অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকেএনআরসি-সিএএ-এনপিআর নিয়ে কোনও কথা হয়নি মমতার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে একথাই জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষে মমতা এদিন বলেন, ‘‘বাংলায় বঞ্চনা হচ্ছে, সে নিয়েই কথা হয়েছে। বৈঠকে দিল্লির ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। তবে সিএএ-এনআরসি-এনপিআর নিয়ে কোনও কথা হয়নি। আইনশৃঙ্খলা নিয়েও কোনও আলোচনা হয়নি’’।
এদিকে, ভুবনেশ্বর বৈঠক ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে বাণ ছুড়েছে বিরোধী কংগ্রেস ও বামেরা। লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, 'দিল্লি যখন জ্বলছে তখন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কোনও নিন্দা শোনা যাচ্ছে না। উল্টে ভুবনেশ্বরে আগে থেকে গিয়ে অমিত শাহের জন্য অপেক্ষা করছেন। আসলে কী খেলা চলছে তা সবাই বুঝতে পারছেন।' বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'দেশ যখন সাম্প্রদায়িকতার আগুনে জ্বলছে তখন এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার কোনও অর্থই নেই।' মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ, 'অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে রাজীব কুমারের জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবর্তে রাজ্যে লুকিয়ে এনপিআর, ডিটেনশন ক্যাম্প হয়েছে। বিনিময়ে সারদা, নারদার তদন্তকারী অফিসারদের সরিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র।'
আরও পড়ুন: শাহর সভায় সম্মতি মমতার পুলিশের
মমতা-শাহ বৈঠক নিয়ে কী বললেন অধীর চৌধুরী? #adhirranjanchowdhury pic.twitter.com/jA64rnp134
— Indian Express Bangla (@ieBangla) February 28, 2020
(ভিডিও- পরাগ মজুমদার)
দিল্লির হিংসা নিয়ে বিরোধীরা অমিত শাহকে তুলোধেনা করলেও সংযত রয়েছেন মমতা। গত বুধবার পুরীর মন্দিরে পুজো দিয়ে শান্তি কমনা করেছেন বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভূবনেশ্বরে শাহের সঙ্গে আলাদা বৈঠকের আগে নতুন করে বিতর্ক বাড়াতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। তাহলে কী বিরোধ ভুলে বরফ গলার ইঙ্গিত?
আরও পড়ুন: অমিত শাহর মন্ত্রকে ‘রিমাইন্ডার’ মমতার
দেশে সিএএ, এনআরসি, এনপিআর বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ তৃণমূল নেত্রী। এই ইস্যুতে মোদী সরকার ও বিজেপিকে কড়া আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। এদিকে, আগামী রবিবারই কলকাতায় সভা রয়েছে বিজেপির 'চাণক্য' অমিত শাহের। বাংলা জয়ের লক্ষ্যে সেই সভাতেও শাহের আক্রমণের কেন্দ্রেই থাকবেন জোড়া-ফুল শিবিরের নেত্রী। তার আগে তাই আজকের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি জাতীয় ও রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত গুরুত্ববাহী। তবে এই প্রথম নয়, মন্ত্রী হওয়ার পর দিল্লিতে গিয়ে এর আগে অমিত শাহকে স্বাগত জানিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। অতীতেও রাজ্য থেকে সিএএ প্রত্যাহার নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দরবারও করেছেন তিনি।
ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের বৈঠক ঘিরে যখন বাম-কংগ্রেসের নিশানায় তৃণমূল। তবে, এদিনের বহু আলোচিত এই সভায় শাহ-মমতার উপস্থিতিকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি ও মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, 'পরে হলেও এই ধরনের বৈঠকের গুরুত্ব বুঝেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের স্বার্থে রাজনীতি ভুলে এইসব বৈঠকে যোগ দেওয়া উচিত।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন