অগ্নিপথ নিয়ে এবার ঘরেই প্রবল চাপে বিজেপি। বিশেষ করে বিহারে জোটসঙ্গী জেডি (ইউ) নেতাদের সঙ্গে রীতিমতো বাগযুদ্ধে জড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি কার্যালয়ে ঢুকে বেপরোয়াভাবে ভাঙচুর চালাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। এমনকী খোদ উপ-মুখ্যমন্ত্রী-সহ তাবড় বিজেপি নেতাদের বাড়িতেও হামলা হয়েছে। বিজেপি নেতাদের উপর হামলা ও কার্যালয় ভাঙচুরের পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করছেন গেরুয়া নেতাদের একাংশ।
যদিও জেডিইউ নেতারা অবশ্য এটিকে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছেন। তবে বিতর্ক যাই থাক, রাজ্যে সরকার চালানোর ক্ষেত্রে এই বিতর্ক প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে বিহারে দলের নেতাদের উপর হামলার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন মোদী-শাহেরা। তড়িঘড়ি রজ্যের ১০ গেরুয়া নেতাকে Y ক্যাটাগরির সুরক্ষা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
বিহারের বিজেপি প্রধান সঞ্জয় জয়সওয়ালের অভিযোগ, তাঁদের কার্যালয়ে হামলা হচ্ছে দেখেও পুলিশ বিক্ষোভকারীদের থামায়নি। তাঁর অভিযোগ, এই হামলার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। রাজ্যে জোটসঙ্গী গেরুয়া দলের তোলা এই অভিযোগ উড়িয়েছেন জেডি (ইউ) জাতীয় সভাপতি রাজীব রঞ্জন সিং ওরফে লালন সিং। তিনি পাল্টা বলেন, ''পুলিশ কেন বিজেপির হাতে থাকা অন্য রাজ্যগুলিতেও বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল না সেই প্রশ্নও এখন ওঠা উচিত।''
উল্লেখ্য, দেশের সুরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগের জন্য কেন্দ্রের নতুন প্রকল্প অগ্নিপথের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে দেশের যুব সমাজের একাংশ। রাজ্যে-রাজ্যে চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে বিহারেও। গত বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা বিহারের নওয়াদা, মধুবনি এবং মাধেপুরায় বিজেপি কার্যালয়ে হামলা চালায়।
আরও পড়ুন- ‘দিশাহীন প্রকল্প’, অগ্নিপথ বিতর্কে আগুনে ঘি ঢাললেন সোনিয়া
দলের নেতা সঞ্জয় জয়সওয়াল, উপ-মুখ্যমন্ত্রী রেণু দেবী এবং বিধায়ক সি এন গুপ্তের বাড়িতেও চলে হামলা। এরপরেই বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিহারের বিজেপি নেতা সঞ্জয় জয়সওয়াল এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী রেণুদেবী-সহ রাজ্যের ১০ বিজেপি বিধায়ককে Y ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এদিকে, অগ্নিপথ বিক্ষোভ থামাতে বিহার পুলিশের ভূমিকায় যারপরনাই বিরক্ত বিজেপি নেতা সঞ্জয় জয়সওয়াল। তিনি বলেন, ''বিক্ষোভের সময় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। মাধেপুরায় বিজেপি কার্যালয়ের কাছে প্রায় ৩০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবুও আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুরের সময় পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যখন বিজেপির নওয়াদা অফিস ভাঙচুর করা হয়, সেখানেও পুলিশ ছিল। প্রশাসনের ভূমিকা করুণ। আমরা এর পিছনে ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছি। সেই ষড়যন্ত্রের উন্মোচন করা দরকার।''
আরও পড়ুন- ঘরে-বাইরে চাপ বাড়ছে, ‘অগ্নিপথ’ থেকে হাত গোটাচ্ছে কেন্দ্র? রাহুলের টুইটে জল্পনা তুঙ্গে
যদিও বিজেপি নেতা জয়সওয়ালের বিবৃতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জেডি (ইউ) এর লালন সিং। তাঁর কথায়, ''বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিক্ষোভের মাত্রা দেখে জয়সওয়াল বিরক্ত। তাঁরা একটি সহজ জিনিস বুঝতে পারছেন না। বিজেপি নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে। কারণ, দলটি কেন্দ্রে সরকার পরিচালনা করছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও কেন পুলিশ গুলি চালাতে পারেনি (বিক্ষোভ দমন করতে)? জয়সওয়াল তাঁর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন বলে মনে হচ্ছে।''