উত্তরপ্রদেশের পর এবার কর্নাটকে প্রতিনিধি পাঠাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে মেঙ্গালুরুতে গুলিতে নিহত দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেও তা ফিরিয়ে নিয়েছে ইয়েদুরাপ্পা সরকার। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীকে এ ইস্যুতে একহাত নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার সিএএ-র প্রতিবাদে রাজাবাজারে মিছিল শুরুর আগে ইয়েদুরাপ্পার নাম না করে তৃণমূল সুপ্রিমো আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বলেন, ‘‘কর্নাটকের এক বিজেপি নেতা গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। পরে বললেন, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা গুন্ডা বলে সাহায্য করবেন না। আমি ব্যথিত’’। এরপরই মমতার কটাক্ষ, ‘‘আপনাদের হাতে পয়সা না থাকতে পারে। আপনারা প্রতিশ্রুতি না পূরণ করতে পারেন। কিন্তু তৃণমূল গরিব দল হলেও মানুষের পাশে দাঁড়াবে। আমরা গুলিতে নিহতদের পরিবারকে সাহায্যের জন্য প্রতিনিধি পাঠাব’’।
আরও পড়ুন: ‘ভোটার আইডি-রেশন কার্ড লাগবে না’, তাহলে কীভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে? জানালেন দিলীপ ঘোষ
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব আইনের বিক্ষোভে মেঙ্গালুরুতে ‘পুলিশের গুলি’তে নিহতদের পরিজনদের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন ইয়েদুরাপ্পা। বুধবার সেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ কন্নড় জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বদলান ইয়েদুরাপ্পা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। কারণ, অপরাধীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়াটা ক্ষমার অযোগ্য’’। এ প্রসঙ্গে ইয়েদুরাপ্পা আরও বলেন, ‘‘যতক্ষণ না তদন্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে, যতক্ষণ না নিহতদের ভূমিকা স্পষ্ট ভাবে জানা যাচ্ছে, ততক্ষণ আমরা ক্ষতিপূরণের টাকা দেব না’’। ইয়েদুরাপ্পার এহেন মন্তব্যকে হাতিয়ার করে যেভাবে আসরে নামলেন মমতা, তা রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
অন্যদিকে, নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে দেশজুড়ে আন্দোলনের বার্তা দিয়েছেন মমতা। সেই প্রেক্ষিতে গত রবিবার উত্তরপ্রদেশে ৪ প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলেন মমতা। যদিও লখনউ বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয় দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের তৃণমূলের প্রতিনিধি দলকে। এ ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা। এরপর ফের আরেক বিজেপি শাসিত রাজ্য কর্নাটকে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।