ভারত - ১৭৪/৫
বাংলাদেশ - ১৪৪ (১৯.২/ ২০ ওভার)
৩০ রানে জয়ী ভারত
ম্যাচ ও সিরিজের সেরা দীপক চাহার
প্রস্তুত ভারতের তরুণ ব্রিগেড
আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় টি-২০ বিশ্বকাপ। ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণের কথা মাথায় রেখেই দেশের তরুণ ক্রিকেটারদের এই কয়েক মাস যাচাই করে নিচ্ছে এমএসকে প্রসাদের নির্বাচক কমিটি।
রবিবাসরীয় নাগপুরে ভারত-বাংলাদেশ ফাইনাল দেখার পর টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য বেশ কয়েক'টি নাম পেয়ে গেলেন নির্বাচকরা, তা বলাই বাহুল্য। ভবিষ্যতের কথা ভেবেই টিম ম্যানেজমেন্ট শ্রেয়স আয়ার, দীপক চাহার, শিবম দুবেদের ব্যাক করবে, তা এখনই বলে দেওয়া যায়। তারুণ্যের জয়গানেই এদিন বাংলাদেশকে হারিয়ে ভারত সিরিজ পকেটে পুরল।
ভারতের ইনিংসে শুরুতেই ধাক্কা
নাগপুরে সিরিজ নির্ধারক ম্যাচে টস জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।শুরুতেই বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ভারতকে বড় ঝটকা দেন শফিউল ইসলাম। মাত্র ২ রানে তিনি বোল্ড করে দেন রোহিত শর্মাকে।
আরও পড়ুন বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে সিরিজ জেতাই লক্ষ্য রোহিতদের
ফাইনালে হিটম্যানের ফ্লপ শো-র পর তাঁর ওপেনিং পার্টনার ও দলের সবচেয়ে সিনিয়র ক্রিকেটার শিখর ধাওয়ানের থেকে বড় রান প্রত্যাশিত ছিল। তবে গব্বরের ব্যাট এদিনও তাঁর সঙ্গ দিল না। ১৬টি বল খেলে ১৯ রানে ফিরলেন তিনি। এবারও উইকেট তুলে নিলেন দুরন্ত ফর্মে থাকা শফিউল। ধাওয়ান ক্যাচ তুলে দিলেন মাহমুদুল্লাহর হাতে।
কেএল রাহুল ও শ্রেয়স আয়ারের যুগলবন্দি
৩৫ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ভারতকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। টিমের ওপর যখন বড় রান না করার আশঙ্কায় কালো মেঘ জমা শুরু করেছিল, ঠিক তখনই এক ফালি ঝকঝকে রোদের দেখা মিলল কেএল রাহুল আর শ্রেয়স আয়ারের ব্যাটে। দীর্ঘদিন পর রাহুল নিজের জাত চেনালেন। ৩৫ বলে ঝকঝকে ৫২ রানের ইনিংস খেললেন তিনি। অন্যদিকে আয়ার ফের একবার নির্বাচকদের বুঝিয়ে দিলেন যে, সিনিয়র দলের জার্সিতেও তিনি ব্যর্থ হন না। ৩৩ বলে ৬২ রান করলেন দিল্লি ক্যাপিটালসের ক্যাপ্টেন। রাহুল-আয়ারই ভারতের মরা গাঙে আনলেন জোয়ার।
আরও পড়ুন India Vs Bangladesh: রাজকোটে সাইক্লোন রোহিত, সিরিজে সমতায় ফিরল ভারত
রাহুল ফেরার পর ঋষভ পন্থ এসেছিলেন রানের গতি বাড়াতে। কিন্তু ৬ রান করেই ফিরলেন এই সিরিজের সবচেয়ে সমালোচিত প্লেয়ার। শেষের দিকে মণীশ পাণ্ডে (১৩ বলে ২২) আর শিবম দুবের (৮ বলে ৯) ব্যাটে ভারত ১৭৫ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশের ইনিংস
লিটন দাস ও মহম্মদ নঈমের চেনা ওপেনিং জুটিতে রান তাড়া করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুতেই লিটনকে (৮ বলে ৯) ফিরিয়ে দেন চাহার। তিনে ব্যাট করতে আসা সৌম্য সরকারকেও তুলে নেন চাহার। তিনি এদিন রানের খাতাই খুলতে পারেন নি। লিটন-সৌম্য পর ফেরার মুশফিকুর রহিমও শূন্য রানে বোল্ড হয়ে যান দুবের বলে।
এদিন বাংলাদেশের হয়ে ইতিহাস লেখার কাজটা শুরু করতে চেয়েছিলেন নঈম ও মহম্মদ মিঠুন। ম্যাচের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন তাঁরা। রোহিতের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিল নঈম-মিঠুনের ব্যাট। চাহারের সৌজন্যেই মিঠুনের লড়াই থামে। ২৯ বলে ২৭ করে আউট হয়ে যান তিনি। নঈম একাই কূলরক্ষা করছিলেন। অবশেষে দুবের দুরন্ত ইয়র্কারে ক্লিন বোল্ড হয়ে যান নঈম। ৪৮ বলে ৮১ রানে আউট হন তিনি।
আরও পড়ুন India Vs Bangladesh: মাইলস্টোন ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে ইতিহাস লিখল বাংলাদেশ
চাহারের বিশ্বরেকর্ড (রইল হ্য়াটট্রিকের ভিডিও) ও দুবের দুরন্ত সঙ্গ
এই দুই উইকেট চলে যাওয়া মাত্রই ভারত মোটামুটি সিরিজ নিজেদের মুঠোয় নিয়ে আনার কাজটা শুরু করে দেয়। এরপর কোনও ব্যাটসম্যানকেই ভারতের বোলাররা দাঁড়াতে দেন নি। বল হাতে নাগপুরে আগুন জ্বাললেন চাহার-দুবে। চাহার একাই হাফ ডজন উইকেট (হ্য়াটট্রিক সহ) তুলে নিলেন। দুবে নিলেন তিনটি। চাহার এদিন বিশ্বরেকর্ড করলেন। ৩.২ ওভার বল করে মাত্র ৭ রান দিয়ে তুলে নিলেন ৬ উইকেট। এর আগে বিশ্বের কোনও বোলার আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে এই পরিসংখ্য়ান স্পর্শ করতে পারেননি।
এবার লড়াই টেস্টে
আপাতত চার দিনের বিরতি। ফের ভারত-বাংলাদেশ মাঠে নামবে আগামী বৃহস্পতিবার। ইন্দোরে শুরু হবে দু'ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে হবে ভারতের প্রথম দিন-রাতের টেস্ট, যা কলকাতায় অনুষ্ঠিত হবে ২২ নভেম্বর থেকে।