একজন ক্রিকেটারের ভাগ্যই বদলে দেয় আইপিএল নিলাম। কোটি কোটি ক্রিকেট ভক্তের সঙ্গে নজর থাকে বিশ্বের সমস্ত ক্রিকেটারেরই। তবে একইভাবে নিলামের পদ্ধতি ক্রিকেটারদের মানসিক বিপর্যয়ও ঘটিয়ে দিতে পারে। অনেকেই নিলামে অবিক্রিত থাকার মনোবেদনায় ভোগেন। সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্তও হয়ে পড়েন।
এবার নিলামে অংশ নিয়েছিলেন ৫৯০ জন ক্রিকেটার। তবে ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজিতে বিক্রি হয়েছেন মাত্র ২০৪ জন। অবিক্রিতদের তালিকায় ৩৮৬ জন ক্রিকেটার।
আরও পড়ুন: ভেঙ্কটেশ আইয়ারের সঙ্গে KKR-এর ওপেনিংয়ে কে! এই তারকারাই হতে পারেন সেরা তিন চয়েস
নিলামের প্রাথমিক রাউন্ডে অনেক তারকা অবিক্রিত থাকার পরে ফাইনাল পর্বে শেষমেশ অনেকে একদম শেষলগ্নে দল পেয়েছেন। আর আইপিএল নিলামের এই দোদুল্যমান পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে রবিন উথাপ্পা চাইছেন নিলাম প্রথার অবসান ঘটুক।
রবিন উথাপ্পাকে এবার নিলামের টেবিল থেকে ২ কোটি টাকার বেস প্রাইসে কিনে নিয়েছে সিএসকে। সিএসকে দলে ফিরতে পারলেও রবিন উথাপ্পা খোলসা করেছেন কীভাবে নিলামের এই গোটা পর্ব একজন ক্রিকেটারের কাছে মানসিক সমস্যা নিয়ে হাজির হয়।
আরও পড়ুন: KKR-এর স্কোয়াড মাথাব্যথা বাড়াবে অনেক দলেরই, তিন বিষয়ে নাইটরা টেক্কা দিতে পারে বাকিদের
নিউজ৯-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারকা ব্যাটসম্যান বলে দিয়েছেন, "সিএসকের মত এক দলের হয়ে খেলতে সবসময়েই চেয়েছি। অন্যতম প্রার্থনাই ছিল সিএসকে দলে ফেরত যাওয়া। আমার পরিবার, সন্তানরাও চেয়েছিল আমি যেন সিএসকের হয়ে খেলি। যে দলে নিরাপত্তা রয়েছে, শ্রদ্ধা লের বাতাবরণ রয়েছে, সেই দলে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে। এই দলে যেভাবে ব্যাকিং করা হয়, তাতে মনে হয় আমি মাঠে নেমে পারফর্ম করতে পারি।"
"নিলাম যেন একটা পরীক্ষার মত, যা অনেকদিন আগে আমরা খাতায় লিখে এসেছি। ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করার মত বিষয়। সত্যি কথা বলতে নিজেদের গবাদি পশু মনে হয়। মোটেই এটা খুব একটা সন্তোষজনক অনুভূতি নয়। তবে ভারতে এটাই হয়ে আসছে। নিজেদের পারফরম্যান্স নিয়ে মতামত, সেটা একটা বিষয়। আবার কত দামে বিক্রি হচ্ছি, তা নিয়ে মতামত সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়।"
আরও পড়ুন: নাইটদের প্ৰথম ১১-য় চার বিদেশি কারা! কে খেললে কে বসবেন! জানুন হিসাব নিকেশ
উথাপ্পা চাইছেন, নিলামে কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই একজন ক্রিকেটারের দাম আকাশছোঁয়া উঠে যায়। সেই কারণেই সম্মানজনক ড্রাফট প্রথা চাইছেন। "কেউ ভাবতে পারবে না, যাঁরা অবিক্রিত থাকে, তাঁরা মানসিকভাবে কীরকম অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়। এটা মোটেই সুখকর অভিজ্ঞতা নয়। যাঁরা দীর্ঘদিন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট খেলছে, তারপরে নিলামে দল পেল না, তাঁদের জন্য আমার সহানুভূতি রইল আমার। এটা অনেকটা পরাজয়ের অনুভব দেয়। ক্রিকেটার হিসাবে আমাদের মুল্যায়ন গিয়ে দাঁড়ায় কোন দল আমাদের জন্য কতটা খরচ করল। এই পাগলামির কোনও পদ্ধতিই নেই আসলে।"
এমনটা জানিয়ে সিএসকে তারকা আরও বলেছেন, "যারা নিলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত, তাঁদের কাছেও কোনও ইঙ্গিত থাকে না, কীভাবে কোনও ক্রিকেটারের দাম বাড়বে কমবে। অনেকে বলে প্ৰথমে বিক্রি হলে দাম বেশি পাওয়া যায়, কারণ সেই সময় ফ্র্যাঞ্চাইজির হাতে পর্যাপ্ত অর্থ থাকে। অনেকে আবার উল্টোটা বলে। শেষের দিকে নাকি অর্থ বেশি থাকে। তাই ক্রিকেটারদের জন্য অনেক বেশি সম্মানজনক ড্রাফট সিস্টেম চালু করা হোক।"