বাংলায় এনআরসি করার কোনও প্রয়োজন নেই। আসাম এনআরসিতেও বাদ পড়েছেন বহু বাঙালি এবং গোর্খা, এই বিষয়টা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে প্রথম সাক্ষাতে আজ এ কথাই তিনি বলেছেন বলে বৈঠক শেষে জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, বুধবারই শাহ বলেছিলেন, সারা দেশে এনআরসি করা হবে এবং তালিকাছুটদের দেশ থেকে তাড়ানো হবে। শাহের এই মন্তব্যের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ এবং এনআরসি বিরোধিতার এই দাবি রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে দেশের তামাম রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন- সারাদেশেই এনআরসি হবে, তালিকাছুটদের তাড়াব: অমিত শাহ
Mamata meets @AmitShah. Says no NRC needed in Bengal. Says discussed issue of Bengalis, Gurkhas being left out of NRC in Assam. It is not acceptable. @IndianExpress pic.twitter.com/aJckGo4FMD
— Deeptiman Tiwary (@DeeptimanTY) September 19, 2019
প্রসঙ্গত, বুধবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বহু প্রতীক্ষিত বৈঠকের পর দিল্লির নর্থ ব্লকে এদিন প্রথমবার অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মমতা। এই প্রথম বার মোদী-শাহ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ায় অনেকেই একে 'ঐতিহাসিক' বলে দাবি করেছেন। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটের প্রচারপর্বে মোদী-শাহ যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের নিশানায় রেখেছিলেন এবং মমতাও পাল্টা তোপ দেগে গিয়েছিলেন সেই প্রেক্ষিতে এদিনের বৈঠকে নজর ছিল সব পক্ষেরই। বুধবার মোদীর সঙ্গে বৈঠক শেষে মমতা বলেন, "খুব ভালো বৈঠক হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীকে কয়লা ব্লকের উদ্বোধনে রাজ্যে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি।" আর এদিন শাহের সঙ্গে বৈঠক শেষে মমতা বলেন, "এনআরসি নিয়েই কথা হয়েছে। তবে বাংলার এনআরসি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। আসামের এনআরসির পর ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গেছে। বাংলা ভাষী, হিন্দি ভাষী, গোর্খা সম্প্রদায় এমন বহু মানুষ প্রকৃত ভোটার হওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নাম বাদ গেছে । সেটা নিয়েই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রিকে আমি চিঠি দিয়েছি।"
আরও পড়ুন- দারুণ খুশি মমতা, মোদীকে বাংলায় আমন্ত্রণ মুখ্যমন্ত্রীর
বৈঠক সেরে বেরিয়ে মমতা বিস্তারিতভাবে আরও বলেন, "আমি এর আগেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গেও মিটিং করেছি। এমনিতেই আমার দিল্লিতে কম আসা হয়। আমি কাল নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু এর আগে অমিত শাহের সঙ্গে আমার কথা হয়নি। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হয়। রাজ্যের সঙ্গে একাধিক আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। বাংলা তাই এতো গুরুত্বপূর্ণ। সেই নিয়েই কথা হয়েছে আমাদের। এটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা আমাদের। আমি একটি চিঠি দিয়েছি ওনাকে। আসামে এনআরসি থেকে ১৯ লক্ষ লোকের নাম বাদ গিয়েছে। এর মধ্যে বহু বাংলাভাষীও রয়েছেন। আসল ভোটারদেরও বাদ দেওয়া হয়েছে। এইসব নিয়ে সরকারি চিঠি দিয়েছি। এনআরসি নিয়েই মূলত কথা বলেছি। বাংলায় এনআরসি নিয়ে কোনও কথা হয়নি। কথা বলার পর মনে হয়েছে উনি আমার মন দিয়ে শুনেছেন এবং ইতিবাচক কিছু কাজ করবেন। বাংলার নাম পরিবর্তন নিয়েও মোদীর সঙ্গে কাল কথা বলেছি। ভারতীয়দের নতুন করে পরাধীন হওয়ার দরকার নেই।"