আই প্যাকের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে। খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের মেসেজও নাকি প্রকাশ্যে চলে আসে! দলের অন্য শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আই প্যাকের সম্পর্কের অবনতি নিয়েও নানা গুঞ্জন চলছে। কিন্তু আই প্যাকের সঙ্গে নতুন চুক্তি হয়েছিল বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর, তা ভেস্তে যাওয়ার কোনও কারণ দেখছে না রাজনৈতিক মহল। এদিকে আজ, শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। সেখানে নতুন করে দলের সাংগঠনিক কাঠামো ঘোষণার কথা রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি তিন পুরনিগমের মেয়রের নামও ঘোষণা করবে তৃণমূল।
আই প্যাকের নানান ভূমিকা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। এর আগে তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারী আই প্যাকের কোনও নির্দেশ মানবেন না বলে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের নানা জনপ্রিয় স্লোগান তৈরির পিছনে আই প্যাকের বড় ভূমিকা ছিল। 'দিদিকে বলো', 'বাংলার মেয়েকেই চাই', ঝড় তুলেছিল বাংলার নির্বাচনী ময়দান। 'দুয়ারে সরকার'-ও কাজে এসেছিল নির্বাচনে। দলের একটা বড় অংশ তৃণমূলের নির্বাচনে জয়ের জন্য সাংগঠনিক ভূমিকার পাশাপাশি আই প্যাকের কাজকর্মেরও প্রশংসা করেছেন। তাঁরা মনে করছেন, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর ২০২১ বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের অভাবনীয় ফলের পিছনে দলের নেতা-কর্মী ছাড়াও পিকের টিমের গুরুত্ব ছিল। সম্প্রতি পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা নিয়ে আই প্যাক-তৃণমূল বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। তবে এই অসন্তোষ সাময়িক বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, দলের অন্য শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গেও যাতে আই প্যাকের সম্পর্ক মজবুত করার কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিরোধের ইতি ঘটেছে বলেই সূত্রের দাবি।
আরও পড়ুন- ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে নির্দলদের চরম হুঁশিয়ারি মমতার
এদিকে দলের সব পদের অবলুপ্তি ঘটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সভানেত্রী ছাড়া ১৯ জন সদস্য রয়েছেন জাতীয় কর্মসমিতিতে। রাজনৈতিক মহলের মতে, সাংগঠনিক ভাবে দলের সংগঠনকে আরও ব্যালান্স করার প্রচেষ্টা নেওয়া হবে। সূত্রের খবর, জাতীয় স্তরে সংগঠনে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হতে পারে। সাধারণ সম্পাদকের সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। হতে পারে একাধিক নতুন পদ বা কর্মসমিতি সৃষ্টিও। এদিকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ জাতীয় রাজনীতিতে যেতে আগ্রহী নয়। তাঁরা রাজ্য স্তরের সংগঠনেই থাকতে চায় বলে সূত্রের খবর। অনেকেই আবার বয়সজনিত ও শারীরিক সমস্যার কথা ভেবেই আর দৌড়ঝাঁপ করতে চান না। কিন্তু বাকিদের কথা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব ভেবে দেখছে বলেই খবর। সেক্ষেত্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দল আগের শীর্ষ পদে বহাল রাখে না নতুন কোনও পদ সৃষ্টি করে তা নিয়েও চর্চা চলছে তৃণমূলের অন্দরমহলে। এদিনই তিন পুরসভার মেয়রের নাম ঘোষণা করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এখনও বিধাননগর নগরনিগমে রাজ্যের প্রাক্তন এক মন্ত্রীর নাম ভেসে বেরাচ্ছে।