আমিরশাহির আইপিএল পর্ব সম্প্রচার নিষিদ্ধ হয়ে গেল আফগানিস্তানে। আইপিএলের দ্বিতীয় পর্বের শুরুর মুখেই বড় সিদ্ধান্ত নিল আফগানিস্তানের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী তালিবান। বলা হচ্ছে, আইপিএল ইসলাম ধর্মবিরোধী। সেই কারণেই আফগানিস্তানে আইপিএল খেলা উপভোগ করা যাবে না।
আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া ম্যানেজার এবং সাংবাদিক ইব্রাহিম মোমান্দ টুইট করে জানিয়েছেন এই খবর। কেন নিষিদ্ধ আইপিএল? বলা হচ্ছে, চিয়ারলিডারদের নাচ, গ্যালারিতে স্বল্পবসনা মহিলা দর্শক ইসলামিক রীতিনীতির বিরোধী। সেই কারণেই তালিবানের আপাতত নিষিদ্ধের তালিকায় ঢুকে গেল আইপিএলও।
আরও পড়ুন: তালিবানি নৃশংসতার খুল্লামখুল্লা বিরোধিতা! বিশ্বকাপে নেতৃত্ব ছাড়তে বাধ্য হলেন রশিদ খান
তালিবান ক্ষমতায় আসার পরে সমস্ত রকম বিনোদনমূলক বিষয় বন্ধ করে দিয়েছে। মহিলাদের সমস্ত খেলাধুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কট্টরপন্থী তালিবান জঙ্গি সংগঠন ক্ষমতা পেয়েই জানিয়ে দিয়েছিল ক্রিকেট খেলার ওপর কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না। বৈদেশিক সমস্ত শক্তি সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেই কাবুলে ক্রিকেটের প্রতি সমর্থন জানাতে ম্যাচের আয়োজনও করা হয়েছিল। তবে গত সপ্তাহে আফগানিস্তান স্পোর্টসের ডিরেক্টর জেনারেল আহমদ রুস্তমজাই মহিলাদের ক্রিকেট সংক্রান্ত প্রশ্ন উপেক্ষা করে গিয়েছিলেন। সিদ্ধান্তের ভার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন।
মহিলা ক্রিকেট বন্ধ করে দেওয়া হলে আফগানিস্তানের টেস্ট স্ট্যাটাসও সঙ্কটে পড়বে। আইসিসি নিয়ম অনুযায়ী, কারণ প্রত্যেক টেস্ট খেলিয়ে দেশের মহিলা দল থাকা বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন: তালিবানি আতঙ্কে দিশেহারা! আফগানিস্তান ছেড়ে ভারতেই কোচিং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলীয়র
শীর্ষ পর্যায়ের এক তালিবান নেতা টিভিতে মহিলাদের খেলার অপকারিতা নিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন কিছুদিন আগে। তারপরে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার তরফে হুমকি দিয়ে জানানো হয়, মহিলাদের ক্রিকেট বন্ধ করা হলে নভেম্বরে দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচও বাতিলের পথে হাঁটবে তাঁরা।
তারপরেই আফগান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে শাস্তি না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। আফগান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিজুল্লা ফাজিল এসবিএস রেডিও পাসতো-কে জানিয়েছেন, মহিলা দল ক্রিকেট খেলবে সেই বিষয়ে তাঁরা আশাবাদী। জানিয়েছেন, মহিলা ক্রিকেট দলের ২৫ জন তারকাই আপাতত আফগানিস্তানে রয়েছে। যদিও বিবিসি-র তরফে জানানো হয় সকলেই আপাতত লুকিয়ে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: আফগান ক্রিকেট দফতরে তালিবান হানা, দখল হয়ে গেল রশিদদের হেডকোয়ার্টার্স
কুড়ি বছর আগে তালিবান যখন ক্ষমতায় ছিল, সেই সময় সমস্ত খেলাধুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। স্টেডিয়ামগুলোতে জনসাধারণদের হত্যালীলা চালানো হত। তবে তালিবান ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পরে খেলাধুলো আফগান মুলুকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এর অন্যতম কারণই হল ভারত-পাকিস্তান দুই দেশেই ক্রিকেট উন্মাদনা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন