Calcutta Football League: জোড়া ছাতা দিয়ে চোটগ্রস্ত পায়ে সাপোর্ট! কলকাতা ফুটবল লিগে (CFL) ছাতা-কাণ্ডে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছে ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (IFA)। প্রিমিয়ার ডিভিশনের ম্যাচে চূড়ান্ত অব্যবস্থার ছবি প্রকাশ্যে আসে গত সোমবার। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ম্যাচে রেলওয়ে এফসি-র ফুটবলার তারক হেমব্রমের পায়ে মারাত্মক চোটের পর কলকাতা লিগ (Calcutta Football League) নিয়ে বিস্তর প্রশ্নের মুখে পড়ে আইএফএ। এই নিয়ে এবার বিতর্কিত মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়ালেন আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত।
উল্লেখ্য, তারক হেমব্রমের চোট তেমন গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। একদিন পরই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন তারক। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখনই আপাতত মাঠে নামতে পারবেন না বাংলার ফুটবলার। প্রায় দেড় মাস তাঁকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে।
গত সোমবার মোহনবাগান বনাম রেলওয়ে এফসি ম্যাচের ৩৫ মিনিটের মাথায় মারাত্মক চোট পান তারক। মার্শাল কিস্কুর সঙ্গে সংঘর্ষে বাঁ-পায়ে গুরুতর আঘাত পান তারক। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন মাঠে শুয়ে। তাঁকে শুশ্রূষা করেন মোহনাবাগানের চিকিৎসক। এরপর দেখা যায়, তাঁর পায়ে ব্যান্ডেজ করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দুটো ছাতার সাপোর্ট দিয়ে। এর পর তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ইউনাইটেড স্পোর্টসের কর্তা নবাব ভট্টাচার্য তারকের চিকিৎসায় বড় ভূমিকা নেন।
আরও পড়ুন 'যিনি ছাতাটা বেঁধে দিয়েছিলেন...', বিতর্কে ঘি ঢাললেন তারক, মুখ খুললেন চোট নিয়ে
এমআরআই রিপোর্ট অনুযায়ী, তারকের লিগামেন্টে স্ট্রেচ হয়েছে। সারতে অন্তত দেড় মাস সময় লাগবে। চোট তেমন মারাত্মক নয়। আপাতত ফুটবল মাঠে নামতে পারবেন না তারক। এদিকে, এই ছাতা-কাণ্ডের জেরে কলকাতা লিগের চরম অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলার ফুটবলমহল। বাংলার প্রাক্তন-বর্তমান ফুটবলার থেকে শুরু করে ফুটবলপ্রেমীরা একসুরে তুলোধনা করেছে আইএফএ-র। এই নিয়ে মঙ্গলবার মুখ খুলেছেন আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত।
একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছে, 'আজকে আইএসএল, আই লিগের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে কলকাতা লিগকে। আইএসএল খেলতে প্রত্যেকটা টিমকে অংশগ্রহণের জন্য দিতে হয় ৬ কোটি টাকা, আই লিগে খেলতে দিতে হয় ৭ লক্ষ টাকা সঙ্গে ১০ লক্ষ টেলিকাস্ট ফি, আই লিগ ২ খেলতে দিতে হয় ২ লক্ষ টাকা। আর কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনে ক্লাবগুলিকে খেলার জন্য দেয় ১ হাজার টাকা। পার্থক্যটা কোথায় বুঝতে পারছেন? সেইসঙ্গে আইএসএল, আই লিগে মেডিক্যাল ফেসিলিটি, অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষকে নয় ক্লাবগুলোকে করতে হয়। যাদের হোম ম্যাচ তাদের ব্যবস্থা করতে হয়। কোনও কর্তৃপক্ষ দায় নেয় না। আইএফএ-র নার্সারি ডিভিশন থেকে প্রিমিয়ার ডিভিশন, মেয়েদের ফুটবল, সব জায়গায় মেডিক্যাল ফেসিলিটির ব্যবস্থা আইএফএ নিজে করে। প্লেয়ারদের ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থা করে আইএফএ, ক্লাবগুলি কিন্তু করে না।'
আরও পড়ুন কলকাতা লিগে টানা দ্বিতীয় জয় মোহনবাগানের, রেলকে বেলাইন করলেন সন্দীপ-শিবমরা
অনির্বাণ দত্ত আরও বলেছেন, 'এই যে সন্তোষ ট্রফি খেলতে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলার ফুটবলাররা যায়, আইএফএ প্লেয়ারদের ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থা করে। মেডিক্যাল সাপোর্ট যা লাগে আইএফএ ব্যবস্থা করে। আজকে একজন প্লেয়ারের চোটটা কাম্য নয়। আর এই জন্য তাঁর কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যায় তার থেকে বড় ক্ষতি নেই। জন্য ২ লক্ষ টাকার ইনসিওরেন্স আছে, তা যথেষ্ট বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক, হাসপাতালগুলি। আইএফএ যতটা করছে, অন্য কেউ কি এগুলো করে?'
এরপরই ক্লাবগুলির ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন আইএফএ সচিব। বলেছেন, 'ক্লাবগুলোরও একটা দায়িত্ব থাকে। ক্লাবগুলোকে বার বার বলা হয়েছে লাইসেন্সড ফিজিও রাখতে হবে ক্লাবগুলিকে। আজকে মাঠে কারও পা যদি ভেঙে যায় নিয়ম হল দুটো লাঠি দিয়ে, রডের টুকরো দিয়ে পা সাপোর্ট দেওয়া, যাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে পায়ের হাড় না সরে যায়। সেদিন মাঠে যারা ছিলেন তাঁরা বাঁশ-রড নয়, দুটো ছাতা দিয়ে এই কাজটাই করেছেন। আপনি বলতে পারেন, ওটা দেখতে এত ভাল লাগে না। কিন্তু আমি ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেছি, তাঁরা বলেছেন একদম ঠিক করেছে। ছেলেটা ভাল আছে, ঈশ্বরের আশীর্বাদে ওঁর পা ভেঙে যায়নি। আমি অত্যন্ত খুশি যে তারক সুস্থ হয়ে ফিরবে। আজকে একটা প্লেয়ার চোট লাগলে মণিপালের মতো একটা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যেতে পারছে তার কারণ তাঁদের জন্য একটা ভাল ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থা আছে, আর এটাই আইএফএ-র করে দেওয়া।'