/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2021/10/shantipur-bupoll-2021-cpim-soumen-mahato.jpg)
প্রচারে শান্তিপুর উপনির্বাচনের সিপিআইএম প্রার্থী সৌমেন মাহাতো।
২০০৬ বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় সর্বাধিক আসন পেয়ে ক্ষমতাসীন হয় বামেরা। ২০১১-তে ক্ষমতা থেকে বিদায়। সংসদীয় রাজনীতিতে এরাজ্যে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে শূন্যের সূত্রপাত। ২০২১ নির্বাচনেও শূন্য। এতদ সত্বেও এবার শান্তিপুরের উপনির্বাচনে আশার আলো দেখছে সিপিএম। লড়াইয়ের ময়দানে টিকে থাকা নয়, একেবারে জয়ের আশা দেখছে সিপিএম।
রাণাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার পদত্যাগ করায় ৩০ অক্টোবর উপনির্বাচন শান্তিপুরে। ময়দানে বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে সিপিএমও। শান্তিপুর পুর এলাকায় প্রবেশমাত্রই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচার জানান দেবে ভোট দোরগোড়ায়। তিনবারের কাউন্সিলর সৌমেন মাহাতোকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে এরাজ্যে সিপিএমের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শান্তিপুরের সিপিএম প্রার্থী বছর ছেচল্লিশের সৌমেন জয় নিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
সাধারণত নির্বাচনে সাংগঠনিক দিক একটা বড় ফ্যাক্টর। যে কোনও কারণেই হোক ভোটের দিন বিরোধী দল সব বুথে এজেন্ট দিতে পারবে কীনা সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়। সব বুথে এজেন্ট দিতে পারবেন? এই প্রশ্নের জবাবে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সৌমেন বলেন, 'এজেন্টের কথা কী বলছেন, আমরা জিতবো বলছি তো। এটা জেতার লড়াই। তৃণমূল-বিজেপি, সেকেন্ড-থার্ড পজিশন নিয়ে লড়াই করছে। আমরা এক নম্বরের দৌড়ে আছি। যদিও তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী সিপিএমের এই দাবি হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। সিপিএম প্রার্থীর জামানত থাকবে কিনা তা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন-পদ্ম ছেড়ে তৃণমূলে আরও এক বিধায়ক, কমতে কমতে বিজেপি এখন ৭০
আরও পড়ুন-‘রাজ্যের মন্ত্রী দল ভাঙনে লিপ্ত’, বিজেপি বিধায়কের তৃণমূল যোগে খোঁচা শমীকের
সাম্প্রতিক বাংলাদেশের দুর্গাপুজো ও হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনাও এবার শান্তিপুরের উপনির্বাচনে ইস্যু করেছে বিজেপি। তাঁতিদের পাশে থাকার কথা বলছে তৃণমূল কংগ্রেস। এছাড়া একাধিক স্থানীয় ইস্যু রয়েছে। সিপিএম প্রার্থীর বক্তব্য, 'বিজেপি বাংলাদেশ ইস্যু তুলে ধরছে কারণ ওদের কাছে তো কোনও ইস্যু নেই। ওরা কখনও পাকিস্তান, কখনও কুমিল্লা নিয়ে নেমে পড়ে। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে জনগণের পাশে আছি। মানুষের দাবি নিয়ে লড়াই করেছি। তাঁত শ্রমিকদের ইস্যু, তাঁত শিল্পের দুর্দশার কারণে এই শিল্প ছেড়ে ভিন্ন পেশায় চলে যাচ্ছেন মানুষজন, শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা, গঙ্গাভাঙন, উন্নয়নের ইস্যু, স্বাস্থ্য পরিষেবা, জলনিকাশীর সমস্যা এসব নিয়ে আমরা ধারাবাহিক ভাবে লড়াই করেছি। এছাড়া পুরসভা ও পঞ্চায়েতে দুর্নীতি, কাটমানির বিষয়গুলো তুলে ধরছি মানুষের কাছে।'
স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পরেশ শীলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কী বুঝছেন এবারের উপনির্বাচনে। জবাবে তাঁর কথা শুনে চমকে যাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। নিজেকে অরাজনৈতিক দাবি করা পরেশবাবুর বক্তব্য, 'এই উপনির্বাচনে সিপিএম ভাল ফল করবে। জিততেও পারে।' রাজ্যে সাম্প্রতিক তিন আসনের উপনির্বাচনে জামানত বজায় রাখা দূরের কথা সিপিএমের ভোটপ্রাপ্তির সঙ্গে নোটার তুলনা করেছে রাজনৈতিক মহল। হাসি-ঠাট্টাও কম হয়নি। পরেশবাবুর মতোই টোটোচালক, ভ্যানচালকদের একটা অংশ বলছেন, সিপিএম এখানে ভাল ভোট পাবে। তাঁদের বক্তব্য, 'বিপদে-আপদে সিপিএম প্রার্থী মানুষের পাশে থাকেন।' সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশের সমর্থন পেতে পারেন সৌমেন। এমনটাও বলছেন কেউ কেউ।
এখানে দলের জনভিত্তি ও যোগাযোগ অন্যতম ভরসা বলে দাবি করেছেন সিপিএম প্রার্থী। তাঁর কথায়, '২০১৬ সালে জোটের প্রার্থী কংগ্রেসকে বিধায়ক নির্বাচিত করায় মুখ্য ভূমিকা ছিল সিপিআইএমের। ২০২১ সালে এই আসনে লড়তে চেয়েছিল সিপিএম, জোট ধর্মের কারণে আসন ছাড়তে হয়। গত লোকসভা ও বিধানসভায় ধর্মের ভিত্তিতে ভোট হয়ে গিয়েছে। এবছর বামফ্রণ্টের সিপিএম প্রার্থী হয়েছে। দীর্ঘ দিন পরে সিপিএম থেকে প্রার্থী হওয়ায় দলীয় কর্মীরা উদ্বুদ্ধ হয়েছে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ও জনভিত্তির কারণে আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত এই আসনে আমরা জয় পাব। মানুষের সাড়ায় তা দেখতে পাচ্ছি।'
আরও পড়ুন-বিজেপি ছাড়লেন বাবু মাস্টার, বললেন ‘জীবদ্দশায় আর এই দল করব না’
আরও পড়ুন-গ্রেফতার করা হোক শুভেন্দুকে, আড়িপাতাকাণ্ডে বিস্ফোরক দাবি কুণালের
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন