আরসিবি: ২০৪/৪ (২০ ওভার)
কেকেআর: ১৬৬/৮ (২০ ওভার)
লক্ষ্য ছিল পাহাড়প্রমাণ ২০৫। সেই ম্যাচে ইতিহাস গড়া জয় ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য দরকার ছিল এবিডি-ম্যাক্সওয়েলের তান্ডবের পাল্টা সুনামি। তা কোথায় কি! আরসিবির ২০৪ এর জবাবে কেকেআর থামল ১৬৬/৮ করে। আরসিবি টানা তিননম্বর ম্যাচ জিতল ৩৮ রানের ব্যবধানে।
প্রথমে ম্যাক্সওয়েল (৪৯ বলে ৭৮), তারপর এবি ডিভিলিয়ার্স (৩৪ বলে ৭৬)। দক্ষিণ আফ্রিকান, অস্ট্রেলিয়ান মিলে কেকেআর বোলিংকে তুলোধোনা করলেন চিপকের পিচে। দুজনের দুর্ধর্ষ হাফসেঞ্চুরির সৌজন্যে আরসিবি প্রথমে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে তুলেছিল ২০৪ রান।
আর সেই রান তাড়া করতে নেমে কেকেআর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারালেও মোমেন্টাম দিয়েছিলেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান- শুভমান গিল (৯ বলে ২১), রাহুল ত্রিপাঠি (২০ বলে ২৫) এবং নীতিশ রানা (১১ বলে ১৮)।
আরো পড়ুন: জাদেজাকে অসম্মানের রাস্তায় হাঁটল সৌরভের বোর্ড! প্রতিবাদে সরব ভন থেকে প্রসাদ
ওভার পিছু প্রায় ১০ রান করে তুলে কেকেআরকে মোমেন্টাম দিয়ে দেন তিনজন। তারপরে মর্গ্যান কিংবা রাসেলের ব্যাটে টর্নেডো উঠলে লক্ষ্যপূরণ হওয়া অসম্ভব ছিল না।
তবে কোথায় কি, রাসেল কে যেখানে এমন ম্যাচে ছয়ে নামানো উচিত তখন ক্যারিবীয় তারকা নামলেন দীনেশ কার্তিক, এমনকি সাকিব আল হাসানেরও পরে ৭ নম্বরে। মর্গ্যান যথারীতি নিজের পুরোনো ফর্মের ছায়া। কার্তিকও তাই। মর্গ্যান ২৩ বলে ২৯ রানে লড়লেন বটে, তবে তাতে কাজের কিছু হয়নি।
কার্তিক ৫ করেই বিদায়। বরং ম্যাচের গেমচেঞ্জার হতে পারতেন সাকিব আল হাসান। নারিনকে বাদ দিয়ে তাঁকে প্রথম একাদশে খেলানো কতটা যুক্তিযুক্ত, তা মুম্বই ম্যাচের পরেই প্রশ্ন ওঠে গিয়েছিল। সেই আলোচনাকেই মান্যতা দিলেন তিনি এদিনও। খুনে মেজাজের এবিডি-ম্যাক্সওয়েলদের সামনে যেমন সাকিবকে বল করানোর ঝুঁকি নিলেন না মর্গ্যান। তেমন ব্যাট করতে নেমে রীতিমত আস্কিং রেট ১৫ -এর সামনে করলেন ২৬ বলে ২৫ রান।
আরো পড়ুন: ছক্কায় কেলেঙ্কারি চিপকে! বিস্ফোরণে চুরমার ফ্রিজের কাঁচ, দেখুন বেয়ারস্টোর কীর্তি
শেষদিকে নেমে রাসেল ২০ বলে ৩১ রানের মরিয়া প্রচেষ্টা করলেও, তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে।
অথচ, শুরুটা একদম মনের মত করেছিল কেকেআর। দ্বিতীয় ওভারেই বরুণ চক্রবর্তী ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি এবং রজত পতিদারকে। অদ্ভুত কারণে বরুণ চক্রবর্তীকে সেই সময় আক্রমণ থেকে সরিয়ে নিয়ে বড়সড় ভুল করেন মর্গ্যান।
আর ক্রিজে একবার সেটল হয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ম্যাক্সওয়েল। মাত্র ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করে যান তিনি। ৯/২ হয়ে যাওয়ার পরে দেবদূত পাডিক্কলের সঙ্গে ৮৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে কেকেআরকে ব্যাকফুটে ফেলে দেন। নিজের ইনিংসে তিনি ৯টা বাউন্ডারির সঙ্গেই তিনটে বিশাল ওভার বাউন্ডারিও হাঁকান।
পাডিক্কল আউট হয়ে যাওয়ার পর চিপকে শুরু হয় ম্যাক্সওয়েল-এবিডির তান্ডব। দু-জন একের পর এক বোলারকে ওড়াতে থাকেন। প্যাট কামিন্স শেষে জাতীয় দলের সতীর্থকে আউট করলেও আরসিবির বড় রান ওঠা কার্যত তখন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।
ম্যাক্সওয়েল ফিরে যাওয়ার পর যেন আরো মারকুটে হয়ে ওঠেন এবিডি। মাত্র ২৭ বলে ফিফটি করে যান এদিন। শেষ ওভারে আন্দ্রে রাসেলের ওভারে ২২ রান নিয়ে দলকে ডাবল সেঞ্চুরি পার করে দেন। অন্যপ্রান্তে জেমিসন ৪ বলে ১১ রানে নটআউট থাকেন।
কেকেআর: নীতিশ রানা, শুভমান গিল, রাহুল ত্রিপাঠি, ইয়ন মর্গ্যান, আন্দ্রে রাসেল, দীনেশ কার্তিক, সাকিব আল হাসান, প্যাট কামিন্স, হরভজন সিং, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, বরুণ চক্রবর্তী
আরসিবি: দেবদূত পাডিক্কল, বিরাট কোহলি, রজত পতিদার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, এবি ডিভিলিয়ার্স, শাহবাজ আহমেদ, ওয়াশিংটন সুন্দর, কাইল জেমিসন, যুজবেন্দ্র চাহাল, মহম্মদ সিরাজ, হর্ষল প্যাটেল
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন