আগেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন ২০-মের পর জেলা কমিটিগুলি গঠন করা হবে। এরই মধ্যে এদিন মেদিনীপুরে দলের চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করেছেন দলনেত্রী। জেলার দায়িত্ব কে পাচ্ছেন, ব্লক সভাপতি কারা হচ্ছেন এসব নিয়েই এখন জোরকদমে চর্চা চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরে। জেলা পর্যায়ে মন্ত্রীদের সভাপতি পদ থেকেই আগেই সরানো হয়েছে।
বুধবার মেদিনীপুরে কর্মীসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী এদিন বলেন, 'সমগ্র জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের চেযারম্যান অজিত মাইতি। অজিত মাইতির নামটা ঘোষণা করে যাচ্ছি, এই কারণে তিনি সব ব্লকগুলি নিয়ে কো-অর্ডিনেশন করে কাজ করবেন আগের মতো।' অর্থাৎ জেলা কমিটিগুলির ঘোষণার সূত্রপাত হয়ে গেল এই ভাষণের মধ্য দিয়ে। এদিনই সংগঠন মজবুত করতে কয়েকদফা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা। মানুষের জন্য না করে শুধু নিজের কাজ করলে ঘ্যাঁচাং ফু হবে, এক সেকেন্ডে নাম কেটে দেব বলেও কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।
এর আগে ঘটা করে নেতাজি ইন্ডোরে দলীয় সাংগঠনিক নির্বাচনের মাধ্যমে দলের শীর্ষ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে সমস্ত কমিটি ভেঙে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের জাতীয় কর্মসমিতি সহ দলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু জেলা স্তরে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। তবে ঘোষিত এক ব্যক্তি এক পদ নীতি থেকে সরে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফিরহাদ হাকিমের সাংগঠনিক পদ ছাড়াও তিনি কলকাতার মেয়র-সহ একাধিক দফতরের মন্ত্রী। অর্থাৎ জেলার ক্ষেত্রেও নীতিগত ভাবে সেই অঙ্ক মানা হবে এমন কোনও পরিস্থিতি নেই বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন- নিজাম প্যালেসে অনুব্রত মণ্ডল, তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নমালা তৈরি CBI-এর
জেলা কমিটি নিয়ে তৎপর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, এদিকে বিভিন্ন জেলা থেকে কলকাতায় স্থানীয় নেতৃত্বের দৌঁড়ঝাপ চলছে। কে সভাপতি হবেন, কে ব্লকের দায়িত্ব পাচ্ছেন তা নিয়েই চলছে তদ্বির-তৎপরতা। তারই মধ্যে চলছে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ। এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের তদন্তের মুখোমুখি তিনি। স্বাভাবিক কারণেই তাঁর দলীয় সাংগঠনিক কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
এদিকে জেলায় ফের পর্যবেক্ষক নিয়োগ চাইছেন না স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের দাবি, এই পর্যবেক্ষকদের রিপোর্ট নিয়ে সংশয় থেকে যায়। সেক্ষেত্রে সাংগঠনিক ক্ষতির সমূহ সম্ভাবনা থাকে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব, একসময় পর্যবেক্ষক তুলেই দিয়েছিল, তখন একাধিক জেলার দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও পরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু পুরসভা নির্বাচনের আগে ফের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল পর্যবেক্ষকের ধাঁচেই। এখন তৃণমূলের বিভিন্ন জেলার স্থানীয় নেতা-নেত্রীরা হাপিত্যেশ করে বসে রয়েছেন চাতক পাখির মতো।