ভবিষ্যতে অন্য দলে যাবেন কি যাবেন না তা সময় বলবে। তবে মেয়র পদ খোয়ালেও, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দিলেও তিনি যে এখনও তৃণমূলেই আছেন সেকথা আবারও জানিয়ে দিলেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত।
দলকে বারবার বিড়ম্বনায় ফেলা। 'ভারত মাতাকি জয়' বলা। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের বৈঠকে গিয়ে দলের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগা। বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে পরামর্শ। বিধাননগরের মেয়র পদের অনাস্থা নোটিসের মামলায় আদালতে জয়ের পর মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দেওয়া 'বিশ্বাসঘাতক' তকমা। বিজেপিতে যোগদানের বিস্তর জল্পনা। সর্বোপরি ২১ জুলাই শহিদ দিবসে গড়হাজিরা। একের পর এক ঘটনা। তবু রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তর বক্তব্য, "আমি তৃণমূল কংগ্রেসেই আছি। দল যদি বের করে দেয়, তাহলে আলাদা কথা। এখনও আমি তৃণমূলেরই কাউন্সিলর।"
আরও পড়ুন- দুঃস্বপ্ন দেখে রাম থেকে দূরে মদন!
সম্প্রতি সল্টলেকে বিদ্যুৎ দফতরে কর্মচারী সংগঠনের বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওই সংগঠনের সভাপতি তথা তৎকালীন বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের বেতন না বাড়ানোয় তিনি কড়া সমালোচনা করেছিলেন রাজ্য সরকারের। সূত্রের খবর, এরপরই খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামান এবং দল তড়িঘড়ি সব্যসাচীকে মেয়র পদ থেকে হঠাতে আসরে নেমে পড়ে। মেয়র ছাড়াই বিধাননগরের অন্যান্য কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূলের তরফে কাউন্সিলরদের নেতা ফিরহাদ হাকিম। কালক্রমে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে দল। সেই অনাস্থা প্রস্তাবের তলবি চিঠির বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সব্যসাচী এবং আদালতের রায়ে স্বস্তিও মেলে তাঁর। এরপর নিজে হতেই মেয়র পদে ইস্তফা দেন তিনি। তবে এতকিছুর পরও মঙ্গলবার বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের ১০ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার কথা রাজ্য সরকার ঘোষণা করার পর তাঁর দাবি যে ন্যায্য ছিল সেকথাই এদিন মনে করিয়ে দেন বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র।
সব্যসাচীর বক্তব্য, "নৈতিক জয় হয়েছে। যে কারণে আন্দোলন শুরু করেছিলাম। কাল অন্তত শ্রমিক কর্মচারীদের মুখে গঙ্গাজল দেওয়া হয়েছে। ১০ শতাংশ ডিএ সরকার মেনে নিয়েছে। সরকারের ভূমিকায় প্রমাণ হল, আমাদের দাবি ন্যায্য ছিল। বলবার 'স্টাইল' ঠিক থাকতে পারে, নাও থাকতে পারে। ভাষা প্রয়োগটা মধুর না হয়ে রূঢ় হতে পারে। কিন্তু ভাষার সারমর্ম যে ন্যায্য ছিল এটা তার প্রমাণ।"
আরও পড়ুন- একুশে জুলাইয়ের পাল্টা? অগাস্টে কলকাতায় অমিত শাহের সভা
সব্যসাচী দত্তর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা রয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। তৃণমূলে থেকেও একাধিকবার মুকুল রায়ের পরামর্শ নেওয়া। এমনকী ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসেও হাজির হননি সব্যসাচী, তা নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে দলের অভ্যন্তরে। এ প্রসঙ্গে তিনি কী বলছেন? প্রাক্তন মেয়র বলেন, "২১ জুলাই শারীরিক অসুস্থতার (পেটের সমস্যা) জন্য যেতে পারিনি। আমি তৃণমূলের প্রতীকে জিতেছি। এখনও তৃণমূলেরই কাউন্সিলরই আছি।"