Footballers Who died in auto crash: ফুটবল দুনিয়া বহু বছর ধরে একের পর এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছে, যেখানে উদীয়মান প্রতিভা থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ পেশাদার ফুটবলারদেরও প্রাণ হারাতে (Footballer Death) হয়েছে।
সবচেয়ে সাম্প্রতিক ও বেদনাদায়ক ঘটনা হল পর্তুগালের আন্তর্জাতিক ফুটবলার ও লিভারপুলের তারকা দিয়োগো জোতার (Diogo Jota Death) মৃত্যু। তিনি বিয়ের মাত্র কয়েক দিনের মাথায় তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে স্পেনে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন।
এ ধরনের আকস্মিক মৃত্যু ক্লাব, সমর্থক আর গোটা দেশের জন্য গভীর শোক আর চিরস্থায়ী ক্ষত তৈরি করে। এই প্রতিবেদনে এমনই কয়েকজন প্রখ্যাত ফুটবলারের তালিকা তুলে ধরা হল, যাঁরা সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন-
ফেদেরিকো পিসানি (ইতালি, ১৯৯৭)
মাত্র ২২ বছর বয়সে ইতালির জাতীয় দলের সম্ভাব্য স্ট্রাইকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন পিসানি। আতালান্তার এই ফরোয়ার্ড এক রাতে পার্টির পরে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তাঁর ১৪ নম্বর জার্সি বাতিল করা হয় এবং আতালান্তার স্টেডিয়ামের একটি স্ট্যান্ড তাঁর নামে নামকরণ করা হয়।
আরও পড়ুন চাকা ফেটে ছিটকে গেল গাড়ি, মুহূর্তে জ্বলে পুড়ে খাক, ঝলসে গেলেন ফুটবল তারকা
মাইকেল মিলেট (ইংল্যান্ড, ১৯৯৫)
মাত্র ১৭ বছর বয়সি উইগান অ্যাথলেটিকের যুব ফুটবলার মিলেট সিনিয়র দলে সুযোগ পাওয়ার পরপরই গার্সউডের কাছে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। উইগান পরে তাঁর নামে অ্যাকাডেমি পুরস্কার চালু করে।
জিমি ডেভিস (ইংল্যান্ড, ২০০৩)
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে ওয়াটফোর্ডে লোনে খেলছিলেন ডেভিস। এম৪০ হাইওয়েতে এক লরির সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি প্রাণ হারান। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২১। ইউনাইটেড ও ওয়াটফোর্ড দু’দলই ম্যাচে কালো আর্মব্যান্ড আর নীরবতা পালনের মাধ্যমে তাঁকে শ্রদ্ধা জানায়।
আরও পড়ুন মৃত্যুর খবর আগেই জানতেন দিয়েগো জোতা? শেষ পোস্ট ঘিরে বাড়ছে রহস্য
রে জোন্স (ইংল্যান্ড, ২০০৭)
কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের এই টিনএজ স্ট্রাইকার প্রিমিয়ার লিগে খেলার সুযোগ পাওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মারা যান। ক্লাব তাঁর ৩১ নম্বর জার্সি বাতিল করে এবং বার্ষিক স্মরণসভা আয়োজন করে।
জুনিয়র মালান্ডা (বেলজিয়াম, ২০১৫)
উলফসবার্গের মিডফিল্ডের ভরসা ছিলেন মালান্ডা। ভেজা রাস্তা আর গাড়ির হাই-স্পিডের কারণে দুর্ঘটনায় পড়ে তিনি পিছনের সিট থেকে ছিটকে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। উলফসবার্গ তাঁর জার্সি নম্বর স্থায়ীভাবে বাতিল করে।
আরও পড়ুন ভয়াবহ দুর্ঘটনায় নিহত লিভারপুল তারকা দিয়োগো জোটা, ১০ দিন আগেই বিয়ে করেন রোনাল্ডোর সতীর্থ
আন্তোনিও রেয়েস (স্পেন, ২০১৯)
প্রাক্তন আর্সেনাল ও সেভিয়ার উইঙ্গার রেয়েস নিজের শহর উত্রেরায় গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। খবর অনুযায়ী, তাঁর মার্সিডিজ প্রায় ২৩৭ কিমি/ঘণ্টা গতিতে চলছিল, যা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে ছিটকে যায়। ৩৫ বছর বয়সি রেয়েস দুই খুড়তুতো ভাইয়ের সঙ্গে যাচ্ছিলেন, যাঁদের একজনও মারা যান।
দিয়েগো মন্তিয়েল (আর্জেন্টিনা, ২০১৯)
আতলেতিকো দে রাফায়েলার প্রাক্তন মিডফিল্ডার, মাত্র ২৩ বছর বয়সে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। তাঁর গাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে বহুবার উল্টে যায়। আর্জেন্টিনার লোয়ার ডিভিশন ফুটবলে এই মৃত্যু বড় ধাক্কা দেয়।
এমিলিয়ানো সালা (আর্জেন্টিনা, ২০১৯)
সম্ভবত আধুনিক ফুটবলের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক বিমান দুর্ঘটনা। মাত্র ২৮ বছর বয়সে কার্ডিফ সিটির হয়ে চুক্তি করার পর ফ্রান্স থেকে একটি ছোট বিমান তাঁকে নিয়ে আসার পথে ইংলিশ চ্যানেলে ভেঙে পড়ে। বহুদিন পরে তাঁর মৃতদেহের খোঁজ মেলে। এই দুর্ঘটনা ফুটবলার ট্রান্সফার প্রক্রিয়ায় নিরাপত্তার বড় ফাঁক চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
মোতজেকা মাদিশা (দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০২০)
মামেলোদি সান্ডাউন্সের প্রতিভাবান ডিফেন্ডার জোহানেসবার্গের কাছে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মারা যান। ধ্বংসস্তূপ থেকে তাঁকে জীবিত বের করা হলেও পরে তাঁকে বাঁচানো যায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার ফুটবলে তাঁর মৃত্যু গভীর শূন্যতা তৈরি করে।
দিয়োগো জোতা (পর্তুগাল, ২০২৫)
সবচেয়ে সাম্প্রতিক এবং বেদনাদায়ক ক্ষতি। মাত্র ২৮ বছর বয়সে বিয়ের কিছুদিন পরেই জোতা (Diogo Jota) ভাইয়ের সঙ্গে জামোরার কাছাকাছি হাইওয়েতে গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে আগুনে পুড়ে মারা যান। লিভারপুল, পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন আর বিশ্বজুড়ে সমর্থকেরা তাঁকে স্মরণ করে শোকবার্তা জানিয়েছে।