Advertisment

মারকাটারি অভিষেক! KKR ম্যাচেই ১৫০ কিমি গতিতে কাঁপালেন IPL, চিনুন কাশ্মীরি তরুণকে

কাশ্মীরের স্পিডস্টার আইপিএলে অভিষেকেই নজর কেড়ে নিলেন। গতি তুললেন দেড়শো কিমি। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত ভারতীয় ক্রিকেট।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

আইপিএলে অভিষেক। আর অভিষেকেই নজর কেড়ে স্পিডোমিটারের কাঁটা ছুঁয়ে ফেলল ১৫০ কিমি। জম্মুর গুজজর নগরের বাসিন্দাদের রবিবার রাতের ঘোর কাটছেই না।

Advertisment

এমন নয় যে এবারই প্ৰথম ভারতীয় কোনও পেসার ১৫০ কিমির গতি তুললেন। জসপ্রীত বুমরা, বরুণ আরন এমনকি তারও আগে জাভাগল শ্রীনাথ এই ম্যাজিক মার্ক পেরিয়ে গিয়েছিলেন। তবে রবিবার রাতে কাশ্মীরি ফল বিক্রেতার ছেলে উমরান মালিককে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেটে।

কাশ্মীরি নয়া পেস সেনসেশনের জার্নি মোটেই সহজ ছিল না। রাতে টেনিস বল খেলার নেশা ছিল মারাত্মক। আর ছেলে রাতে বাড়ি থেকে পালালে চুপিচুপি ফলো করতেন বাবা আব্দুল মালিক। কেকেআরের বিরুদ্ধে ছেলের আইপিএল অভিষেকে উচ্ছ্বসিত বাবা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়ে দিলেন, "এই বয়সের ছেলেপুলেদের নিয়ে চিন্তার অন্ত নেই। অনেকেই অল্প বয়সে থেকে ড্রাগ, মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়ে। তবে উমরান আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছিল, ওর একটাই নেশা- সেটা ক্রিকেট। আমি মাঝে মাঝে লুকিয়ে ওকে ফলো করে দেখতাম, সত্যি সত্যি ও ক্রিকেটই খেলে তো!"

আরও পড়ুন: পিচের বাইরে বল ড্রপ, তবু নয় নো বল! আম্পায়ারিং বিতর্কে তোলপাড় IPL, দেখুন ভিডিও

চার বছর আগে গুজজর নগরে কংক্রিটের পিচে ক্রিকেট খেলা শুরু করেন। তারপরে কয়েক বছরেই দেশের ক্রিকেটের মূলস্রোতে। কয়েক বছর আগেও ঘরের কাছে কোচিং নেটে যখন যেতেন, তখন উমরানের ক্রিকেটীয় সরঞ্জাম তো দূর, সঠিক স্পোর্টস শ্যু-ও ছিল না।

কোচ রণধীর মানহাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে বলছিলেন, "ও প্রথমে নেটে অফুরান বোলিং করত। আমরাও ওঁকে উৎসাহ দিতাম। আমাদের দলে একজন ছিল যাঁর জম্মু কাশ্মীর দলে খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। ও-ই আমাকে উমরানের বিষয়ে বলেছিল- স্যার উমরানের গতি রয়েছে। ও অনেক দূর খেলতে পারে। কে জানত, কয়েক বছরের মধ্যেই ও আইপিএলে খেলবে।"

আরও পড়ুন: রানার শটে ভাঙচুর ক্যামেরা, KKR ম্যাচে ‘বিস্ফোরণ’ বাউন্ডারিতে! দেখুন ভিডিও

কয়েকদিন আগেও পরিচয়ের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের নেট বোলার। এখন অবশ্য দলের অন্যতম সেরা পেস সেনসেশন। নেটে নিয়মিত সমস্যায় ফেলতেন হায়দরাবাদ সতীর্থ ডেভিড ওয়ার্নারকে। উমরানের পেস, বাউন্স সামলাতে হিমশিম খেতেন অজি সুপারস্টার। আর অভিষেকে উমরানের পেস সামলাতে সমস্যায় পড়লেন কেকেআরের তরুণ তুর্কি শুভমান গিলও।

এর আগে অনুর্দ্ধ-১৯ দলের জন্য জম্মু কাশ্মীরের ট্রায়ালে গিয়েছিলেন উমরান। প্রথমবার ট্রায়ালেই সুযোগ পেয়ে যান রাজ্য যুব দলে। আর প্রথমবারেই নজর কেড়ে নেন রাজ্যের তারকা ক্রিকেটার পারভেজ রসুল এবং কোচ ইরফান পাঠানের। রসুল বলছিলেন, "দলের অনেকেই ওঁর বল ফেস করতে চাইতে না। এত জোরে বল করে উমরান, অনেকের আশঙ্কা ওর বলে আঘাত লাগতে পারে।"

ছাত্রের আইপিএল অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উচ্ছ্বসিত কোচ পাঠানও। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলছিলেন, "উইকেটকিপার যেভাবে উমরানের বল কালেক্ট করে, সেখান থেকেই ওঁর বলের পেস আন্দাজ করা যায়। একদমই ন্যাচারাল ফাস্ট বোলার বলতে যা বোঝায়, উমরান সেটাই। অন্য তরুণদের মতই ও ব্যাটসম্যানদের হিট করতে চাইত। চাইত যেন ওর বল ব্যাটসম্যানের প্যাডের ওপরে আছড়ে পড়ে। তবে অনেক উঁচু থেকে ল্যান্ডিং হত বোলিং করার সময়। এটা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়েছে।"

আরও পড়ুন: কোন অঙ্কে কীভাবে দাঁড়িয়ে আইপিএল প্লে অফের টানটান লড়াই! জানুন একনজরে

গত মরশুমে জম্মু কাশ্মীর দলের হয়ে বিজয় হাজারে এবং সৈয়দ মুস্তাক আলি খেলেছেন উমরান। সানরাইজার্সে খেলা আব্দুল সামাদ নেট বোলার হিসাবে উমরানের নাম প্রস্তাব করেন দলের কাছে। সেখান থেকেই আইপিএল সংসারে চলে আসেন উমরান। আর তারপর তো সরাসরি আইপিএলে খেলা। নটরাজন ছিটকে যাওয়ার পরে। পাঠান বলছিলেন, "একটা নেট সেশনে ওয়ার্নারের বিরুদ্ধে দুরন্ত বোলিং করেছিল উমরান। ওঁকে কোনও সুযোগই দেয়নি। ওর বলের গতিতে সকলেই প্রভাবিত হয়েছিল। সেই জন্যই নটরাজনের বদলি হিসাবে উমরানকে নিয়ে নেয় সানরাইজার্স।"

পাঠান মনে করছেন, উমরানের আসল চ্যালেঞ্জ শুরু হবে লাল বলে প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলার সময়। তবে ভবিষ্যতের আসন্ন চ্যালেঞ্জ মাথায় রাখতে চাননা উমরানের বাবা আব্দুল। তিনি আপাতত পুত্রের ১৫০ কিমি গতি তোলা নিয়ে গর্বিত। আব্দুল বলছিলেন, "ঈশ্বর আমাদের প্রতি সদয় হয়েছেন। কখনই ভাবিনি উমরানকে আইপিএলে খেলতে দেখতে পাব। সবজি বিক্রেতা হিসাবে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এবার ওঁকে ভারতের জার্সিতে খেলতে দেখতে চাই।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Sunrisers Hyderabad IPL
Advertisment