শিবসেনার দলীয় মুখপত্রে শেষবার তাঁর লেখায় ক্ষোভ উগরে দেন শিবসেনা সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। দলের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার করার জন্য কেন্দ্র সরকারকে অভিযুক্ত করেছেন পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনাকে কার্যত 'গণতন্ত্রের মৃত্যু' বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য টানা ৯ ঘণ্টা জেরার পর শিবসেনা সাংসদ তথা দলের মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতকে আটক করল ইডি।
রবিবার সাতসকালেই শিবসেনা নেতার বাড়িতে হানা দেয় ইডির বিশেষ দল। সংবাদ সংস্থা এএনআই এই খবর জানিয়েছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আধিকারিকরা রবিবার সকালে শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতের মুম্বইয়ের বাড়িতে হানা দেন। বেআইনি অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত মামলায় দুবার ইডির নোটিস এড়িয়ে যাওয়াতেই এদিনের সকালের এই অভিযান এমনটাই জানা গিয়েছে ইডি সূত্রে। ম্যারাথন জেরার পর এদিন বিকেলে রাউতকে আটক করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
রাউত তার সাপ্তাহিক কলামে লেখেন, 'কেবল রাজনৈতিক কারণে এই ধরণের সংস্থাকে ব্যবহার করে বিরোধীদের গলা টিপে তাদের হত্যা করা এক ধরণের অন্যায়,ভুল। তিনি উল্লেখ করেন 'গত পাঁচ বছরে শয়ে শয়ে শিল্পপতি দেশ ছেড়েছেন। বিদেশে গিয়ে সেখানে তাঁরা বিনিয়োগ করেছেন। কেবল শাসক শিবিরের ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মানি লন্ডারিং আইনকে সামনে রেখে বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে'।
আরও পড়ুন: <বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়েও ঘুঘুর বাসা? ছবি-সহ অ্যাডমিট ছাড়াই পরীক্ষা, ED-কে নালিশ>
তাঁর কলামে, রাউত আরও অভিযোগ করেছেন 'বিজেপি এমন এক দল যেখানে আজ যাদের বিরুদ্ধে ইডি সিবিআই লাগান হচ্ছে তারাই যদি কাল বিজেপিতে যোগ দেন তবে সঙ্গে সঙ্গে মেলে ক্লিনচিট। এপ্রসঙ্গে ন্যাশানাল হেরাল্ড মামলায় সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীর প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন অনেক বিরোধী নেতা কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার র্যাডারে রয়েছেন। এনসিপি নেতা প্রফুল প্যাটেলও কেন্দ্রীয় এজেন্সির হেনস্থার শিকার হয়েছেন'।
রাউত আরও অভিযোগ করেন যারা উদ্ধব সরকার ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে তাদের অনেকেই ইতিমধ্যেই ক্লিনচিট পেয়ে গিয়েছেন। এখন এই সমস্ত সাংসদ এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে তদন্ত ঠাণ্ডা ঘরে চলে গিয়েছে এটাই আসল দুর্নীতি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নারায়ণ রানের প্রসঙ্গ টেনে এনে রাউত লেখেন, 'ইডি স্ক্যানারে থাকলেও রানে এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী'। প্রতাপ সরনায়েক থেকে যশবন্ত যাদব অনেকের বিরুদ্ধে বিজেপি গুঁটি সাজাতে শুরু করেছিল কিন্তু তাঁরা নিজেদের পিঠ বাঁচাতে একনাথ শিন্ডে শিবিরে যোগ দেন। শিবসেনা নেতা অর্জুন খোটকারের উদাহরণ টেনে রাউত লেখেন 'শনিবার শিন্ডে শিবিরে যোগদানের সময়, খোটকার বলেছিলেন যে বিধায়ক এবং সাংসদরা ইডি থেকে নিজেদের বাঁচাতে শিন্ডে শিবিরে যোগ দিচ্ছেন'। রাউত আরও দাবি করেন যে খোটকার স্বীকার করেছেন যে তিনি চাপের মধ্যে ছিলেন (কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার) এবং সেই কারণেই তিনি বিদ্রোহী শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: <মর্মান্তিক! পিক আপ ভ্যানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ১০ পুন্যার্থীর>
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বুধবার শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতকে তলব করেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য, যদিও সেই তলবে তিনি হাজিরা দেননি বলেই জানিয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। এর আগেও ২০ জুলাই ইডির সমন এড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপরই রবিবার সকালে তাঁর বাড়িতে হাজির হন ইডি আধিকারিকেরা। মুম্বইয়ে পাত্র চাউল নামে একটি আবাসন প্রকল্পে বেআইনি আর্থিক দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে যাওয়ার কারণে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে পড়তে হয় শিবসেনা সাংসদকে।