সিএসকে: ১৯২/৪
কেকেআর: ১৬৫/৯
মরুশহরে মরুপ্রাপ্তি কেকেআরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন। দশমীর দিনেই ভাসান হয়ে গেল কেকেআরের। অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে এলেও দুবাইয়ের শেষটা রূপকথার হল না শাহরুখ খানের দলের ছেলেদের। সিএসকে আরও একবার আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন। এই নিয়ে চার বার। ফাইনালে কার্যত ধোনির দলের সামনে প্রতিরোধই গড়তে পারল না কেকেআর। ১৯৩ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে নাইটরা গুটিয়ে গেল মাত্র ১৬৫/৯-এ। ধোনিদের জয় ২৭ রানে।
শারজার সম্রাট হয়ে উঠেছিল কেকেআর। টুর্নামেন্টের তাবড় তাবড় দলকে বধ করেছে কলকাতা। তবে পছন্দের শারজা ছেড়ে বেরোতেই ফাইনালে দুবাইয়ে হাঁসফাঁস উঠে গেল কেকেআরের।
আরও পড়ুন: KKR-কে জেতাতে শেষ অস্ত্র প্রয়োগ কোচ ম্যাককুলামের, দেখুন গায়ে কাঁটা দেওয়া ভিডিও
প্রথমে ফাফ ডুপ্লেসিসদের দুর্ধর্ষ ব্যাটিং। তারপরে বল হাতে দীপক চাহার, শার্দূল ঠাকুরদের ক্লিনিক্যাল পারফরম্যান্স- চেন্নাই ঝড়ের কাছে কার্যত উড়ে গেল কেকেআর। টসে জিতে প্রথমে চেন্নাইকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন মর্গ্যান। শারজা পিচের চিত্রনাট্য মেনে অল্প রানে প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেওয়া এবং তারপরে সহজ টার্গেট তাড়া করে জেতা।
তবে দুবাইয়ে কেকেআরের সেই প্ল্যান খাটল না সিএসকের দুরন্ত ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে। ফাফ ডুপ্লেসিস এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড চলতি টুর্নামেন্টের সেরা ওপেনিং জুটি। ফাইনালে দুজনকে থামানোর কোনও অস্ত্রই ছিল না নাইট নেতার অস্ত্রাগারে। দুজনে ওপেনিং জুটিতে ৬১ রানের পার্টনারশিপে যে ঝড়ের সূচনা করে যান, তা বজায় রইল গোটা ইনিংসেই। ফাফ ডুপ্লেসিস ৫৯ বলে ৮৬ করে কেকেআর বোলিংকে ফালাফালা দেন। ডুপ্লেসিসকে অন্য প্রান্তে বাকি সিএসকে ব্যাটসম্যানরা যোগ্য সহায়তা করে গেলেন- রুতুরাজ (২৭ বলে ৩২), রবিন উথাপ্পা (১৫ বলে ৩১), মঈন আলি (২০ বলে ৩৭)।
আরও পড়ুন: KKR ম্যাচে ফাইনালে নামলেই ‘ট্রিপল সেঞ্চুরি’ ধোনির! শুক্রবার রেকর্ডের বন্যায় ভাসবেন মহাতারকা
নারিন যথারীতি এদিন দুরন্ত বোলিংয়ে দুই উইকেট শিকার করলেও লকি ফার্গুসন, সাকিব আল হাসান বেধড়ক মার হজম করে যান। বরুণ চক্রবর্তীও সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি।
চেন্নাইকে ডুপ্লেসিসরা ১৯২ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার পরেই ম্যাচ কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায়। বিশাল রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে কেকেআরকে গোটা মরশুমের মত দুরন্ত সূচনা উপহার দিয়েছিলেন দুই ওপেনার শুভমান গিল (৪৩ বলে ৫১) এবং ভেঙ্কটেশ আইয়ার (৩২ বলে ৫০)। দুজনে স্কোরবোর্ডে ৯১ তুলেও দিয়েছিলেন।
তবে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ফেরার পরেই তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে কেকেআর ইনিংস। অনেকটাই যেন দিল্লি ম্যাচের পুনরাবৃত্তি। দিল্লি ম্যাচে যেভাবে আচমকা নাইটদের মিডল অর্ডার ধসে গিয়ে সমস্যায় ফেলে দিয়েছিল। এদিনও সেই একই চিত্রনাট্য। দিল্লি ম্যাচের টার্গেট কম থাকায় শেষরক্ষা হয়েছিল। শুক্রবার যা আর হয়নি।
কেকেআরের দুরন্ত ওপেনিং পার্টনারশিপে সজোরে ব্রেক টানার কাজ করে গেলেন শার্দূল ঠাকুর। এগারোতম ওভারে এসে শার্দূল আইয়ার এবং নীতিশ রানাকে ফিরিয়ে নাইটদের পতনের সূচনা করে যান। এরপরে চাহার, জাদেজা, হ্যাজেলউডদের সামনে ভেঙে পড়ে কেকেআর। জাদেজা একই ওভারে ফেরান দীনেশ কার্তিক, সাকিব আল হাসানকে। অধিনায়ক মর্গ্যানের এদিনের অবদান ৮ বলে ৪ রান। শার্দূল ঠাকুর শেষ পর্যন্ত তিন উইকেট দখল করে যান। হ্যাজেলউড এবং জাদেজার শিকার দুটো করে।
তবে চেন্নাইয়ের বোলাররা নন, আসল খিলাড়ি ফাফ দু প্লেসিস। আইপিএলে শততম ম্যাচ খেলতে নেমে যিনি কয়েক রানের জন্য গোলাপি টুপি মিস করে গেলেও দলকে চ্যাম্পিয়নশিপের পোডিয়ামে তুলতে ভুল করেননি।
কেকেআর একাদশ:
শুভমান গিল, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, রাহুল ত্রিপাঠি, নীতিশ রানা, ইয়ন মর্গ্যান, দীনেশ কার্তিক, সুনীল নারিন, সাকিব আল হাসান, লকি ফার্গুসন, শিবম মাভি, বরুণ চক্রবর্তী
চেন্নাই সুপার কিংস একাদশ:
রুতুরাজ গায়কোয়াড, ফাফ ডুপ্লেসিস, মঈন আলি, আম্বাতি রায়ডু, রবিন উথাপ্পা, এমএস ধোনি, রবীন্দ্র জাদেজা, ডোয়েন ব্র্যাভো, শার্দূল ঠাকুর, দীপক চাহার, জোশ হ্যাজেলউড
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন