আর কয়েক ঘন্টা পরেই শহরে তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ। উনিশে মোদী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ব্রিগেড থেকে হুঙ্কার দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা একা নন, মোদী-শাহদের বিরুদ্ধে সরব হবেন দেশের একাধিক বিজেপি বিরোধী নেতা। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের এই হেভিওয়েট সমাবেশ উপলক্ষে শহরের নিরাপত্তা ও যান চলাচলের নিয়মাবলী ঢেলে সাজাল লালবাজার। অনুষ্ঠান চলাকালীন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন খোদ নগরপাল রাজীব কুমার। তবে কাল থেকেই শহরকে নিরাপত্তার বেড়াজালে মুড়ে ফেলছে কলকাতা পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশ সমেত শহরে মোতায়েন থাকছেন প্রায় ১০,০০০ পুলিশকর্মী।
সূত্রের খবর, ৫০ লক্ষ মানুষের সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা ব্রিগেডে। এই সংখ্যা অতিরঞ্জিত হতে পারে, কিন্তু জনসমাগম যে বিপুল সংখ্যায় হবে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। মাঠে ঢোকার জন্য সাতটা প্রবেশপথ করা হচ্ছে। কোন মিছিল কোন প্রবেশ পথ দিয়ে ঢুকবে, তা নির্ধারিত করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত করে দেওয়া হচ্ছে তিনটি স্থান। কলকাতার দিক থেকে আসা সব গাড়ি পার্ক করা হবে গণেশ অ্যাভিনিউ-তে। দক্ষিণ কলকাতার দিক থেকে আসা গাড়িগুলির জন্য নির্ধারিত পার্কিং লট খিদিরপুর ও হাজরা মোড়। হাওড়া থেকে আসা গাড়িগুলির জন্য কোণা এক্সপ্রেসওয়েতে থাকছে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন, ১৯ জানুয়ারি ব্রিগেডে মমতার পাশে কে কে আছেন?
লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে, শুক্রবার থেকেই শহরের রাস্তায় নেমেছেন ডিসি পদমর্যাদার অফিসাররা। পাশাপাশি আছেন এসি পদমর্যাদার আধিকারিকরা। শুক্রবার শহরে এলাকা ভিত্তিক ২৪ টি পিকেট করা হয়। শুক্রবার রাতেও শহরের রাস্তায় নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিকরা। আজ, শনিবার, নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। সভাস্থলে উপস্থিত থাকবেন ১৮ জন ডিসি। ২৯ জন এসি সহ বিশাল পুলিশবাহিনীও থাকবে। মঞ্চের বাইরে সাদা পোশাকে থাকবেন কমপক্ষে ১,০০০ জন পুলিশকর্মী। এছাড়া এসটিএফ এবং গুন্ডাদমন শাখার কর্মীরা থাকবেন।
সকাল ৯ টার মধ্যে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল বেরোবে বলে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে। হাওড়া, শিয়ালদহ থেকে মিছিল আসবে। হাওড়া থেকে ব্রেবোর্ন রোড হয়ে মিছিল ঢুকবে শহরে। শিয়ালদহ থেকে ডাফরিন রোড ধরে মিছিল আসবে শহরের পথে। সেইসঙ্গে খিদিরপুর থেকেও একটি বড় মিছিল আসবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। দক্ষিণ কলকাতা থেকে মিছিল আসবে জওহরলাল নেহরু রোড ধরে। শ্যামবাজার থেকে মিছিল আসবে বিধান সরণি, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ হয়ে। কাজেই শহরের যান চলাচল বেহাল হয়ে পড়ার পূর্ণ সম্ভাবনা।
সমাবেশ উপলক্ষে শহরে যত্রতত্র পার্কিং করা যাবে না। নির্দিষ্ট পার্কিং জোন করা হচ্ছে। জেলা থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের জন্য আলাদা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সমস্ত দর্শনার্থীকে নর্থ গেট দিয়ে প্রবেশ করানো হবে। ব্রিগেড সমাবেশে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ৮০ টির মতো ডাস্টবিন রাখা থাকছে।
আরও পড়ুন, মমতার ব্রিগেডে আসছেন স্ট্যালিন
ভিড় সামলাতে শনিবার নির্দিষ্ট সময়ের আগেই খোলা হচ্ছে আলিপুর চিড়িয়াখানা। সকাল ৮ টা থেকে সাড়ে ৮ টার মধ্যে চিড়িয়াখানা খোলা হবে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন অধিকর্তা আশিস সামন্ত। তিনি বলেন, "একটু আগে খোলা হবে, ৮ টা থেকে সাড়ে ৮ টার মধ্যে। তবে পরিস্থিতি দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
তৃণমূলের ব্রিগেড সভায় আসছেন বাইরের রাজ্যের হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের সকলের জন্য আলাদা গেট করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ভিআইপিদের জন্য হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা থাকছে। প্রাক্তন মন্ত্রীদের জন্যও থাকছে আলাদা ব্যবস্থা। যাঁরা জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান, তাঁদের জন্য থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা। বিভিন্ন রাজ্যের হেভিওয়েটদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে শহরের দুই পাঁচতারা হোটেলে।