদি। উন্নাওয়ের ঘটনায় তার সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছে সকলেই। এমনকি, সে রাজ্যের হাইকোর্টেও সমালোচিত হয় যোগী প্রশাসন। পরে অবশ্য মোদির সুরে যোগীও বলেছেন , এ ধরনের নিন্দনীয় ঘটনায় অভিযুক্তদের রেয়াত করা হবে না।