আইপিএল নিলামের প্ৰথম দিন বেশ চুপচাপই ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। মাত্র চারজনকে সই করিয়েছিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন দল। তবে প্ৰথম দিনেই নিলামের সবথেকে বেশি অর্থ খরচ করে (১৫.২৫ কোটি টাকা) ঈশান কিষানকে কিনে নিয়েছিল মুম্বই। বাকি তিন ক্রয় করা তারকারা হলেন দেওয়াল্ড ব্রেভিস (৩ কোটি), লেগস্পিনার মুরুগান অশ্বিন (১.৬ কোটি) এবং বাসিল থাম্পি (৩০ লক্ষ)।
তবে দ্বিতীয় দিনে বেশ ব্যস্ত সময় কাটায় মুম্বই। মোট ১৭জন ক্রিকেটারকে সই করায় মুম্বই। বিশাল অর্থ খরচ করে নিলামের দ্বিতীয় দিনে মুম্বই সই করে টিম ডেভিড (৮.২৫ কোটি), জোফ্রে আর্চার (৮ কোটি), জয়দেব উনাদকাট (১.৩০ কোটি) এবং রিলি মেরেডিথ (১ কোটি)।
আরও পড়ুন: ভেঙ্কটেশ আইয়ারের সঙ্গে KKR-এর ওপেনিংয়ে কে! এই তারকারাই হতে পারেন সেরা তিন চয়েস
নিজেদের নিলামের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হতে পারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। দেখে নেওয়া যাক-
১) ঈশান কিষানকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা:
বর্তমানে জাতীয় দলের জার্সিতে হয়ত সেভাবে ফর্মে নেই ঈশান কিষান। তবে মুম্বই নিজেদের সেট আপে বরাবর ঈশান কিষানকে চেয়েছিল। নিলামের আগে রটে যায়, ঈশান কিষানকে রিটেন করতে পারে মুম্বই। তবে শেষমেশ ঈশান নন, রিটেনশন তালিকায় জায়গা পান সূর্যকুমার যাদব। তারপরেই মুম্বই ঠিক করে নেয়, যেমন করে হোক ঈশান কিষানকে দলে ফেরাতে হবে। সেই কাজে তারা সফল।
২৩ বছরের তারকা টি২০ ফরম্যাটের অন্যতম বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। ২০২০-তে মুম্বইয়ের ট্রফি জয়ের পিছনে ঈশানের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। ১৪ ম্যাচে ৫১৬ রান করে গিয়েছিলেন। ৫৭.৩৩ গড়ে এবং ১৪৫.৭৬ স্ট্রাইক রেটে। গত বছর অবশ্য সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। ১০ ম্যাচে করেন মাত্র ২৪১ রান। তবে শেষের দিকে ঈশান রাজস্থান রয়্যালস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ম্যাচে করে যান যথাক্রমে ২৫ বলে ৫০ এবং ৩২ বলে ৮৪।
ঈশানকে নেওয়ার সবথেকে বড় সুবিধা হল ব্যাটিং তো বটেই উইকেটকিপারের স্লটেও খেলবেন তিনি। আর ব্যাট যেদিন চলবে ঝড়খন্ডি তরুণের, সেদিন সত্যি তাঁকে থামানো মুশকিল।
২) বুমরার বোলিং পার্টনার ঠিক করে ফেলা:
ট্রেন্ট বোল্টকে রিলিজ করে দেওয়ার পরে বুমরার বোলিং সঙ্গী খোঁজার লক্ষ্য নিয়ে নিলামের টেবিলে বসেছিল মুম্বই। চলতি মরশুমে আর্চারকে পাওয়া যাবে না জেনেও তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে আর্চারকে কিনে রাখল মুম্বই। মাঝে মধ্যেই ফিটনেস সমস্যায় ভোগেন ইংরেজ স্পিডস্টার। তবে আগামী কয়েকটি মরশুমে তিনি যাতে চোটমুক্ত থাকতে পারেন, সেটাই প্রার্থনা করবে মুম্বই।
২০২০-তে আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস জার্সিতে আর্চার দুরন্ত খেলেন। ১৪ ম্যাচে ২০ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। বোলিং গড় ১৮.২৫ এবং নজরকাড়া ৬.৫৫ ইকোনমি রেট সহ। বিষাক্ত পেস দিয়ে আর্চার বহু ব্যাটসম্যানকে বিব্রত করেছেন। সবমিলিয়ে টি২০ ফরম্যাটে আর্চারের ১২১ ম্যাচে ১৫৩ উইকেট নিয়েছেন। স্ট্রাইক রেট ১৭.৬ এবং ইকোনমি রেট ৭.৬৫। আর্চার-বুমরার বোলিং পার্টনারশিপ বিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের কাছে যে আতঙ্ক বয়ে আনবে, তা বলাই বাহুল্য। ইয়র্কার তো বটেই দুজনের হাতেই রয়েছে মারণ বাউন্সারের সম্ভার। ২০২৩ থেকেই আর্চার-বুমরার বোলিং জুটি যাতে নাস্তানাবুদ করে দেয় প্রতিপক্ষকে, সেটাই চাইছে পল্টনরা।
আরও পড়ুন: KKR-এর স্কোয়াড মাথাব্যথা বাড়াবে অনেক দলেরই, তিন বিষয়ে নাইটরা টেক্কা দিতে পারে বাকিদের
৩) এক্স ফ্যাক্টর বাছাই:
কিষান এবং আর্চার ছাড়া এবার নিলামে মুম্বইয়ের স্কোয়াডে অন্যতম সেরা পিক টিম ডেভিড। বলা হচ্ছে, এবার সিঙ্গাপুরের হয়ে খেলা এই অস্ট্রেলীয় মুম্বইয়ের এক্স ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন। অজি তারকার জন্য ৮.২৫ কোটি টাকা খরচ করেছে মুম্বই। বিশ্বের বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলা টিম ডেভিডের টি২০ পারফরম্যান্স বেশ প্রভাব ফেলার মত।
টিম ডেভিড বর্তমানে পাকিস্তান সুপার লিগে মুলতান সুলতানসের হয়ে খেলছেন। ২০৫ স্ট্রাইক রেটে টিম ডেভিড ইতিমধ্যেই ৪৬.৮০ গড়ে ২৩৪ রান করে ফেলেছেন। সবমিলিয়ে টি২০-তে ৮৭ ম্যাচে ১৯২১ রান করেছেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ১৫৯.৫৫, গড় ৩৪.৩০।
আরও পড়ুন: নাইটদের স্কোয়াড বাছাই নিয়ে প্রশ্ন! তিন সমস্যায় জেরবার হতে পারে KKR
একাধিক মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তানগামী অস্ট্রেলিয়া জাতীয় টি২০ দলে জায়গা পেতে পারেন টিম ডেভিড। সিঙ্গাপুরের হয়ে ১৪টি টি২০ খেললেও আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ার হয়েও প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন তিনি।
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কার্যকরী অফস্পিনও করতে পারেন তিনি। মুম্বইয়ের জার্সিতে তিনি সত্যি এক্স ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার।