পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে অবশেষে জট কাটল। কমিশনের ঘোষিত দিন ১৪ মে-তেই পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে এ রাজ্যে। বৃহস্পতিবার একথা ঘোষণা করে দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিন কবে ঘোষণা করা হবে, তা কমিশনকেই ঠিক করতে হবে বলে গতকাল নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আদালত জানায়, নিরাপত্তা নিয়ে কমিশন সন্তুষ্ট হলে, যে কোনও দিন ভোট করাতে পারে কমিশন। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার ই-মনোনয়ন মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় যে, ১৪ মে ভোট করা নিয়ে কোনও বাধা নেই। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই ১৪ তারিখ ভোট হওয়া নিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় রাজ্যবাসী। এরপরই দিনের শেষে কমিশন জানিয়ে দেয় যে ১৪ তারিখই পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে।
আরও পড়ুন, ভোটে অতিরিক্ত হিংসা হলে বেতন কাটা হবে আধিকারিকদের, বাজেয়াপ্ত হতে পারে সম্পত্তিও, জানিয়ে দিল আদালত
অন্যদিকে ভোটে নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে চাঞ্চল্যকর নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের থেকে বেশি সন্ত্রাস হলে, সে ব্যাপারে যাঁরা নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট দিয়েছেন, তাঁরাই দায়ী থাকবেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। ভোটে ক্ষয়ক্ষতি হলে, জীবনহানির মতো ঘটনা ঘটলে আধিকারিকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। আধিকারিকদের বেতন থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এমনকি, বেতনে না হলে, আধিকারিকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিকে পঞ্চায়েত ভোটে যে ৩৪ শতাংশ আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না, সেসব আসনের ফলপ্রকাশ করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এ নিয়ে পরবর্তী শুনানি ৩ জুলাই।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: ই-মনোনয়ন নিয়ে সওয়াল দিলীপের, হিংসা নিয়ে সরব হর্ষ বর্ধন
গতকাল আদালতের রায় প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা চাই, শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হোক।’’ তিনি আরও বলেন যে, তাঁরা গণতন্ত্রের পক্ষেই রয়েছেন।
হাইকোর্টের রায়ে খুশি নন বলে মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘হাইকোর্ট স্বীকার করে নিয়েছে যে ভোটে হিংসা হবে। কিন্তু হিংসার মাপকাঠি কী, তা ব্যাখ্যা করা হয়নি।’’ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে ভোট হোক বলে দাবি করেন বিজেপি নেতা।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: এবার মমতার লেখা নাটকের মাধ্যমে তৃণমূলের অভিনব প্রচার কৌশল
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন যে, আদালতের রায়ে মানুষ খুশি। বিরোধীদের আক্রমণ করে এদিন পার্থ বলেন যে, ভোটকে ৩ বিরোধী বন্ধু বিলম্বিত করছে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন যে, আদালতের নির্দেশ মানা সরকার ও কমিশনের কাজ। আদালতের নির্দেশ মানতে সরকার ও কমিশন ব্যর্থ হলে, তাঁরা যে ফের আদালতের শরণাপন্ন হবেন, সেকথা জানিয়েছেন অধীর।