Advertisment

বার্সা লেজেন্ডদের কলকাতা অভিষেকে সাংবাদিক হেনস্থা

মুখের ওপর জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রালের বিশাল কাঠের দরজা। সাংবাদিকদের ব্যাকুল আকুতি কানে তুলছেন না কেউ। দরজা আগলে দাঁড়িয়ে অজ্ঞাত পরিচয় দেহরক্ষীরা। এর মাঝেই দরজার ফাঁকে আটকে গেল সাংবাদিকের হাত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
FC Barcelona legends team at st paul's cathedral

চার্চের মধ্যে বার্সেলোনা লেজেন্ড টিম। ছবি-শশী ঘোষ

মুখের ওপর জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রালের বিশাল কাঠের দরজা। সাংবাদিকদের ব্যাকুল আকুতি কানে তুলছেন না ওপারের কেউ। দরজা আগলে দাঁড়িয়ে অজ্ঞাতপরিচয় দেহরক্ষীরা। এর মাঝেই দরজার ফাঁকে আটকে গেল সাংবাদিকের হাত। প্রবল ধাক্কাধাক্কিতে কেউ বা পেলেন চোট। ঠিক এরকম ঘটনারই শিকার হতে হয়েছে শহরের বেশ কয়েকজন ক্রীড়া সাংবাদিককে। পেশাগত পরিচয় দেওয়ার পরেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি চার্চের ভিতর। শুনিয়ে দেওয়া হয়েছে, "খেলোয়াড়দের পরে দেখবেন, বেরিয়ে যান। নিচে নেমে দাঁড়ান। আমাদের ইনস্ট্রাকশন রয়েছে।"

Advertisment

এরকম চূড়ান্ত অরাজকতা এবং নৈরাজ্য দেখল বুধবারের বিকেল। সৌজন্যে এফসি বার্সেলোনা লেজেন্ড টিমের শহর পরিক্রমা। বিকাল পাঁচটায় সময় ক্যাথিড্রাল রোডে কনভয় নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল বার্সেলোনার লেজেন্ড টিম বাস। এখান থেকে বাস সোজা ঢুকে গিয়েছিল চার্চের মধ্যে। অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার উদ্যোগে 'সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ' প্রচারের অংশ হতেই হোফ্রে মাতেউ ও সিমাও সাব্রোসারা এসেছিলেন এই চত্বরে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র এই সংগঠনের সভাপতি। তাঁর ডাকে এদিন শয়ে শয়ে মানুষ এসেছিলেন বার্সার ফুটবলারদের সমর্থনে গলা ফাটাতে। এক সময় চার্চ চত্বরে জনসমাগম দেখে মনে হচ্ছিল যে, মোহনবাগানের সঙ্গে বার্সার ম্যাচটা সম্ভবত এখানেই হতে চলেছে, সল্টলেক স্টেডিয়ামে নয়।

খবর করার জন্য সব সাংবাদিকই খেলোয়াড়দের সঙ্গে চার্চের ভিতরে ঢোকার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ার অনেক সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকরা এদিন ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। কারণ শুরুতে কিছু সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রচুর সমর্থকরাও ঢুকে গিয়েছিলেন চার্চের মধ্যে। এরপর আর কোনও সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন: বার্সা ম্যাচ হচ্ছেই, কিন্তু আসছেন কারা?

Javier Saviola হাভিয়ের সাবিওলা। ছবি: শশী ঘোষ

কলকাতায় বার্সার আগমনী বার্তা দেওয়া থেকে শুরু করে স্প্যানিশ জায়ান্টদের যাবতীয় খবরাখবর দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন কৌশিক মৌলিক। ফুটবলনেক্সট ফাউন্ডেশনের ডিরেক্টর তিনি। তাঁর উদ্যেগেই শহরে এসেছে বার্সা। এই চূড়ান্ত অব্যবস্থার জন্য তাঁর উপর কয়েক জন সাংবাদিক ক্ষোভও উগরে দেন। কিন্তু সেখানে কৌশিকবাবুর বক্তব্য ছিল, "আমাকে বলছেন কেন, আমি তো আর ডাকিনি আপনাদের।" যুক্তি অস্বীকার যায় না। সত্যিই উনি ডাকেননি। পিআর এজেন্সি মারফত সাংবাদিকদের কাছে খবর এসেছিল যে, বার্সার লেজেন্ড টিম আসবে সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রালে, ও সেখান থেকে তাঁরা ফ্ল্যাগ ওয়েভ করে যাবেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে।

কিন্তু কৌশিকবাবু কোনওভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। কারণ সেই শুরুর দিন থেকে বার্সেলোনার সঙ্গে কলকাতার যোগসূত্র হিসেবে শুধু এই মানুষটাই সামনে এসেছেন। এমনকি এফসি বার্সার ও কৌশিকবাবুদের সমস্ত অনুষ্ঠানই দেখভালের দায়িত্বে সেই পিআর সংস্থাই। এই অনুষ্ঠান ক'টায় শুরু হবে, সেই নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। দু'বার দুরকম সময় জানানো হয়েছিল। পিআর সংস্থা জানিয়েই দিয়েছে যে, কৌশিকবাবুর কাছ থেকে তারা কোনও নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান সূচি পায়নি বলেই এই অবস্থা হয়েছে। এমনকি কী ঘটতে চলেছে আর কী কী হতে পারে সে ব্যাপারেও তারা কিছুই জানত না। কারণ তাদেরকে জানানোই হয়নি।

আরও পড়ুন: বার্সার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য দল ঘোষণা মোহনবাগানের, রয়েছেন ব্যারেটো থেকে সুনীল

FC Barcelona legends team infront of Victoria Memorial সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রচারে বার্সেলোনা টিম। ছবি: শশী ঘোষ

এদিন চার্চে মিনিট কুড়ি ছিলেন বার্সার ফুটবলাররা। কলকাতার মানুষ এই দলের মধ্যে চেনেন দু’জন ফুটবলারকেই। হোফ্রে মাতেউ ও সিমাও সাব্রোসা। এই দুই স্প্যানিশ ফুটবলারই আইএসএল খেলে গিয়েছেন। হোফ্রে খেলেছেন খোদ অ্যাটলেটিকো দে কলকাতাতেই। এখনও আইএসএল-এ মজে আছেন তিনি। বললেন, "আইএসএল-এ এখন বিদেশি নির্ভরতা কমেছে। যেটা শুরুর দিকে ছিল। ভারতের অনেক ফুটবলারই উঠে আসছে। এটা টুর্নামেন্টকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলেছে।" অন্যদিকে হোফ্রে জানিয়ে দিলেন যে, কলকাতাকে তিনি আজও 'মিস' করেন। বার্সার ফুটবলাররা হাসি মুখেই সমর্থকদের সেলফির আবদার মিটিয়েছেন। সময়মতো। সমস্ত অনুষ্ঠান দেখে একটা প্রশ্নই উঠে আসছে। যেখানে মিডিয়ার জন্য খেলোয়াড়দের কাছে যাওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগটুকুও নেই, সেখানে কেন সংবাদমাধ্যমকে ডাকা হল? দায়টা কার?

Mohun Bagan Barcelona
Advertisment