আফগানিস্তান ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আপাতত কালো অন্ধকারে ঢাকা। তালিবান জমানায় ক্রিকেট খেলায় আগের মতই সবুজ সঙ্কেত মিললেও, ক্রিকেট দলের পরিচিতি বড় সমস্যায় ফেলতে পারে রশিদ খানদের। তালিবান আমলে বাতিল হয়েছে আফগানিস্তানের জাতীয় পতাকাও। তালিবান পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা দেশ।
এদিকে, টি২০ বিশ্বকাপ মাত্র একমাস বাকি। এমন অবস্থায় তালিবানি পতাকা নিয়ে বিশ্বকাপে খেলতে গেলে আফগানিস্তান ক্রিকেটকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে। আইসিসির তরফে বড়সড় শাস্তির মুখে পড়তে পারেন আফগান ক্রিকেটাররা।
আরও পড়ুন: ছোট পোশাকে উদ্দাম নাচ! আফগানিস্তানে IPL নিষিদ্ধ করল তালিবান
আফগান ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ কীভাবে নেবে তালিবান নেতৃত্ব, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে আফগান ক্রিকেট বোর্ডের ডিরেক্টর পদ থেকে হামিদ শিনওয়ারিকে সরিয়ে নাসির জাদরানকে নিয়োগ করায় তালিবানের ক্রিকেটীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার প্রয়াস অনেকটাই স্বচ্ছ। ক্রিকেট দলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরে তালিবান ভাবমূর্তি পরিষ্কার করার কাজে নামতে পারে। সেই কারণেই আফগানিস্তান জাতীয় দলকে তালিবানি পতাকা নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে বাধ্য করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: তালিবানি নৃশংসতার খুল্লামখুল্লা বিরোধিতা! বিশ্বকাপে নেতৃত্ব ছাড়তে বাধ্য হলেন রশিদ খান
আইসিসি টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক দেশকে জাতীয় দলের পতাকা জমা দিতে হয়। যে পতাকা যাঁদের জাতীয় দলের পরিচায়ক তা স্পষ্ট কত জানাতে হয়। আর এখানেই সমস্যায় পড়তে পারে আফগানিস্তান। আফগান জাতীয় দল আইসিসির কাছে তালিবান পতাকা নিয়ে খেলার আর্জি জানালেই, তা বাতিল হতে পারে।
টেলিগ্রাফ.কো. ইউকে-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইসিসি কেবলমাত্র টুর্নামেন্টে খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেই ক্ষান্ত না-ও থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সদস্য দেশের মর্যাদাও কেড়ে নেওয়া হতে পারে। টি২০ বিশ্বকাপের মূলপর্বে খেলার জন্য সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করেছে আফগানিস্তান। দ্বিতীয় গ্রুপে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে একই সঙ্গে রয়েছে আফগানিস্তান। কোয়ালিফায়ার থেকে আরও দুটো দল যুক্ত হবে গ্রুপে। ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্টের কোয়ালিফায়ার পর্ব।
আরও পড়ুন: তালিবানি আতঙ্কে দিশেহারা! আফগানিস্তান ছেড়ে ভারতেই কোচিং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলীয়র
শুধু পুরুষ দলই নয়। মহিলা দল নিয়েও বিপাকে পড়তে পারে আফগানিস্তান। আইসিসি নিয়ম অনুযায়ী, টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্ত দেশের পুরুষ দলের সঙ্গে মহিলা দল থাকা বাধ্যতামূলক। চলতি বছরেই আফগান মহিলা দলের আন্তর্জাতিক স্তরে আত্মপ্রকাশ করার কথা ছিল। তবে তালিবানের ক্ষমতা অর্জনে সমস্ত পরিকল্পনা বাতিল হয়ে গিয়েছে।
আফগানিস্তানের মহিলা দলের ক্রিকেট পরিস্থিতি নিয়ে আইসিসি এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল তো সরাসরি নভেম্বরে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্ট বাতিল করার হুমকিও দিয়ে রেখেছে এই ইস্যুতে।
আরও পড়ুন: আফগান ক্রিকেট দফতরে তালিবান হানা, দখল হয়ে গেল রশিদদের হেডকোয়ার্টার্স
আইসিসির পূর্ণ সদস্যের দেশ হিসেবে প্রত্যেক বছর আইসিসির তরফ থেকে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ফান্ড বাবদ পেয়ে থাকে। বর্তমানে ১৭ জনের আইসিসির বোর্ড মেম্বারের মধ্যে ১২জন যদি আফগানিস্তানকে নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ করে, তাহলে আইসিসির এপেক্স বোর্ড, সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে বাধ্য থাকবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন