কলকাতা পুরসভায় দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়াই করেছিলেন বেশ কয়েকজন। তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে তিন নির্দল জয়ীও হয়েছেন। জয়ী নির্দলরা ইচ্ছাপ্রকাশ করলেও দল এখনই তাঁদের নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিলিগুড়ি পৌর নির্বাচনেও কয়েকজন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াইয়ের ময়দানে থেকে গেলেন। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ২ বারের কাউন্সিলর নিখিল সাহানি। যদিও দল নির্দল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা পরপর দুবারের তৃণমূল কাউন্সিলার নিখিল সাহানি। নিখিল সাহানি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও নির্দল হয়েই এবারের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করবেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা বিকাশ সরকার, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেত্রী মল্লিকা দেবনাথ। যে সব তৃণমূলের নেতা দলের বিরুদ্ধে গিয়ে শিলিগুড়ি পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
শিলিগুড়ি পৌর নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় প্রকাশ্যেই বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূলের একাংশ। তৃণমূল কর্মীদের প্রকাশ্যেই দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, পথ অবরোধ করতে দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ির ১৮ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে। বিক্ষোভ হয়েছে শিলিগুড়ির ১, ৩৯ ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডেও। টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের পরপর দুবারের তৃণমূল কাউন্সিলর নিখিল সাহানি, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের যুব নেতা বিকাশ সরকার, ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুম ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেত্রী মল্লিকা দেবনাথ। এই চারটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের নেতারা নির্দল হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই বিপাকে পড়ে যায় তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপর থেকেই বিক্ষুব্ধ নেতাদের মানভঞ্জনে আসরে নামে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাকে বশে আনতে পারলেও বাকি তিন বিক্ষুব্ধ নেতা নির্দল হয়েই লড়ছেন শিলিগুড়ি পৌর নির্বাচনে।
আরও পড়ুন ভ্রাতৃবধূর করোনা সত্ত্বেও ভাই ঘুরছেন বাইরে, বাবুনের ‘কাণ্ডজ্ঞান’ নিয়ে ক্ষুব্ধ মমতা
বৃহস্পতিবার ছিল শিলিগুড়িতে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন সকালে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেন ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা নিখিল সাহানি। মনোনয়ন প্রত্যাহার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিখিল সাহানি বলেন, 'আমি দলেই আছি। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় এলাকাবাসীর আবেদনে আবেগতাড়িত হয়ে নির্দল হয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বের অনুরোধে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছি। দল যে প্রার্থীকে ওয়ার্ডে টিকিট দিয়েছে তাঁর হয়েই লড়াইয়ে সামিল হব।'
নিখিল সাহানির মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার প্রসঙ্গে গৌতম দেব বলেন, 'নিখিল দলের প্রতি অভিমান করে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন। ও খুব ভাল ছেলে, তৃণমূলের একনিষ্ট কর্মী। আমি অবিভাবকের মতোন তাঁকে বুঝিয়েছি। সে বুঝেছে। তাই নিজের অভিমান, আবেগকে সরিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।'