এবার মুকুল রায়কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বেঁধে দিলেন নির্দিষ্ট সময়সীমা। তার মধ্যেই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা না দিলে তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শুভেন্দু। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপের কথাও বলেছেন বিরোধী দলনেতা।
কী বলেছেন শুভেন্দু?
একুশের ভোটে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা থেকে পদ্ম পতাকা চিহ্নে জয় পেয়েছেন মুকুল রায়। কিন্তু, গত শুক্রবারই আচমকাই পদ্মফুল ছেড়ে ঘাস-ফুলে নাম লিখিয়েছেন মুকুল। কিন্তু, দলত্যাগের আগে বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেননি তিনি। যা নিয়েই সরব গেরুয়া শিবির। এই ইস্যুতেই সোচ্চার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বাংলায় কেন দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা। অবিলম্বে এ রাজ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগুর জন্য দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দুবাবু।
রীতিমতো হুমকির সুরে তিনি বলেছিলেন যে, 'মুকুল রায়কে দিয়ে যা শুরু হল, তা দলত্যাগ বিরোধী আইন মেনে হয়নি। দু’মাস হোক, তিন মাস হোক, বিরোধী দলনেতা হিসেবে বাংলায় এই আইন কার্যকর করেই ছাড়ব আমি।' এ নিয়ে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা প্রসঙ্গে মুকুল রায় রবিবারই জানিয়েছেন, এবিষয়ে তাঁর বর্তমান দলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন- ‘দলে নবাগতদের সকলে ট্রোজান হর্স নয়’, তথাগতর উল্টোসুর স্বপণের
তবে, মুকুল রায়কে সময় দিতে নারাজ শুভেন্দু। সোমবার দলীয় বিধায়কদের নিয়ে রাজভবনে রাজ্যপালের সহ্গে সাক্ষাৎ করেন বিরোধী দলনেতা। সরব হন বাংলায় ভোট পরবরতী হিংসা নিয়ে। তারপর রাজভবনের বাইরে সাংবাদিকদের বিরোধী দলনেতা বলেছেন, 'দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুসারে মুকুল রায়কে পদত্যাগ করতেই হবে। আমি ওনাকে ২৪ ঘন্টা সময় দিচ্ছি। না হলে বিধানসভার অধ্যক্ষের দ্বারস্থ হব। তাতে কাজ না হলে আইনি পদক্ষেপ করবো।'
দলত্যাগ বিরোধী আইন রাজ্যে কার্যকরের জন্য এ দিন রাজ্যপালের কাছেও আর্জি জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য বিজেপি বিধায়করা। কংগ্রেসের বিধায়ক তৃণমূলের খাতায়, সিপিএমের বিধায়কও তৃণমূলের খাতায়। গত ১০ বছরে বাংলায় এর উদাহরণ প্রচুর। কিন্তু কোনও দলবদলুর বিধায়কের ক্ষেত্রেই দলত্যাগ আইন প্রযোজ্য হয়নি। কেন? জবাবে শুভেন্দু অধিকারী চড়া সুরে বলেছেন, 'অতীতে পদ্ধতি মেনে দলত্যাগ আইন প্রয়োগের আবেদন করা হয়েছিল কিনা তা জানি না। তবে, বিজেপি করবে। আমরা কোমর বেঁধে নেমেছি। গত ১০ বছরের সঙ্গে বাংলায় বর্তমান বিজেপিকে এক করে ফেললে হবে না। আমরা বুধবারই অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করবো।'
আরও পড়ুন- Suvendu Adhikari: ত্রিপল চুরি মামলায় অস্বস্তিতে শুভেন্দু-সৌমেন্দু, এখনই হস্তক্ষেপে ‘না’ হাইকোর্টের
শুভেন্দু অধিকারী দলত্যাগ আইনে বিধায়ক পদ খারিজ প্রসঙ্গে দিল্লি, মণিপুর ও উত্তরাখণ্ডের উদাহরণ তুলে ধরেছেন। তাঁকে অনুসরণ করে দলবদলের সময় মুকুল রায় বিধায়ক পদ ত্যাগ করে তৃণমূলে গেলে তা সম্মানের হত বলে জানান বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জের পর বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা, নাকি সংঘাতের পথ বাছবেন মুকুল রায়? রাজ্য রাজ্যনীতিতে এখন এ নিয়েই জোর চর্চা চলছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন