ভারত: ৩৬৪/১০ এবং ২৯৮/৮ (ডিক্লেয়ার)
ইংল্যান্ড: ৩৯১/১০ এবং ১২০/১০
অবিশ্বাস্য নাকি স্বপ্নের মত! লর্ডসে চতুর্থ দিনের শেষে ভারতের হারের মঞ্চই যেন প্রস্তুত ছিল। সেখান থেকে তীব্র টানাপোড়েন, টেনশনকে সঙ্গী করে শেষ পর্যন্ত ভারত লর্ডসে জিতে গেল। ঐতিহাসিকভাবে। মাত্র ১২০ রানে দুটো সেশনের মধ্যেই গুটিয়ে দিল ইংল্যান্ডকে। ভারতের জয় ১৫১ রানে।
ভারত লাঞ্চের পরে ২৭২ রানে এগিয়ে থেকে ডিক্লেযার করে দেওয়ার সময়েও অতি বড় ভারতীয় সমর্থক ভাবতে পারেনি এই ম্যাচে এভাবে রোমাঞ্চ ছড়িয়ে জিতে যাবে ভারত।
আরও পড়ুন: হেলমেটে বাউন্সার ‘খেয়েই’ মেজাজ চরমে! বাটলারের সঙ্গে লাগল বুমরার, দেখুন উত্তপ্ত ভিডিও
বুমরা-শামি ঐতিহাসিক ৮৭ রানের পার্টনারশিপ পঞ্চম দিন নিশ্চিত করে দেয়, এই ম্যাচে ভারত অন্তত হারবে না। তবে ভারত জয়ের গন্ধ পেয়ে যায় প্ৰথম দু ওভারেই। বুমরা প্রথম ওভারে রোরি বার্নসকে ফেরানোর পরের ওভারেই সিবলেকে সাজঘরের রাস্তা দেখান শামি। ২/২ হয়ে যাওয়ার পরে ভারত সর্বশক্তি উজাড় করে দেয়।
ভারত আর জয়ের মাঝে কাঁটা হতে পারতেন একজনই, তিনি রুট। তবে এদিন রুটের দিন ছিল না। তিনি যথাসাধ্য খেলছিলেন। অন্য প্রান্তে হাসিব হামিদ, জনি বেয়ারস্টোদের আয়ারাম গয়ারাম নাট্যশো চললেও রুট ছিলেন অবিচল।
তবে এদিন রুটের নেমেসিস হয়ে হাজির হলেন স্বয়ং বুমরা। যিনি ব্যাট হাতে তার আগে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিয়েছেন। অফস্ট্যাম্পের কোনাকুনি ভেসে আসা বল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেও ফার্স্ট স্লিপে ক্যাচ! কোহলি ক্যাচ ধরে যেভাবে সেলিব্রেশনে মেতে উঠলেন, তাতেই স্পষ্ট, ইংরেজ অধিনায়ক কতটা শির:পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন চলতি সিরিজে।
আরও পড়ুন: বুমরা-শামির ব্যাটে ব্লকবাস্টার থ্রিলার! কোহলিদের দেখালেন কীভাবে ব্যাটিং করতে হয়
রুট আউট হয়ে যাওয়ার পরে ম্যাচ বাঁচানো কঠিন ছিল ইংল্যান্ডের। তা হয়ওনি। বাটলার-মঈন আলির ২৩ রানের নাছোড় পার্টনারশিপও যথেষ্ট ছিল না।
বুমরা, শামি, ইশান্তরা ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ভাঙার পরে শেষদিকে আগুন ঝড়ালেন সিরাজ। মঈন আলি এবং স্যাম কুরানকে পরপর দু-বলে ফিরিয়ে। পরে একই ওভারে জস বাটলার এবং জেমস আন্ডারসনকে ফিরিয়ে খেলায় ফুলস্টপ ফেলে দেন। সবমিলিয়ে তাঁর নামের পাশে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট। বুমরা এবং ইশান্ত নিলেন যথাক্রমে ৩ এবং ২ উইকেট। শামির শিকার একটিই।
শেষদিকে বাটলার (২৫) অলি রবিনসনের সঙ্গেও ৩০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ম্যাচ প্রায় ড্র করে দিয়েছিলেন। তবে বুমরা অলি রবিনসনকে ফেরানোর পরের ওভারেই সিরাজ পরপর আউট করে দেন বাটলার এবং জেমস আন্ডারসনকে।
লর্ডসে দিনের শেষ ভারতীয় বোলারদের বিক্রম লেখা থাকলেও, দিনের শুরুটা হয় ভারতীয় বোলারদের ব্যাটিং শৌর্যে।
আরও পড়ুন: একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত! কোহলিকে সরিয়ে পন্থকে দায়িত্বে চাইছেন ক্ষিপ্ত গাভাসকার
পঞ্চম দিনের শুরুটাই হয়েছিল সাততাড়াতাড়ি পন্থের ফিরে যাওয়া দিয়ে। তখন ভারত ১৯৪/৭। কিছুক্ষণ পরেই স্কোর দাঁড়ায় ২০৯/৮-এ। ভারতীয় ইনিংস দ্রুত খতম হয়ে যাবে, এমনটাই ভেবে সবাই নড়েচড়ে বসেছিলেন। তবে কে ভেবেছিল যে শেষ দু উইকেট দখল করতে ইংল্যান্ডের কালঘাম ছুটে যাবে। সেখান থেকে ঐতিহাসিকভাবে লাঞ্চে ৭৭ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফেলবেন বুমরা-শামি জুটি। লাঞ্চে খেলা বন্ধ থাকার সময় ভারত ২৮৬/৮। লাঞ্চের পর ইংরেজদের অস্বস্তি বাড়িয়ে ভারত ইনিংসে ডিক্লেয়ার করে দিয়েছিল ২৯৮/৮-এ। ২৭১ রানের লিড নিয়ে।
সেখান থেকে বাকিটা পুরো ইতিহাস। তাও আবার ক্রিকেটের ধাত্রীগৃহে।
ভারতের প্রথম একাদশ:
রোহিত শর্মা, কেএল রাহুল, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে, ঋষভ পন্থ, রবীন্দ্র জাদেজা, মহম্মদ সিরাজ, মহম্মদ শামি, ইশান্ত শর্মা, জসপ্রীত বুমরা
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন