আইসকুল। মাথায় যেন বরফ চাপিয়ে বাইশ গজে ব্যাট করতে নেমে বিপক্ষের বোলারদের নাভিশ্বাস তুলে দেওয়া। রাহুল দ্রাবিড় মানেই ক্রিকেটীয় পরিভাষায় 'এ জেন্টলম্যান'। উত্তেজনা, বিপক্ষের প্ররোচনায় প্রতিক্রিয়া দেওয়া- রাহুল দ্রাবিড়ের ক্রিকেট দর্শনে নৈব নৈব চ!
টেস্টে ১৩ হাজার এবং ওয়ানডেতে ১০ হাজারের ওপর রান সমেত ক্রিকেট বিশ্বে কিংবদন্তি খ্যাতি আগেই পেয়ে গিয়েছেন। সেইসঙ্গে ক্রিকেট মহলে দ্রাবিড়ের নামের সঙ্গে যেন অনায়াসেই শান্তশিষ্ঠ শব্ধবন্ধনী জুড়ে গিয়েছে। উত্তেজক খেলায় নিজেকে কীভাবে এতটা সংযত রাখেন, তা রীতিমতো গবেষনার বিষয়ও বটে।
আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের দুর্ব্যবহারেই আইপিএল ছেড়েছেন গেইল! বড়সড় অভিযোগে বিস্ফোরণ গাভাসকার-পিটারসেনের
তবে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন পেসার ডারমট রিভসের দাবি, দ্রাবিড়কেও নাকি তিনি উত্তেজিত করেছিলেন স্লেজিং করে। ২০০০ সালে দ্রাবিড় যখন কেন্টের হয়ে খেলতেন, সেইসময় সমারসেটের কোচ ছিলেন ডারমট রিভস। কাউন্টিতে খেলার সময় দ্রাবিড়কে নাকি রাগিয়ে দেন তিনি।
ডেইলি মেইল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিভস বলেছেন, "দ্রাবিড় ভারতের ওয়াল ছিল। দ্রাবিড় আমাকে পরে বলেন, তুমিই দেওয়াল ভেঙে দিয়েছিল। তুমি আমাকে এতটাই রাগিয়ে দিয়েছিল যে আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরতে হয়। তুমিই একমাত্র ব্যক্তি যে আমাকে রাগিয়ে দিয়েছিলে।"
আরও পড়ুন: আর সইতে পারলেন না! আচমকা প্রীতির পাঞ্জাব কিংস ছাড়লেন গেইল
কীভাবে দ্রাবিড়কে রাগিয়ে দিয়েছিলেন রিভস সেটাই জানিয়েছেন পরে বিস্তারিতভাবে। "দ্রাবিড় ব্যাট করতে নামলেই আমি ওঁকে খুঁচিয়ে দিতে বলতাম- এই ছোকরা ভারতের জাতীয় দলে কীভাবে সুযোগ পায়? ও তো কিস্যু শট-ই খেলতে পারে না। শুধুই ব্লক করে যায়। এভাবে ওঁকে বলেই যেতাম। তারপরেই ও আউট হয়ে যেত। এরপরে ও আমাকে ভীষণ অপছন্দ করতে শুরু করে। তবে আমিও তো মাঠে বন্ধুত্ব পাতাতে নামতাম না। স্রেফ ম্যাচ খেলতে নামতাম আমরা।" বলেছেন রিভস।
শুধু দ্রাবিড় নন, কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার সঙ্গেও সম্পর্ক একদম খারাপ ছিল রিভসের। নব্বইয়ের দশকে ওয়ারউইকশায়ারে সতীর্থ ছিলেন রিভস এবং লারা। সেই মরশুমে একাধিক ট্রফি জিতলেও রিভসের বক্তব্য লারার সঙ্গে সমস্যার কারণে সেই মরশুম একদমই উপভোগ করতে পারেননি তিনি।
রিভস বলছিলেন, "তিনটে ট্রফি জেতা সত্ত্বেও কেরিয়ারের সবথেকে খারাপ মরশুম সেটাই ছিল। গোটা মরশুম ধরেই লারার সঙ্গে আমার খটাখটি চলছিল। মনে হয় ওর এজেন্ট ওঁকে বুঝিয়েছিল আমি মোটেই লারাকে পছন্দ করিনা। তাই ক্লাবে এসেছিল ভুল ধারণা নিয়ে। মাঠেও মনে হয়েছে ও আমাকে কম গুরুত্ব দিত। এখন দুজনেই আমরা বন্ধু। যাবে ভাবতেও অবাক লাগে কেরিয়ারের সেরা মরশুমটাই উপভোগ্য ছিল না।"
১৯৯১-১৯৯৬ এর মধ্যে রিভস ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের হয়ে তিনটে টেস্ট এবং ২৯টা ওডিআই খেলেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন