Martyrs Day Rally 2019 Mamata Banerjee Speech: লোকসভা নির্বাচনের ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোই এখন চ্যালেঞ্জ মমতা বাহিনীর। আর সেই লক্ষ্যে স্থির রেখেই একুশের মঞ্চে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দলের উপর আস্থা রাখার বার্তা দিলেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায় শোনা গেল, ‘‘তৃণমূল যাওয়ার দল নয়, আসার দল’’। পাশাপাশি এই মুহূর্তে তৃণমূলের ‘সবচেয়ে বড় শত্রু’ বিজেপিকে রুখতে একগুচ্ছ কর্মসূচির ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাটমানির পাল্টা কালো টাকা ফেরানোর যেমন ডাক দিলেন তৃণমূলনেত্রী, তেমনই লোকসভা নির্বাচনে ইভিএমে কারচুপি করেই বিজেপি জিতেছে বলে ফের আওয়াজ তুলে মমতার স্লোগান, ‘‘ফিরিয়ে দাও ব্যালট পেপার’’। একইসঙ্গে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে কংগ্রেস-সিপিএমকে ফের লড়াইয়ে আহ্বান জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
Kolkata Martyrs Day Rally 2019: একুশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কী কী বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? জেনে নিন একনজরে...
* কাটমানির পাল্টা কালো টাকা ফেরত দাও। নোটবন্দির পর ফিরিয়ে দাও কালো টাকা। ব্লকে ব্লকে, অঞ্চলে অঞ্চলে কালো টাকা ফেরত দাও। চোরেদের সরকার, তারা আবার বলছে তৃণমূল কাটমানি ফেরত দাও। নির্বাচনে কত টাকা নিয়েছো? গ্রামে গ্রামে গিয়ে বলবেন, উজ্জ্বলার কাটমানি ফেরত দাও। আমি একটা মহৎ উদ্দেশ্যে কাটমানি ফেরতের কথা বলেছি, আর বিজেপির সর্দাররা বলছে টাকা ফেরৎ দাও। ৩৪ বছর ধরে কত টাকা ফিরিয়েছে সিপিএম? ২৬, ২৭ তারিখ কালো টাকা ফেরাতে ব্লকে ব্লকে কর্মসূচি করা হবে।
* যা বলেছিল, সেই নম্বরই পেয়েছে লোকসভা ভোটে। কখনও ভেবেছেন একথা? আমরা কমিশনকে বলেছি পঞ্চায়েত ভোট, পুরভোট ব্যালটে হতে হবে। আমেরিকা, ইংল্যান্ডে কেন হয় না ইভিএমে ভোট? ইভিএম চাই না, ব্যালট ফেরানো হোক।
আরও পড়ুন: TMC Martyrs Day Rally Live Updates: কাটমানির পাল্টা কালো টাকা ফেরানোর ডাক দিলেন মমতা
* কংগ্রেস ও সিপিএমকে বলব, যে ডালে বসে আছো, সেই ডাল না কেটে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করো। আমাদের সমর্থন কোরো না। চাই না তোমাদের সমর্থন।
* বিজেপিকে ভোট দিলে কী হয়? ভাটপাড়া হয়। দেখেছেন ২ মাস ধরে স্কুল-কলেজ, বাজার বন্ধ। তৃণমূল ৮ বছরে ছিল এরকম আগে কখনও হয়নি। কোনও শিল্পীকে বয়কট করা হয়নি। ৩৪ বছর ধরে যারা ছিল, তাদেরও গায়ে হাত দিইনি। আমরা বলেছিলাম বদল চাই, বদলা নয়। ২০০৯ সালে আমরা ২৬টি আসন পেয়েছিলাম, তোমরা তো ১৮টি পেয়েছো, তবুও কারও গায়ে হাত দিইনি। বিজেপি আগে ৩৪ বছর লড়াই করো তারপর বাংলার ক্ষমতা নিয়ে ভাববে।
* টেলি অভিনেত্রী অঞ্জনা বসুর নাম নিয়ে মমতা এদিন বলেন, ‘‘অঞ্জনা কতবার যোগ করেছেন? একটা লোককে নিয়ে তিনবার যোগদান করাচ্ছেন। তোর যদি লোক না থাকে ধার চেয়ে নে। আমি দিয়ে দেব। ওঁর (অঞ্জনা) প্রতি ঘৃণা নেই। ২ জনও যাচ্ছে না, বাড়ির সামনে প্যান্ডেল করে ২ হাজার লোক গিয়েছে বলে প্রচার করছে। ক’দিন গেল, আবার উল্টোরথ হয়ে গেল। একজন বিধায়ককে বললাম, তুমি নাকি চলে গেছো? কত দিয়েছিল? বলল, দিতে চেয়েছিল, ২ কোটি টাকা , একটা পেট্রোল পাম্প। দরাদরি চলছে নাকি। এগুলো যারা বলবে, তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে’’। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে দিল্লিতে মুকুল রায়ের বাসভবনে জড়ো হয়েছিলেন একঝাঁক তৃণমূল কাউন্সিলর। রীতিমতো প্যান্ডেল করে মুকুলের বাড়ির সামনে মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেদিনই মুকুলের হাত ধরে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেন। হালিশহর, কাঁচরাপাড়া-সহ বেশ কিছু পুরসভা তাঁদের দখলে বলে দাবি করে বিজেপি। এর কিছুদিনের মধ্যেই সেসব পুরসভা ‘পুনরুদ্ধার’ করে বলে পাল্টা দাবি করেছে শাসক শিবির।
আরও পড়ুন: একুশের সমাবেশে হাজির টলি বিগ্রেড, কে কে গেলেন মমতার মঞ্চে?
* শতাব্দী, প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণাকে ডেকেছে ইডি। ডেকেই বলছে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করো। না যোগাযোগ করলে তাপস পাল হতে হবে, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় হতে হবে। আমার কাছে প্রমাণ রয়েছে।
* ৯ অগাস্ট বিজেপি বাংলা ছাড়ো আন্দোলন।
* ২৯ জুলাই বড় কর্মসূচি ঘোষণা করব। ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে সেই কর্মসূচি পালন করা হবে।
* তৃণমূল যাওয়ার দল নয়, আসার দল। যাঁরা বেইমানি করবেন, তাঁদের চিহ্নিত করুন। আবার জেলায় জেলায় যাব ২৬ তারিখের পর।
আরও পড়ুন: ‘সুন্দর সমাধান হয়েছে’, ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে বললেন ঋতুপর্ণা
* জনসংযোগ বাড়ান। রাস্তায় বেরোন। ঘরে বসে রাজনীতি হয় না। টাকা নিয়ে যাঁরা বেইমানি করছেন, তাঁদের চিহ্নিত করুন। কেউ ভুল বুঝলে ভাল করে বোঝান।
* তৃণমূল একটা বার্ষিক সভা করছে ২৬ বছর ধরে। আপনাদের নেতা বলছেন বাস থেকে নামাবেন। আপনারা তৈরি থাকুন। আগামী দিনে মিটিং-মিছিল করবেন তো? এর পাল্টা যদি আমরা দিই, পারবেন তো রুখতে?’’ উল্লেখ্য, শনিবারই দিলীপ ঘোষ বলেনযে যেসব নেতারা শহিদ দিবসে কলকাতায় আসবেন তাঁদের রাস্তায় আটকে আগে কাটমানি চাইব। দিলীপের সেই বক্তব্যকে নিশানা করে এদিন পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা।
* কেন্দ্রীয় সরকারের সমান যাঁরা বেতন পান, তাঁরা কেন্দ্রে চলে যান। পে কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়লে সরকারি কর্মীদের জন্য সাধ্যমতো করব।
* অনেক জায়গায় ট্রেন বন্ধ করে দিয়েছে। বিজেপি ভাবছে, সরকারে আছে, ট্রেন ওদের অধীনে। যেখানে যেখানে আজ বাস থেকে টেনে নামানো হয়েছে আমাদের কর্মীদের, সেখানে কাল পাল্টা মিছিল হবে।
* রেড রোডটাই মনে হচ্ছে ২-৩ লক্ষ লোক দাঁড়িয়ে রয়েছে। মনে হচ্ছে যেন আরেকটা ব্রিগেড হচ্ছে’’।
* গদ্দাররা আপনাকে গদ্দারে পরিণত করবেন, মনে রাখবেন টাকা মাটি, মাটি টাকা।
অন্যদিকে, এদিন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একুশের ভোটে আড়াইশোর বেশি আসন পেয়ে ওদের (বিজেপি) বরবাদ করে তৃতীয় বার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’’। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বিজেপির শাসনে দেশে অচ্ছে দিন আসেনি। দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে বিজেপি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দালাল হয়ে গেছে’’। বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও।