Advertisment

রাম বনাম বাংলা, তরজায় সরগরম লোকসভা

পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত গেরুয়া শিবিরের ১৮ জন সদস্য শপথ নেওয়ার সময় প্রতিবারই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে ভেসে এল 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি। তার পাল্টা হিসাবে তৃণমূল সাংসদরা দিলেন 'জয় বাংলা' স্লোগান, কখনও কখনও তার সঙ্গে মিশে গেল জয় মমতা বলে চিৎকারও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বিজেপি সাংসদ রিতি পাঠকের সঙ্গে তৃণমূলের কাকলী ঘোষদস্তিদার

তৃণমূল-বিজেপি-র 'রাম বনাম বাংলা'র সংঘাত এবার পৌঁছে গেল সংসদ কক্ষেও। মঙ্গলবার লোকসভায় সদ্য নির্বাচিত বাংলার সাংসদদের শপথগ্রহণের সময় দু-পক্ষই চিৎকার করে স্লোগান দিলেন। আর এতেই সরগরম হল মঙ্গলবারের লোকসভা।

Advertisment

পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত গেরুয়া শিবিরের ১৮ জন সদস্য শপথ নেওয়ার সময় প্রতিবারই ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে ভেসে এল 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি। বিজেপির এই ধ্বনির পাল্টা হিসাবে তৃণমূল সাংসদরা আবার উচ্চস্বরে বলে গেলেন 'জয় বাংলা', কখনও কখনও তার সঙ্গেই মিশে গেল জয় মমতা ধ্বনিও।

আরও পড়ুন- বেশি ভালবেসে ভুল করেছি, ‘উপলব্ধি’ মমতার

লোকসভা নির্বাচনের পর বাংলার বদলে যাওয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে তৃণমূল 'জয় শ্রীরাম' স্লোগানের মাধ্যমে ধর্মীয় উস্কানি ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে। সম্প্রতি দেখা গিয়েছে, রাজ্যের একাধিক জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে একদল বিজেপি কর্মী 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান দিচ্ছেন। এরপরই রণংদেহী মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে এসে ওই ব্যক্তিদের 'ক্রিমিনাল' এবং 'বহিরাগত' বলে চিহ্নিত করেন। এরপর থেকেই 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। সম্প্রতি, বিজেপির এই ধ্বনির পাল্টা হিসাবে স্বয়ং মমতাই 'জয় হিন্দ' বা 'জয় বাংলা'র মতো স্লোগানকে সামনে এগিয়ে দিয়েছেন।

সব মিলিয়ে বাংলার এই তিক্ত রাজনৈতিক বিরোধিতার রেশ এবার পৌঁছে গেল লোকসভার অধিবেশনেও। এই ঘটনায় দুই দলের স্লোগান সংঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, একাধিকবার স্পিকারকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।

আরও পড়ুন- ‘মমতাকে ধীরে ধীরে ব্যথা দেব’

বাংলা থেকে নির্বাচিত অধিকাংশ বিজেপি সাংসদই বাংলা অথবা স্থানীয় ভাষায় শপথ নিয়েছেন। তবে বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের মতো কয়েকজন শপথ নিয়েছেন সংস্কৃতে।

বিজেপি সাম্প্রতিক অতীতে একাধিকবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ এনেছে। তবে মঙ্গলবার একাধিক তৃণমূল সাংসদ শপথগ্রহণের সময় হিন্দু শ্লোক আবৃত্তি করেন। বারাসতের সাংসদ কাকলী ঘোষদস্তিদার ওয়েলে 'জয় মা কালী' স্লোগানও দেন। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যায় সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণ করতে। এদিন কল্যাণ বলেন, "সংস্কৃত শ্লোক নিয়ে আমি বিজেপি সাংসদদের প্রতিযোগিতায় আহ্বান করছি। আমি ওঁদের প্রত্যেককে হারাতে পারব"। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই(এম)-সহ একাধিক বাম দলগুলির দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, এ রাজ্যে বিজেপি ও তৃণমূল প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিতে নেমেছে।

আরও পড়ুন- তৃণমূলের ফের ধাক্কা, বিজেপিতে যোগ দিলেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক-সহ এক ডজন কাউন্সিলর

লোকসভার এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তিনি হিন্দিতে শপথ নেওয়ায় বিজেপি সাংসদদের কটাক্ষের মুখে পড়েন। গেরুয়া শিবিরের টিপ্পনীর পাল্টা অপরূপা বলেন, "হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা। আপনারা কি এটাও জানেন না!" এদিন কাকলী জানান, নারী ক্ষমতায়নের পক্ষে সওয়াল করায় সনিয়া গান্ধি তাঁর প্রশংসা করেছেন।

লক্ষ্যনীয়ভাবে বাংলার থেকে বিজেপি-র নবনির্বাচিত সাংসদদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হাততালি পেয়েছেন ব্যারাকপুরের অর্জুন সিং এবং বিষ্ণুপুরের সৌমিত্র খান। সৌমিত্র ২০১৪ সালে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন। তৃণমূলের 'জয় বাংলা' স্লোগানের উত্তরে অর্জুন এদিন অভিযোগ করেন, মমতা বাংলায় দুর্গাপুজো করতে দিচ্ছেন না।

Read the full story in English

tmc bjp Mamata Banerjee All India Trinamool Congress
Advertisment