লোকসভা ভোটের আগে মোদী-মমতা সংঘাত আরও বাড়ল। নিউটাউন থেকে মোদীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে মমতা বললেন, ‘‘আজকাল তো ওঁকে মি.রাফাল মাডি নামেই সকলে চেনেন। সকলে ওঁকে জিজ্ঞেস করেন মি. রাফাল মাডি, হাউ আর ইউ?’’ এরপরই রাফাল ইস্যুতে মোদীতে বিঁধে মমতা বলেন, ‘‘ভোটের আগে উনি চাওয়ালা হয়ে যান, আর ভোট মিটলেই রাফালওয়ালা হন। উনি অর্ধেক কথা বলেন, বাকি কথা বলেন না। মিথ্যা কথা বলেন। ওঁর মতো দুর্নীতিগ্রস্ত আগে কেউ জন্মাননি এ দেশে।’’ অন্যদিকে, রাফাল ইস্যুতে তিনি রাহুল গান্ধীর পাশেই রয়েছেন বলে এদিন জানান মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাফাল নিয়ে কিছু তো একটা হয়েইছে।’’
উল্লেখ্য, এদিন ময়নাগুড়ির সভায় মোদী বলেছেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের সঙ্গে আমার হৃদয়ের যোগ রয়েছে। আপনারা চা তোলেন, আমি চা বানাই।’’ এরপরই মোদী বলেন, ‘‘চাওয়ালাকে কীসের এত ভয় দিদির?’’মোদীকে নিশানা করে মমতা আরও বলেন, ‘‘উনি ভয় পেয়েছেন। ২৩-২৪টা দল একজোট হয়েছে। সত্যাগ্রহ নিয়ে ভয় পেয়েছেন বলেই এসব প্রলাপ বকছেন।’’
আরও পড়ুন, মমতাকে ফের নিশানা মোদীর, পাল্টা তোপ তৃণমূলের
এদিন, জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধন নিয়ে মোদীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, ‘‘ওঁকে নিয়ে কথা বলতে আর ভাল লাগে না। লজ্জা লাগে। শূন্য কলসি বড্ড বেশি বাজে। সার্কিট বেঞ্চ হাইকোর্টের, অথচ উদ্বোধনে কেন কোনও হাইকোর্টের বিচারপতিকে দেখা গেল না? কেন রাজ্য সরকারকে বলা হল না? সার্কিট বেঞ্চের জন্য আমরা জমি দিয়েছি। টাকাও দিয়েছি। একটা টাকাও দেয়নি কেন্দ্র। বর-কনে নেই, অথচ ব্যান্ড পার্টি এসেছে, এটা নির্বাচনী ব্যান্ড। এর থেকে বড় লজ্জা আর কিছু নেই।’’ মোদীকে বিঁধে মমতা আরও বলেন, ‘‘গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল! ভোটের সময় রাজনীতি করতে এসেছেন।’’
এ প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, ‘‘এর আগে সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধনের দিন ঠিক করেছিলাম। প্রধান বিচারপতি ও আমার থাকার কথা ছিল। কিছুতেই নোটিফিকেশন দেয়নি কেন্দ্র।’’ উল্লেখ্য, এদিন ময়নাগুড়ির সভা থেকে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন করেন মোদী। এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘সার্কিট বেঞ্চ এতদিন মঞ্জুর করেনি। এবার থেকে আর উত্তরবঙ্গের মানুষকে কলকাতা ছুটতে হবে না।’’
আরও পড়ুন, মোদীকে চরম আক্রমণ করে ধর্না প্রত্যাহার মমতার
অন্যদিকে, এদিন ময়নাগুড়ির সভায় মমতার বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে মোদী বলেন, ‘‘জগাই-মাধাই সরকার চালাচ্ছে, বিদায় দেব আমরা।’’ নমোর এই মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘জগাই-মাধাই-গদাই তো আমার স্লোগান। আমার স্লোগানও টুকলি করছেন আজকাল! জগাই-মাধাই আছে, বিদায় দেব ওঁকে। এমন ভাবে পরাস্ত করব না, আর কোনওদিন ঘুরে তাকাতে পারবেন না। গুজরাতেও জিততে পারবেন না উনি।’’
ময়নাগুড়ির সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ত্রিপুরায় যা হয়েছে, বাংলাতেও তাই হবে।’’ এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘টাকা দিয়ে ত্রিপুরা নিয়েছো, বাংলাকে পারবে না।’’
আরও পড়ুন, ছবি থেকে টাকা নিয়েছি, প্রমাণ করুন: মোদী-শাহকে চ্যালেঞ্জ মমতার
উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন নিয়ে মোদীকে আক্রমণ করে মমতার বক্তব্য,‘‘২০১৬ সালের ভোটের সময় উনি বলেছিলেন ডানকুনিতে ৭টি চা বাগান খুলে দেবেন। আজ পর্যন্ত কি খুলেছেন? চা শ্রমিকদের জন্য কিছু করেননি উনি।’’ অন্যদিকে, এদিন ফোর লেনের ৩১ ডি জাতীয় সড়কের উদ্বোধন করেন মোদী। সে প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘ওই রাস্তা নিয়ে আমি ৫০ বার বৈঠক করেছি। সব এখন ভোটের জন্য করছেন উনি।’’
কেন্দ্রের বাজেট নিয়ে এদিন ফের সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, ‘‘বন্দুক-গায়ের জোর দেখিয়ে বাজেট পেশ করেছে। নতুন সরকার এলে ফের নতুন করে বাজেট পেশ করা হবে।’’