নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে ভারতের বিশ্বকাপ থেকে বিদায় ঘটেছে দু-দিনও হয়নি। এর মধ্যেই দলের অন্তঃসার চেহারা ফুটে বেরোচ্ছে। ঋষভ পন্থকে নিয়ে প্রকাশ্যেই কোহলি অসন্তোষ দেখিয়েছেন। শাস্ত্রীকে রীতিমতো ধমকও দিয়েছেন সেমিফাইনালের ম্যাচ চলাকালীন। তবে সর্বভারতীয় হিন্দি প্রচারমাধ্যম জাগরণ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোটা টুর্নামেন্টে ক্রিকেটাররা মোটেই দল হিসেবে নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে জীর্ণ ভারতীয় ক্রিকেট। বিস্ফোরক প্রতিবেদনের সারমর্ম এটাই।
হিন্দি সেই প্রচারমাধ্যমে এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দলের মধ্যেই রয়েছে দুটো দল। কিছু ক্রিকেটারের আনুগত্য বিরাট কোহলির দিকে। বাদ বাকি ক্রিকেটার আবার রোহিতকে নেতা হিসেবে চাইতেন। কোহলির বিপক্ষ লবির একটাই অভিযোগ, দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ে কোহলি-শাস্ত্রী অনেক সময়েই বাকিদের না জানিয়ে সারপ্রাইজ ডিসিশন নিত। এতে বাকি ক্রিকেটারদের সঙ্গে কোহলি-শাস্ত্রীর ক্রমাগত দূরত্ব বেড়েছে।
আরও পড়ুন বোর্ডের ‘কুনজরে’ কোহলি-শাস্ত্রী, দেশে ফিরলেই নেওয়া হবে ব্য়বস্থা
দেশে ফিরতে পারছেন না কোহলিরা, দুঃশ্চিন্তা নিয়ে বিদেশেই থাকতে হবে ইন্ডিয়াকে
কোহলিদের দলে ছাঁটাই দু-জন! হারের পরেই ব্যাপক রদবদল টিম ইন্ডিয়ায়
শাস্ত্রী-কোহলির ঝগড়া এবার ঋষভকে নিয়ে! বিরাটের সংসারে চরম অশান্তি
জানানো হয়েছে, বিশ্বকাপের আগে আম্বাতি রায়াডুর পরিবর্তে চার নম্বরে বিজয়শঙ্করকে নেওয়ার সময়ে একই ভাবে কোহলি-শাস্ত্রী প্রভাব খাটিয়েছিলেন নির্বাচকদের উপরে। কোহলির এই নিরঙ্কুশ আধিপত্যের জন্য আবার সেই প্রতিবেদনে দায়ী করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত প্রশাসকমণ্ডলির চেয়ারম্যান বিনোদ রাইকে। বিনোদ রাই-ই কোহলির আসল 'শক্তি'। অনেকটা ধোনি-শ্রীনি জুটির মতোই কোহলি-রাই জুড়ি। বিনোদ রাইয়ের অদৃশ্য হাতের জন্যই কোহলি-কুম্বলে ঝামেলার সময় অ্যাডভান্টেজ ছিলেন বিরাট।
কোহলির অবাধ দাপটের জন্যই দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য সাম্প্রতিক মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছিল কার্যত একটাই বিষয়, তা হল ক্যাপ্টেনের প্রতি আনুগত্য। রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরা-দের মতো তারকাদের বাদ দিয়ে দলের অনেকজনই স্রেফ কোহলিয়ানায় ভর করে সুযোগ পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সবথেকে সুবিধাভোগী হিসেবে উঠে আসছে লোকেশ রাহুলের নাম। দলের এক ক্রিকেটারই নাকি ফাঁস করে দিয়েছেন, লোকেশ রাহুল কোহলির অন্যতম ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সবসময়েই অধিনায়কের পছন্দের। ক্রমাগত খারাপ পারফরম্যান্সের পরেও লোকেশ রাহুল ওপেনার হিসেবে হোক কিংবা চার নম্বরে নিজের জায়গা পাকা করেছেন। একদম খারাপ পরিস্থিতিতেও রাহুলকে ১৫ জনের স্কোয়াডে রাখা হয়েছে।
দ্বিতীয়জন হলেন যুজবেন্দ্র চাহাল। বলা হয়েছে, আরসিবি স্কোয়াডের একজন হওয়ায় চাহাল বরাবরই কুলদীপ যাদবের তুলনায় দল নির্বাচনে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছেন।
বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থ হওয়ার পরেও হেড কোচ রবি শাস্ত্রী সহ পুরো সাপোর্ট স্টাফদের চুক্তি আরও ৪৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। তবে হেড কোচ বাঙ্গারকে কিছুদিনের মধ্যেই ছেঁটে ফেলা হতে পারে। ঘটনা হল, পুরো সাপোর্ট স্টাফ নয়, কোহলির কাছের বোলিং কোচ ভরত অরুণ এবং হেড কোচ রবি শাস্ত্রী। এই দু-জনের চুক্তি বাড়ানোয় সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে কোহলির।
সবমিলিয়ে বিস্ফোরক প্রতিবেদনে টিম ইন্ডিয়ার কঙ্কালসার চেহারা যে আরও প্রকাশ্যে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।