আর্জেন্টিনা: ১ (ডি মারিয়া)
ব্রাজিল: ০
সমস্ত প্রতীক্ষার অবসান। ঈশ্বর শান্ত রইলেন গোটা ম্যাচেই। তবে বিধাতা ঈশ্বরের হাতেই কোপা তুলে দিলেন। অবশেষে। ঐতিহাসিক মারাকানায়। ব্রাজিলের গুহায় ঢুকে চ্যাম্পিয়ন হয়েই বেরিয়ে আসছে আর্জেন্টিনা। হলুদ দুর্গের রং রবিবার নীল-সাদা।
১-০ গোলে ব্রাজিলকে হারিয়ে টানা ১৩ ম্যাচের অপরাজেয় থাকার রেকর্ড চূর্ণ করে দিল আর্জেন্টিনা। লিওনেল স্কালোনির হাতে কাপ তুলে দিল এঞ্জেল ডি মারিয়ার একটা নিখুঁত ফিনিশিং।
আরো পড়ুন: কোপা চ্যাম্পিয়ন হলেই কোটি কোটির পুরস্কার! ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা পাচ্ছে কত কোটি টাকা
টানা ২৮ বছর ঈশ্বরের সাম্রাজ্যে ট্রফির মুখ দেখেনি আর্জেন্তিনা। জীবনের প্রতি পদক্ষেপে শুনতে হয়েছে কটূক্তি, ব্যঙ্গ! দুবার কোপার ফাইনাল, বিশ্বকাপের ফাইনালে দলকে পৌঁছে দিয়েও কাপ জিততে পারেননি।
তবে ফুটবল ঈশ্বর মেসির সেই শাপমুক্তি হল ঐতিহাসিক মারকানাতেই। যা মনে করা হয় ব্রাজিল ফুটবলের পীঠস্থান। চরম প্রতিপক্ষের দুর্গে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া- পোয়েটিক জাস্টিস নয়ত কি!
ডি মারিয়ার ফিনিশিং আর্জেন্টিনাকে ১৫তম কোপা জিতিয়ে দিল। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে যা উরুগুয়ের সঙ্গেই সর্বোচ্চ। রেফারি ম্যাচ শেষে বাঁশি বাজাতেই হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন তিনি। চারদিক থেকে ছুটে এলেন সতীর্থ, কোচ, সাপোর্ট স্টাফরা। তারপর উল্লাসধ্বনি আর সতীর্থরা তুলে নিলেন লিওনেল আন্দ্রেস মেসিকে।
অন্যদিকে কান্নায় ভেঙে পড়া নেইমার। আগের বার কোপা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সময় দলের সঙ্গে ছিলেন না তিনি। এবার মাঠে নেমেই ঈশ্বরের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করলেন।
ম্যাচের বয়স মাত্র ২২ মিনিট। সেই সময়েই মাঝমাঠ থেকে ডিফেন্স চেরা থ্রু বল বাড়ালেন রড্রিগো ডি পল। কে জানত ও একটা পাসেই ম্যাচের দিক নির্ধারণ হয়ে যাবে! ডান প্রান্ত থেকে উঠে আসা ডি মারিয়া সেই বল কন্ট্রোল করেই দেখেন সামনে গোলকিপার এডেরসন ছাড়া আর কেউ নেই। রেনান লোদি যখন ধারেকাছে এলেন তখন আলতো টোকায় মারিয়া গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দিয়েছেন।
আরো পড়ুন: মেসির হাতেই কাপ দেখার ইচ্ছা ব্রাজিলিয়ানদের! ক্ষিপ্ত নেইমারের কুৎসিত অভিশাপ তারপরেই
গোটা টুর্নামেন্টে আলো ছড়ালেও মেসি এদিন নিষ্প্রভই ছিলেন। শেষদিকে গোলকিপারকে একা পেয়ে নিশ্চিত গোলের সুযোগও মিস করেন তিনি। তবে জাতীয় দলের হয়ে শেষবেলাতেও হিরো তিনি। চার গোল এবং পাঁচ এসিস্টে তাঁকে ছাড়া টুর্নামেন্টের সেরা আর কাকেই বা ভাবা যায়!
জাতীয় দলের হয়ে বারবার ফাইনালে উঠেও খেতাব হাতছাড়া হওয়া আর শেষবেলায় ট্রফি জয়! মুম্বইয়ের সাড়ে পাঁচ ফুটের ভদ্রলোককেও তো ২৪ বছরের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষ লগ্ন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল!
মেসি এবং শচীন- দিনের শেষে চ্যাম্পিয়নরা মিলে যান এভাবেই!
আর্জেন্টিনা: এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, গঞ্জালো মন্টিয়েল, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওটামেন্ডি, মার্কোস আকুনা, রড্রিগো ডি পল, লিয়েন্দ্র পারেডেস, জিওভানি লো সেলসো, লিওনেল মেসি, লাউটারো মার্টিনেজ, এঞ্জেল ডি মারিয়া
ব্রাজিল: রিচার্লিসন, নেইমার, লুকাস পাকুয়েতা, এভার্টন, ফ্রেড, কাসেমিরো, রেনান লোদি, থিয়াগো সিলভা, মার্কুইনহোস, দানিলো, মোরায়েস
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন