Bangla Pokkho Agitation over IFA's decision: কলকাতা ফুটবল লিগে ভূমিপুত্র খেলানোর নয়া নিয়ম নিয়ে বিতর্ক বেড়েই চলেছে। এবার ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (IFA) বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালো বাংলা পক্ষ। শুক্রবার আইএফএ-র অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান বাংলা পক্ষের সদস্য-সমর্থকরা। সম্প্রতি আইএফএ নিয়ম করেছে যে কলকাতা ফুটবল লিগে প্রতিটা দলে ৫ জন বাংলার ফুটবলার খেলাতে হবে। বাংলা পক্ষর দাবি, কলকাতা ফুটবল লিগে (CFL) প্রতিটা দলে ৫ জন নয়, কমপক্ষে ৯ জন বাংলার ভূমিপুত্র ফুটবলার চাই। বরং বলা ভাল, ২ জনের বেশি বহিরাগত খেলানো যাবে না।
এছাড়া অনেকে ভিন রাজ্যের ফুটবলার ঠিকানা জালিয়াতি করে বা আধার কার্ড জালিয়াতি করে বাংলার ভূমিপুত্র ফুটবলার হিসাবে খেলে। আধার কার্ড জালিয়াতি করলে সেই ফুটবলারকে গ্রেফতার করতে হবে এবং সেই ক্লাবকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এই দাবি নিয়েই শুক্রবার IFA অফিসের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন ও ডেপুটেশন জমা দেয় বাংলা পক্ষ। নেতৃত্ব দেন বাংলা পক্ষর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক গর্গ চট্টোপাধ্যায়।
গর্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বাইরের রাজ্যের ফুটবলার খেলালে এখানকার ফুটবলাররা ভাল খেলা শিখবে। এগুলো হাস্যকর যুক্তি। গত ৩০ বছর ধরে একই যুক্তি শুনছি এবং এভাবেই বাইরের ফুটবলার খেলানো হচ্ছে। এতে বাঙালির ফুটবলের উন্নতি হয়নি, বরং অবনতি হচ্ছে। বাঙালি ফুটবলাররা চান্স পাচ্ছে না৷ যখন শুধুমাত্র বাংলার ফুটবলাররাই খেলত তখন বাংলা প্রায় প্রতিবার সন্তোষ ট্রফি জিতত এবং ভারতীয় টিমে কমপক্ষে ৭-৮ জন বাঙালি ফুটবলার খেলত। বর্তমানে ISL-এ বাঙালি বঞ্চিত, কলকাতা ডার্বিতে বাঙালি নেই। এরপর কি CFL-এও বাঙালি থাকবে না? বাঙালি ফুটবলাররা চান্স না পেলে খেলবে কেন? বাংলার ফুটবলকে বাঁচাতে এবং বাঙালি তথা ভূমিপুত্র ফুটবলার তুলে আনতে IFA-কে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে।"
আরও পড়ুন বিরাট চমক ইস্টবেঙ্গলের, রোনাল্ডোর বিরুদ্ধে খেলা তারকা ফুটবলার লাল-হলুদে!
সাংগঠনিক সম্পাদক কৌশিক মাইতি বলেন, "ক্রীড়াক্ষেত্রে ডোমিসাইল দুর্নীতি একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটা ক্রিকেট হোক বা ফুটবল, সর্বত্রই এক সমস্যা। আধার কার্ড জালিয়াতি করে বা ঠিকানা জালিয়াতি করে বাংলার ফুটবলার হিসাবে খেলছে ভিন রাজ্যের ছেলেরা। IFA কর্তাদের এই বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। ফুটবলারদের স্কুল সার্টিফিকেট যাচাই করতে হবে এবং SDO-দের ইস্যু করা ডোমিসাইল সার্টিফিকেট চাই। বাংলার ছেলেমেয়েদের জায়গায় ঠিকানা জালিয়াতি করে বাইরের ছেলেমেয়েদের খেলা চিরতরে বন্ধ করতে হবে। বাংলার ক্রিকেটেও এই সমস্যা চূড়ান্ত। সেখানেও আমরা গত ৭ বছর লড়ছি।"
প্রসঙ্গত, আসন্ন কলকাতা ফুটবল লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনে ভূমিপুত্রের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে IFA। গত বছর প্রিমিয়ার ডিভিশনে প্রথম একাদশে চারজন ভূমিপুত্র খেলানো বাধ্যতামূলক ছিল। এবারে তা বাড়িয়ে ৫ জন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার আইএফএ-র বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি এবারে প্রিমিয়ার ডিভিশনের ছাব্বিশটি দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করে প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষে থাকা তিনটি দল নিয়ে মোট ছয়টি দলের সুপার সিক্স রাউন্ড খেলা হবে। একই গ্রুপে থাকা দলগুলি সুপার সিক্স রাউন্ডে পরস্পরের বিরুদ্ধে খেলবে না। বৃহস্পতিবার ক্লাব প্রতিনিধিদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দোপাধ্যায়, সচিব অনির্বাণ দত্ত-সহ অন্যান্য পদাধিকারীরা।
আরও পড়ুন কবে-কোথায় মোহনবাগানের নির্বাচন? প্রকাশ্যে এল দিনক্ষণ
IFA সচিব অনির্বাণ দত্ত জানিয়েছেন, 'বাংলার ফুটবলে নতুন করে জোয়ার এসেছে। সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলার ফুটবলে নতুন দিশা দেখা গিয়েছে। তাই কলকাতা লিগে বাংলার ফুটবলারদের সংখ্যা বাড়িয়ে তাঁদের আরও খেলার সুযোগ করে দিতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এতে ঘরের ছেলেদের মধ্যে দলে সুযোগ পাওয়ার লড়াই আরও বাড়বে।' তবে বাংলা পক্ষের দাবি, ভূমিপুত্রের সংখ্যা বাড়িয়ে ৫ নয়, ৯ করতে হবে। এই নিয়েই এদিন IFA অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান বাংলা পক্ষের সদস্যরা।