রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে শুনানিতে নজিরবিহীন নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র নিশ্চিত করতে এদিন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। গতকাল হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য অতিরিক্ত দিন ধার্য করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সোমবারও মনোনয়নপত্র পেশ ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির ঘটনা ঘটে। গতকালও বহু প্রার্থীই মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। এদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের ৯ প্রার্থী বিডিওকে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। সেই মনোনয়নপত্রগুলি নিশ্চিত করতে এদিন বলেছে হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, ওই ৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র নিশ্চিত করা না হলে ফের ভোটপ্রক্রিয়া স্থগিত করা হবে বলে মঙ্গলবার সাফ জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপর্বে হিংসা ঠেকাতে বহুদিন ধরেই অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে। যদিও অনলাইনের মাধ্যমে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের অনুমতি দেয়নি কমিশন। এদিনের হাইকোর্টের রায় তাই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: ফের মনোনয়নপর্বে অশান্তি, সিউড়িতে নিহত ১
এদিন কলকাতা হাইকোর্টে জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র রক্ষা কমিটির নেত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরী বলেন, ‘‘গতকাল আমাদের ৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বিডিওকে হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়েছিলাম। পরে বিডিও হোয়াটস অ্যাপ মারফৎ আমাদের জানান যে, তিনি মনোনয়নমপত্র গ্রহণ করেছেন।’’ তিনি আরও জানান যে, আজ কমিশনের তরফে ওই ৯ প্রার্থীর হোয়াটস অ্যাপে পাঠানো মনোনয়নপত্র গ্রহণের বিডিওর চিঠি হাইকোর্টে পেশ করা হয়। কমিশনের তরফেও জানানো হয় যে, তারাও এই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছে। তবে মনোনয়নপত্র গ্রহণের ব্যাপারে কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে অন্য চোখে দেখছেন শর্মিষ্ঠারা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সব কাগজ ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এখন ওরা বলছে, এই মনোনয়নপত্রগুলো গ্রহণ করেছে। পরে স্ক্রুটিনির সময় বলবে, কোনও বৈধ কাগজ নেই, তাই বাতিল করা হল।’’ শর্মিষ্ঠাদেবী বলেন, হাইকোর্ট জানিয়েছে, ওই মনোনয়নপত্রগুলো নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে দিলীপের হুঙ্কার, ‘‘অনাথ করে দেব’’
অন্যদিকে সোমবার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপর্বে হিংসার জেরে আবারও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বিরোধীরা। শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বাম, কংগ্রেস ও পিডিএস। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি।