Advertisment

তৃণমূলের স্বপ্ন ভঙ্গ, ত্রিপুরায় নিষ্ক্রিয় দলের বড় অংশ, বড়সড় ভাঙনের ইঙ্গিত

বাঙালি অধ্যুষিত পরশি রাজ্যে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের বড় অংশ।

author-image
Joyprakash Das
New Update
After the rise just falldown, again and again, one step forward, three steps behind the tmc policy in Tripura

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভিন রাজ্যে তৃণমূলের প্রসারের পরিকল্পনা আদৌ কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিশেষত বাঙালি অধ্যুষিত পরশি রাজ্যে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের বড় অংশ। তাঁদের কথায়, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও যদি সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয় আগামি কয়েক দিনের মধ্যে বড়সড় ভাঙন দেখা দিতে পারে ত্রিপুরা তৃণমূলে। ইতিমধ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পরে গোয়ায় তৃণমূলের একাংশ দল ছেড়ে দিয়েছে৷

Advertisment

ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের একমাত্র সবেধন নীলমনি কাউন্সিলর সুমন পাল বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর জয়ের পর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সুমন বলেছিলেন, 'আমি কখনও বিজেপিতে যোগ দেব না। আমার বিজেপি যোগের খবর একেবারে মিথ্যা।' দুদিন আগেই তিনি উন্নয়নের টানে গেরুয়া শিবিরে ভিড়েছেন। যদিও তৃণমূলের একাংশের দাবি, ত্রিপুরায় দলের একমাত্র জনপ্রতিনিধিকে নেতৃত্ব কোনও সম্মান দেয়নি, দলের কাজেও লাগায়নি। এমন পরিস্থিতি দলের অন্যদের ক্ষেত্রেও তৈরি হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন।

এদিকে ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি আশিসলাল সিং দীর্ঘ দিন ধরে বেপাত্তা। তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বও যোগাযোগ করতে পারেনি। ত্রিপুরা তৃণমূলের একটা সূত্র জানাচ্ছে, বিজেপির হামলায় তিনি অসুস্থ হয়ে দিল্লির সেহগাল ও বেদান্ত নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। কিছু দিন বিদেশেও কাটিয়েছেন। ত্রিপুরা তৃণমূলের কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়নি। তিনি নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীরাও যোগাযোগ করতে পারেনি। প্রশ্ন উঠেছে, আশিসলাল সিংয়ের মতো একনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা কেন দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছেন?

আরও পড়ুন- সিবিআই-য়ের প্রশংসা অনুব্রতর মুখে, তবে এড়ানো গেল না হাজিরার ডাক

মাথা ন্যাড়া হয়ে প্রায়শ্চিত্ত করে ঢাকঢোল পিটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস। রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল ত্রিপুরা তৃণমূলে। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে দল কোনও দায়িত্ব না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন আশিস দাস। সামাজিক মাধ্যমে ত্রিপুরা তৃণমূল নেতৃত্বকে তুলোধোনা করতেও ছাড়েননি আশিসবাবু। সরাসরি তেপ দেগেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। দলের সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশও বিতশ্রদ্ধ নেতৃত্বের প্রতি।

ত্রিপুরা তৃণমূলের দায়িত্ব আশিস দাসকে দেওয়ার জন্য সওয়াল করেছেন ত্রিপুরা তৃণমূলের একটা বড় অংশ। আশিস দাসও দাবি করেছেন, তাঁকে দল দায়িত্ব দিলে সাফল্যের রাস্তা দেখাতে পারবেন। আশিসবাবুকে সামনে রেখে দলের ওই অংশ লড়াই করতে চাইছে। তাহলেই দলের ভোলবদল সম্ভব বলে তাঁরা মনে করছেন। দলের একাংশ আসন্ন উপনির্বাচনে আশিস দাসকে তাঁর পুরনো কেন্দ্র সুরমা থেকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়েছে। যদিও এবিষয়ে দলের অন্দরেই দ্বন্দ্ব রয়েছে। নেতাদের বক্তব্য, দল যেভাবে চলছে তাতে ত্রিপুরা তৃণমূলে বড়সড় ভাঙন অপেক্ষা করছে।

সেক্ষেত্রে ওই অংশের বিজেপি, সিপিএম বা কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। সূত্রের খবর, ত্রিপুরার জনজাতি প্রভাবিত স্থানীয় দলে যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, ত্রিপুরার সংগঠনের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হলে বিধানসভা নির্বাচনে হাত কামড়ানো ছাড়া তৃণমূলের কিছু করার থাকবে না। ৬ এপ্রিলের মহামিছিলেও দলের বিক্ষুব্ধ অংশ যোগ দেবে না বলেই খবর।

tmc Mamata Banerjee Tripura TMC
Advertisment