ফের সুপার ওভার। সেই থ্রিলারে ফের জয় ভারতের। হ্যামিল্টনের পরে ওয়েলিংটন। সুপার ওভারে ভারতের সামনে ফের হারতে হল নিউজিল্যান্ডকে। সুপার ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। লোকেশ রাহুল প্রথম দু-বলে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাকিয়ে জয়ের সামনে দলকে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তৃতীয় বলে তিনি আউট হয়ে গেলেও বাকিটা ফিনিশ করেন ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলি। পুল করে বাউন্ডারি হাকিয়ে দলকে জিতিয়ে দেন তিনি।
প্রথমে ব্যাটিং করে ভারত মণীশ পাণ্ডের ব্যাটে ভর করে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৬৫ তুলেছিল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৫ রানেই আটক যায়।
তবে আগের ম্যাচের মতোই নিউজিল্যান্ড এই ম্যাচেই জয়ের বিষয়ে ফেভারিট ছিল। রান তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ড একসময় ১ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৯৬ তুলে ফেলেছিল। কলিন মুনরো ৪৭ বলে ৬৪ রান করে নিউজিল্যান্ডকে একাই টানছিলেন। তিন নম্বরে নেমে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করছিলেন সেইফার্টও। দু-জনে হাফসেঞ্চুরি করে কিউয়িদের জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে দিচ্ছিলেন।
তবে দ্বিতীয় উইকেটে ৭৪ রানের পার্টনারশিপে ভাঙন ধরান কোহলি। দুরন্ত থ্রোয়ে মুনরোকে ফেরান তিনি। তারপরেই ধস নামে কিউয়ি ইনিংসে।
এরপরে বুমরা, শার্দুলদের আটোসাটো বোলিংয়ের সামনে খেই হারিয়ে ফেলে কিউয়িরা। রস টেলর একপ্রান্তে টিকে ২৪ করলেও লোয়ার মিডল অর্ডার তাঁকে সঙ্গত করতে পারেনি।
শেষদিকে, ৩ ওভারে জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ২ ওভারে সেই সমীকরণ গিয়ে দাঁড়ায় ১০-এ। শেষ ওভারে ৭ রান দরকার ছিল। তবে শার্দুল ঠাকুর বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং করে সেই রান রুখে দেন। চাপের মুখে আউট করেন চার-চারজনকে।
তারপরে সুপার ওভারে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি কিউয়িরা। শেষ ওভারে দারুণ বোলিংয়ের সৌজন্য ম্যাচের সেরা শার্দুল ঠাকুরই।
তার আগে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের হতশ্রী দশাও প্রকট হয়ে গিয়েছিল এদিন। রোহিত-কোহলি ছাড়া যে ভারতের ব্যাটিং কতটা অসহায় তার ফের একবার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল ওয়েলিংটনের স্কাই স্টেডিয়ামে। রোহিত শর্মাকে বিশ্রামে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর পরিবর্তে নেমে সঞ্জু স্যামসন ব্যর্থ। কোহলিও রান পাননি। চতুর্থ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় ব্যাটিং থমকে যায় ১৬৫ রানে। ৮ উইকেট হারিয়ে কোনওরকমে দেড়শো পেরোল ভারতের ইনিংস। মণীশ পাণ্ডে (৩৬ বলে ৫০) ও লোকেশ রাহুল (৩৯) বাদে ভারতের হয়ে কেউ বলার মতো খেলতে পারেননি।
টসে হারার ট্র্যাডিশন বজায় রেখে ভারত এদিনও সেই ফর্ম অক্ষুণ্ণ রেখেছিল। আগের মতোই কিউয়িরা ব্যাটিং নিয়েছিল। কেন উইলিয়ামসন এদিন কাঁধে চোটের কারণে খেলতে নামেননি। তাঁর পরিবর্তে কিউয়িদের নেতা টিম সাউদি।
সঞ্জু স্যামসন লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে সেই হতাশ করলেন। ৫ বলে ৮ রান করে কুগ্লেজেনের বলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন তিনি। এরপর কোহলি (১১), শ্রেয়স আইয়ার (১), দুবে (১২) কেউ ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। লোকেশ একপ্রান্তে টিকে ২৬ বলে ৩৯ করে যান।
৮৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত একসময় বিপদে পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে মণীশ পাণ্ডে (৫০) ও শার্দুল ঠাকুরের (২০) সপ্তম উইকেটে ৪৩ রানের জুটি ভারতকে বিপদের হাত থেকে বাঁচায়। শার্দুল ২০ করে বিদায় নিলেও মণীশ পাণ্ডে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন।